Iron Ring Tocken: ভারতীয় রেল হল দেশের গণপরিবহনগুলোর মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য মাধ্যম। উন্নত আধুনিকতার ছোঁয়ায় নতুনভাবে সেজে উঠেছে ভারতীয় রেল। দেশের সব ধরনের মানুষের জন্য ভারতীয় রেলের একাধিক ব্যবস্থা এবং পরিষেবা প্রদান করা হয়। যেমন বন্দে ভারত, বুলেট ট্রেনের মতো অত্যাধুনিক পরিষেবার সাথে দেশের মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য গরিব রথের মতো পরিষেবাও দেবার চেষ্টা করে ভারতীয় রেল। যাত্রীদের সুবিধার জন্য ট্রেনের কোচ এবং ইঞ্জিনগুলিকে স্টেশন থেকে স্টেশনে পৌঁছনোর যাত্রা আগের থেকে অনেক বেশি সহজ এবং আরামদায়ক হয়েছে আগের থেকে। রেলব্যবস্থা যতই আধুনিক হোক না কেনো তার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে প্রাচীন ইতিহাস।
ব্রিটিশ আমলের বহু কৌশল আজও ব্যবহার করা হয় ভারতীয় রেলে। একটি উল্লেখযোগ্য কৌশল হলো টোকেন এক্সচেঞ্জ সিস্টেম। প্রায় বন্ধের পথে হলেও এখনও দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই কৌশলটি ব্যবহার করা হয়। আসুন এই সিস্টেমটি সম্পর্কে জেনে নিই। টোকেন এক্সচেঞ্জ সিস্টেম (Iron Ring Tocken) হলো ব্রিটিশ যুগে তৈরি একটি প্রযুক্তি। ট্রেনের নিরাপদ পরিচালনা এর দ্বারাই নিশ্চিত করা হয়। অতীতে কিন্তু ট্র্যাক সার্কিট ছিল না। তাই টোকেন বিনিময় ব্যবস্থা ব্যবহার করা হতো।
এই সিস্টেম (Iron Ring Tocken) ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য হলো যাতে একটি ট্রেনের সঙ্গে অন্য কোনও ট্রেনের সংঘর্ষ না হয় । ব্রিটিশ আমলের এই পদ্ধতি সত্যিই কার্যকরী। প্রাচীনকালে রেলপথে ছোট ও একক লাইন ছিল। সেই কারণে উভয়দিকের ট্রেন একই লাইনে চলাচল করত। যদি আগেকার দিনে টোকেন আদান-প্রদানের মতো ব্যবস্থা না থাকতো তাহলে দুটি ট্রেনের সংঘর্ষ হতো।
আরো পড়ুন: সারা বছর রোজগারের সুযোগ করে দিচ্ছে হাওড়া-শিয়ালদহ স্টেশন
টোকেনটি হল আসলে একটি লোহার বড় রিং (Iron Ring Tocken)। এটি স্টেশন মাস্টার লোকো পাইলটকে দেন। লোকো পাইলট যখন এই টোকেনটি পান এটি তার কাছে একটি সংকেতের মত কাজ করে। পরবর্তী স্টেশন পর্যন্ত লাইনটি পরিষ্কার আর ট্রেন এগিয়ে যেতে পারে। স্টেশনে পৌঁছনোর পর লোকো পাইলট সেখানে এই টোকেনটি জমা করেন এবং সেখান থেকে অন্য টোকেন নিয়ে এগিয়ে যান। চলমান ট্রেন থেকেও লোকো পাইলটরা এই টোকেন আদান প্রদান করত। ধরুন একটি ট্রেনের একটি স্টেশনে স্টপেজ না থাকে তাহলে স্টেশন মাস্টার নিজেই চলমান ট্রেনের লোকো পাইলটকে টোকেন দেন।
রিংটি ছিল খুবই কার্যকরী। এই রিংয়ের মাধ্যমে লোকো পাইলট চলমান ট্রেনে খুব সহজেই টোকেন আদান প্রদান করতে পারত। আজকাল ভারতীয় রেল অনেকটাই আধুনিক হয়ে গেছে। আধুনিক প্রযুক্তিতে এই ধরনের সিস্টেমের আর কোন প্রয়োজন নেই। এই টোকেন বিনিময় ব্যবস্থা এখন বেশিরভাগই ‘ট্র্যাক সার্কিট’ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়ে গিয়েছে।