নিজস্ব প্রতিবেদন : গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে চাঁদ (Moon) আলোচনার সবচেয়ে বড় কেন্দ্রবিন্দু হয়ে রয়েছে। আসলে যখন থেকে চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3) উৎক্ষেপণ করা হয় এবং সেটি চাঁদের মাটিতে সফলভাবে ল্যান্ডিং করে তখন থেকেই এই আলোচনা অনেক বেড়ে গেছে। এই অভিযান সফল হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত এবং ইসরোর (ISRO) ঝুলিতে এসেছে একের পর এক স্বীকৃতি। ভারত বিশ্বের প্রথম কোন দেশ হিসাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ল্যান্ডার বিক্রম (Lander Vikram) এবং প্রজ্ঞানকে (Rover Pragyan) সফলভাবে ল্যান্ডিং করাতে সক্ষম হয়েছে।
চাঁদ এমন একটি উপগ্রহ যাকে নিয়ে বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষদের মধ্যে কৌতূহলের শেষ নেই। চাঁদের মাটিতে, চাঁদের চারদিকে কি রয়েছে, সেখানে কি প্রাণের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে, ভবিষ্যতে কি মানুষ চাঁদে বসবাস করতে পারে ইত্যাদি নানান প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই বারে বারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এমন মহাকাশযান পাঠিয়ে থাকে। এই সকল মহাকাশযান বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা চালায়।
আবার পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষদের চাঁদে জমি কিনতে দেখা যায়। খুব অল্প দামেই পৃথিবী থেকে প্রায় ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার দূরে থাকা চাঁদে জমি বিক্রি হয়। বেশ কয়েকটি সংস্থা রয়েছে যারা এই কাজ করে থাকে। বহু মানুষকেই দেখা যায় নিজেদের বিবাহ বার্ষিকী থেকে শুরু করে বিশেষ দিনগুলিতে চাঁদে জমি কিনে প্রিয়জনদের উপহার দিতে। এমনকি অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতও ৫৫ লক্ষ টাকা দিয়ে চাঁদে জমি কিনেছিলেন।
এইভাবে বিভিন্ন মানুষের চাঁদে জমি কেনা এবং বিভিন্ন দেশ মহাকাশ যান থেকে শুরু করে চাঁদের মাটিতে মানুষ পাঠানো নিয়ে প্রশ্ন ওঠে চাঁদের আসল মালিক কে? কেননা ভারত যেমন এই বছর প্রথম চাঁদের মাটিতে মহাকাশযান অবতরণ করাতে সক্ষম হল, ঠিক সেই রকমই এর আগে আমেরিকা, রাশিয়া, চীন চাঁদের মাটিতে মহাকাশ যান অবতরণ করিয়েছে। শুধু তাই নয় আমেরিকা দাবি করে তারা প্রথম এবং একাধিকবার চাঁদে মানুষ পাঠিয়েছিল। যে সকল দেশ চাঁদে মহাকাশযান থেকে শুরু করে মানুষ পাঠিয়েছিল তাদের পতাকা চাঁদের মাটিতে জ্বলজ্বল করছে। তাহলে কি এই সকল দেশগুলির কেউ চাঁদের মালিকানা পেয়ে গেল?
সোজা কথাই উত্তর দিতে গেলে বলা যায়, লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকা দিয়ে চাঁদে জমি কেনা হোক অথবা চাঁদে মহাকাশযান বা মানুষ পাঠিয়ে পতাকা টাঙানো হোক না কেন চাঁদ কিন্তু কারো নয়। অর্থাৎ চাঁদের মালিকানা কারো হাতে নেই অথবা যাবে না। কারণ আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, ভারত সহ বিশ্বের বহু দেশ এই নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। আউটার স্পেস ট্রিটি ১৯৬৭ অনুসারে কোন দেশ অথবা কোন ব্যক্তি মহাকাশ অথবা চাঁদ অথবা মহাবিশ্বে অবস্থিত কোন গ্রহ অথবা উপগ্রহের মালিকানা দাবি করতে পারবে না।