নিজস্ব প্রতিবেদন : কেন্দ্রে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানো কেবলমাত্র বিজেপির জন্য ধাক্কা তা নয়। কেন্দ্রে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানো দেশের জন্যও বড় ধাক্কা। এমনটা শুধু ভারতীয়দের বড় অংশ ভাবছেন তা নয়, এমন ঘটনা ভাবতে শুরু করেছে আন্তর্জাতিক মহলকেও। আর মোদির আসন সংখ্যা কমা যাদের জন্য সবচেয়ে উপকারী হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলো চীন (China)। মোদির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পরই ভারতের নির্বাচনী ফলাফল ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তার প্রভাব নিয়ে ইতিমধ্যেই বড়সড় প্রতিবেদন লিখেছে চীনের মুখপাত্র গ্লোবাল টাইমস।
পরপর দু’বার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকার ফলে ভারত সরকার যেভাবে ভারতকে প্রোডাকশন হাবে তৈরি করার পথে এগোচ্ছিল এবং যেভাবে দেশের অর্থনৈতিক সংস্কার হচ্ছিল তা এবার ধাক্কা পেতে হবে বলেই মনে পড়ছে গ্লোবাল টাইমস। এমনকি ওই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবেই লেখা হয়েছে, আর্থিক সংস্কারের পথ থেকে সরতে হবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে। আর এর ফলে এবার ভারতের সঙ্গে চীনের (India vs China) নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হবে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
এনডিএ পুনরায় সরকারের প্রত্যাবর্তন করলেও এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত-পা শরীরদের কাছে বাঁধা পড়ে গেছে। এর ফলে আগের মত আর প্রতিরক্ষা থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক সংস্কারের দিকে হাঁটার ক্ষেত্রে অনেকটাই বাধা পেতে হবে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। এমনকি বিজেপির আসন সংখ্যা কমার ফলে দেশের যে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি হচ্ছিল তা ধরে রাখতে পারবে কিনা তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।
এর পাশাপাশি ইউরোপের কূটনীতি বিষয়ক ম্যাগাজিন ইউরোপা তৃতীয় মোদি সরকারের অভিমুখ নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাদের সন্দেহ এবং সংশয়, আগামী দিনে আগের মত পদক্ষেপ গ্রহণ হয়তো আর কোনভাবেই সম্ভব হবে না। আর তা সম্ভব না হলে বহু ক্ষেত্রেই ভারত সরকারকে চাপের মুখে পড়ার পাশাপাশি চাপের মুখে পড়ে যাবে ভারতের বিভিন্ন পদক্ষেপ।
আর এই সকল সংশয় এবং মোদি সরকারের এমন ফলাফল স্বাভাবিকভাবেই আনন্দমুখর করে তুলেছে চীনকে। কেননা যেভাবে ভারতের অগ্রগতি হচ্ছিল, যেভাবে ভারত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করছিল, সেই সকল পদক্ষেপ এখন ধাক্কা পেতে পারে। যদিও বুথ ফেরত সমীক্ষার ফলাফল দেখে চীনের মুখপাত্র গ্লোবাল টাইমস সেই সময় দাবি করেছিল, মোদি সরকার তৃতীয়বারের জন্য ফিরলে ভারত ও চীনের সম্পর্ক ভালো হবে। তবে এখন ফলাফল দেখে তারা প্রকাশ্যে না বললেও হয়তো ভিতরে ভিতরে আনন্দে লাফাচ্ছে। অন্যদিকে অনেকেই আবার মনে করছেন, গত কয়েক বছরে যেভাবে ভারতের প্রতিরক্ষা সেক্টর এবং অর্থনৈতিক সেক্টর এগিয়ে গিয়েছে তাতে যথেষ্ট চাপে প্রথম বিশ্বের দেশগুলি। আর এই কারণেই গায়ে জ্বালা ধরেছিল চীনের এবং এখন ভোটের ফলাফল নিয়ে এমন পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে।