নিজস্ব প্রতিবেদন : মহারাষ্ট্রের রাজনীতির অংক এক মোড়কে বদলে দেওয়া ব্যক্তির নাম হল একনাথ শিন্ডে। এই একনাথ শিন্ডেই এখন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করার ঠিক নয় দিন আগে তিনি বিদ্রোহ শুরু করেছিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। তার সেই বিদ্রোহ জানিয়ে দিয়েছিল মহারাষ্ট্রের সরকারকে ফেলে দিতে বেশি সময় লাগবে না। সেটাই করে দেখালেন তিনি।
মহারাষ্ট্রের বর্তমান এই নায়ক একনাথ শিন্ডের রাজনৈতিক জীবনে উত্থান সিনেমার মতোই। প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন একজন সামান্য অটোচালক। তারপর সেখান থেকেই ধীরে ধীরে তার উত্থান শুরু হয়। প্রথমে কর্পোরেটর, পরে বিধায়ক, মন্ত্রী এবং সবশেষে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসলেন তিনি।
একনাথ শিন্ডে ১৯৬৪ সালের সাতারা জেলার জাওয়ালিতে জন্মগ্রহণ করেন। এরপর তার দশম শ্রেণীর বেশি পড়াশোনার সুযোগ হয়নি। জীবনের প্রথম পেশা হিসেবে তাকে বেছে নিতে হয়েছিল রিক্সা চালানো। এরপর ৮ এর দশকে তিনি শিবসেনায় যোগ দেন এবং তারপর থেকেই শুরু হয় তার রাজনৈতিক উত্থান।
পরপর দুবার মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কর্পোরেটের, পরপর চারবার বিধায়ক নির্বাচিত হন। এরপর ধাপে ধাপে মন্ত্রী এবং অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী হলেন তিনিই। জীবন অটো রিক্সা চালক হিসাবে শুরু করলেও রাজনীতিতে পা রাখার পর স্বাভাবিকভাবেই তার সম্পত্তি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে। বর্তমানে এই মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে কয়েক কোটি টাকার মালিক।
২০১৯ সালে বিধানসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সময় একনাথ শিন্ডে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে যে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন তা থেকে জানা যায়, একনাথ শিন্ডের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১১.৫৬ কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে ৯.৪৫ কোটি টাকার তার স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে এবং ২.১০ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। রাজনীতি ছাড়াও তিনি নির্মাণ ব্যবসা করেন বলে জানিয়েছেন।
তার মোট সাতটি গাড়ি রয়েছে। এই সকল গাড়ির মধ্যে দুটি স্করপিও, একটি বোলেরো, দুটি ইনোভা এবং একটি আর্মাডা গাড়ি রয়েছে। এর পাশাপাশি রয়েছে একটি টেম্পো। সব শুদ্ধ গাড়ির মূল্য হল ৪৬ লক্ষ টাকা। তার নামে রয়েছে ১১০ গ্রাম সোনার গয়নার অলংকার এবং তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ৫৮০ গ্রাম সোনার গয়নার অলংকার। এছাড়াও তার রয়েছে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র।
তা যে সকল ব্যবসা রয়েছে তার মধ্যে হলো শিবম পরিবহন, শিবম এন্টারপ্রাইজ এবং বোম্বে ফুড প্যাকারস। তার নামে যে সকল ফ্ল্যাট রয়েছে তার ২০১৯ সালে বাজার মূল্য ছিল ৯ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা। এছাড়াও তার স্ত্রীর নামে ৩০ লক্ষ টাকার একটি দোকান রয়েছে। তবে এর পাশাপাশি তিনি জানিয়েছিলেন তার নামে ৩ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকার ঋণ রয়েছে। যদিও ২০১৯ সালের পর এই সম্পত্তির পরিমাণ কত বৃদ্ধি পেয়েছে তা জানা সম্ভব নয়।