লাল্টু : দুর্গা পুজো আসতে এখনো দিন কয়েক দেরী থাকলেও রাত পোহালেই পুজো শুরু হয়ে যাচ্ছে বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের বালিজুড়ি গ্রামের দুই পরিবারে। এই দুই পরিবার হলো চট্টোপাধ্যায় এবং রায় পরিবার। আসলে আগামীকাল অর্থাৎ বুধবারই রয়েছে তাদের বোধন। আর এই বোধ অনেকদিন থেকেই এই দুই পরিবারের দুর্গাপূজা শুরু হয়ে যায়।
এই দুই পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকশো বছরের প্রাচীন এই রীতি। এই রীতি অনুসারে পূজো শুরু কৃষ্ণপক্ষের নবমীতে, যা দুর্গাপুজোর মহানবমীর ঠিক একপক্ষ কাল আগে উমা আসেন বাড়িতে এবং সেই দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় পুজো। যে কারণে পুজোর ১৫ দিন আগে এই দুই পরিবারে পুজো শুরু হওয়ার রীতি রয়েছে।
আগামীকাল অর্থাৎ কৃষ্ণপক্ষের নবমীর শুভ তিথিতে রীতি মেনে এই দুই পরিবার যমুনা সায়র পুষ্পরনী থেকে মঙ্গলঘট নিয়ে মা দুর্গার পুজো শুরু করে দেবে। এই দৃশ্য অন্যান্য পুজোগুলির ক্ষেত্রে মহাসপ্তমীর সকালের দেখা যায়, যেদিন অন্যান্য নবপত্রিকা স্নানের জন্য শোভাযাত্রা করা হয়।
চট্টোপাধ্যায় পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পুজো আরম্ভ করেছিলেন কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায় ১১১১ বঙ্গাব্দে। তিনি রাজনগরের নবাবের দেওয়ান ছিলেন। তৎকালীন বীরভূমের রাজধানী ছিল রাজনগর। রাজনগরের নবাব আলিনকি খান সুচারুভাবে দুর্গাপুজো চালানোর জন্য ৬৪ বিঘা জমি, ৭ টি পুকুর এবং একটি বড় পুস্করনী দান করেন। তারপর থেকেই রীতি মেনে কৃষ্ণপক্ষের নবমীতে দুর্গা মায়ের বোধনের মাধ্যমে শুরু হয়ে যায় চট্টোপাধ্যায় পরিবারের দুর্গাপুজো। এই পুজো প্রায় সাড়ে তিনশো বছর ধরে চলে আসছে।
অন্যদিকে রায় পরিবারের পুজোর উৎস সম্পর্কে জানা গিয়েছে, বালিজুড়ি গ্রামের সবথেকে প্রাচীন পুজো হলো এই রায় পরিবারের পুজো। আজ থেকে প্রায় সাড়ে চারশ বছর আগে এক কাপালিক এই পুজো শুরু করেছিলেন। তারপর থেকেই রীতি মেনে রায় পরিবার কৃষ্ণপক্ষের নবমীতে যমুনা সায়র থেকে ঘটা করে রায় পরিবারের দুর্গাপুজোর মঙ্গলঘট আনা হয়। এরপর থেকেই দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু হয় এবং চলে বিজয়া দশমী পর্যন্ত।