শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জী : কত রঙ্গ যে দেখা যায় এই দুনিয়ায়! তার আর যেন শেষ হয় না। এ কেমন কথা, মায়ের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে জন্মের এতদিন পর মামলা! এই ঘটনাটি শুনে সবাই রীতিমতো তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন। তবে এই ঘটনা কিন্তু এক অক্ষরও বানানো নয়। সম্পূর্ণটাই সত্যি ঘটেছে ইংল্যান্ডে।
আর যে এই ঘটনা ঘটিয়েছে তিনি হলেন লন্ডনের বছর কুড়ির তরুণী এভি টোম্বিস। কিন্তু এই আজব ঘটনার পেছনে রহস্যটাই বা কি? তবে আসুন জেনে নিই হঠাৎ ওই তরুণী মায়ের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা কেনো করতে গেলেন।
জন্ম থেকেই ওই তরুণী মেরুদণ্ডের এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। যার ফলে তার জীবন দুঃসহ হয়ে উঠেছে। স্পাইনা বিফিডা নামক মেরুদণ্ডের এক বিরল রোগের কবলে ওই তরুণী। এমন রোগের ফলে তাকে সারাদিনের প্রায় ২৪ ঘণ্টায় চলাফেরা করার জন্য টিউবের সাহায্য নিতে হয়। যার ফলে তার প্রতিদিনকার জীবন তার কাছে খুব কষ্টজনক হয়ে উঠছে দিনদিন।
এভির মতানুসারে, তাঁর এই পৃথিবীতে জন্মানোটাই যেন একটা অভিশাপ। আর এই কারণের জন্য সে দায়ী করেছে মায়ের চিকিৎসককে। ডাঃ ফিলিপ মিচেল যিনি কিনা তাঁর মায়ের গর্ভাবস্থায় চিকিৎসক হিসেবে ছিলেন তাঁর ওপরেই এভির সমস্ত রাগ গিয়ে পড়েছে। তাঁর অভিযোগ, ডাক্তারের উপযুক্ত পরামর্শের অভাবেই আজ তাকে সেই ফল ভোগ করতে হচ্ছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে ওই তরুণী ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন কোর্টে। তিনি দাবি করেছেন, গর্ভাবস্থায় চিকিৎসক যদি জানিয়ে দিতেন যে গর্ভের সন্তান স্পাইনা বিফিডার মতো জটিল রোগের কবলে রয়েছে তাহলে প্রয়োজনীয় ওষুধ থেকে শুরু সমস্ত পথ্য ঠিকঠাক দিতেন কিন্তু যেহেতু তিনি তা করেননি তার ফলস্বরূপ আজ এই দশা এভির।
লন্ডন কোর্টের বিচারপতি এভির করার মামলাটির সাথে সহমত হয়েই রায় দিয়েছেন। বিচারপতির কথা অনুযায়ী, সত্যিই যদি চিকিৎসক সঠিক খাদ্য ও ওষুধ নির্বাচন করে দিতেন সেক্ষেত্রে সুস্থ সন্তানই জন্মাতো। ওই চিকিৎসকের এক বিশাল অঙ্কের টাকা জরিমানাও করা হয়েছে আদালতের তরফ থেকে।
প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ঠিক কত টাকা জরিমানা করা হবে তা নির্দিষ্ট করে ধার্য হয়নি কিন্তু মনে করা হয়েছে এক বড়সড় অঙ্কের টাকাই চাওয়া হবে যা দিয়ে ওই তরুণীর সারা জীবনের সমস্ত খরচ বহন করা যাবে।