শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জী : এ কোনো গল্পগাথা নয়। সত্যি ঘটনা এক শিশুর। সুদূর পাটনা দেখতে হাজির হয়েছে কলকাতার চিড়িয়াখানায়। কি করে সম্ভব ৮ বছরের ওইটুকু বাচ্চার পক্ষে এত দীর্ঘ পথ একা অতিক্রম করে আসা কিন্তু সেই অসম্ভব কাজই সম্ভব হয়েছে কলকাতার বুকে। বাচ্চার ওই কথা শুনে রীতিমতো হকচকিয়ে গিয়েছেন সমস্ত উপস্থিত কর্মীরা।
ঘটনাটি ঘটেছিল এরকম, আলিপুর চিড়িয়াখানার এক্সিট গেট দিয়ে নীল সোয়েটার আর জিনস পরিহিত অবস্থায় এক বছর সাত কি আটেকের শিশুকে দেখতে পান নিরাপত্তারক্ষীরা। একা ওইটুকু শিশুকে ঢুকতে দেখে সন্দেহ জাগে তাদের মনে। এগিয়ে যান তাঁরা, আর তারপরেই শিশুর মুখ থেকে যা শোনেন তাতে তো চোখ কপালে উঠেছে কর্মীদের।
বাচ্চাটি জানিয়েছে সুদূর পাটনা থেকে ট্রেনে চেপে সে পৌঁছে গিয়েছে কলকাতায়। এমনকি সে জানায় বাড়িতে বাবা মা বকাবকি করে তাই সে বাড়িতে আর ফিরতে চায়না। চিড়িয়াখানার অধিকর্তার সামনে তাকে নিয়ে যাওয়া হলে তার কথা শুনে তিনিও রীতিমতো তাজ্জব হয়েছেন।
প্রশ্ন একটাই উঠেছে ওইটুকু ছেলে কিভাবে এতদূর রাস্তা আসতে পারলো! ওয়াটগঞ্জ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে শিশুটিকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছেলেটির পরিবারের লোকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা।
বাচ্চাটির সাথে কথোপকথনে যা জানতে পেরেছে পুলিশ তাতে স্পষ্ট বাড়িতে মা বাবার অতিরিক্ত শাসনের কারণে সে আর বাড়ি ফিরতে চায়না। সে জানায় তার নাম প্রাণ। বাড়িতে মা বাবার সাথে থাকতো সে। ট্রেনে চেপে পাটনা আসার পর বাকি রাস্তা পায়ে হেঁটেই হাজির হয়েছে সে চিড়িয়াখানায়। কিন্তু একটি প্রশ্নের উত্তরে নীরব সে। কোথায় থাকবে এখন তা নিয়ে কিছুই বলেনি শিশুটি।
ইতিমধ্যেই পাটনা পুলিশের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু শিশুটি কোনোভাবেই মা বাবার কাছে ফিরতে রাজি নয়। তবে শিশুর সাহস দেখে অবাক সবাই। একরত্তি এক সাত বছরের বাচ্চা এতটা রাস্তা অতিক্রম করে এসে হাজির খোদ কলকাতায়! সত্যিই অবিশ্বাস্য!