Sea Beach: বর্তমানে সাধারণ মানুষের কাছে সমুদ্র সৈকত মানে প্রথমেই আসে দিঘা-পুরী। যেখানে ছুটির সময়গুলিতে দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়। বলা যায় পর্যটকদের কাছে জলভাত হয়ে গিয়েছে দিঘা সমুদ্র সৈকত। তাই অনেক ভ্রমণপ্রেমী চায় নতুন কোনো সমুদ্র সৈকত উপভোগ করতে। আর তাদের জন্যই আজকের এই প্রতিবেদনে জানানো হলো ৫টি দুর্দান্ত সমুদ্র সৈকতের (Sea Beach) তথ্য। যা কলকাতার খুব কাছেই। কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে কিছু দিনের জন্য অবশ্যই ঘুরে আসা যায় এই সমুদ্র সৈকত থেকে। সময় নষ্ট না করে সমুদ্র সৈকতগুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
বগুড়ান জলপাই
কিছু দিনের জন্য শহরের কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে শান্ত-নিরালা জায়গার যদি কেউ খোঁজ করেন তাহলে অবশ্যই ঘুরে আসতে পারেন বগুড়ান জলপাই সৈকত (Sea Beach) থেকে। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকতটির পরিসর খুব একটা নয়। এটি একটি বৃহৎ খাড়ির মতো। যা সমুদ্রের মধ্যে ঢুকে গিয়েছে। তবে এই সমুদ্র সৈকতের অপরূপ সুন্দর্য নিমেষেই পর্যটকদের মন ফুরফুরে করবে। বিশেষ করে গোধূলির সময় এই সৈকতের সৌন্দর্য দেখার মতো। এছাড়াও এই সৈকতের একটি বিশেষ চমক রয়েছে। তা হল জোয়ারের সময় এই সৈকতে জল যেমন হুহু করে বাড়তে থাকে তেমনি ভাটার সময় সৈকতের জল অনেকটাই নিম্নমুখী হয়। এই সৈকতে ঘুরতে এলে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের দৃশ্যটি মিস করলে চলবে না। এই মুহূর্তটি যে কারোর মন ভালো করবেই।
আরো পড়ুন: যেতে হবে না চিনে, এবার আপনার কাছেই রয়েছে রঙিন পর্বতমালার খোঁজ
জুনপুট
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি শহরের কাছে অবস্থিত আরেকটি সমুদ্রসৈকত হলো জুনপুট। ছুটির মুহূর্তগুলি কাটানোর জন্য উপযুক্ত জায়গা। কলকাতা থেকে যদি কেউ এই সৈকতে আসতে চান তাহলে ১৬০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে আসতে হবে। পুর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি শহর থেকে এই সমুদ্রতটের দূরত্ব রয়েছে ১০ কিলোমিটার। বিশেষত যারা নির্জন নিরালায় একান্তে কিংবা জীবনসঙ্গীর সাথে সময় কাটাতে চান তাদের জন্য পারফেক্ট সৈকত এই জুনপুট। শান্ত নিরিবিলি এই জুনপুটের বেলাভূমি ছুটির সময়গুলিতে দারুন মুহূর্ত উপহার দেবে।
লক্ষ্মীপুর
কলকাতার কাছে অবস্থিত আরও একটি মন ভালো করা দুর্দান্ত সমুদ্র সৈকত (Sea Beach) হলো লক্ষ্মীপুর সমুদ্র সৈকত। বকখালির কাছে অবস্থিত এই অপরূপ সুন্দর্যে মোরা সমুদ্রতট। এখানে একবার গেলে ফিরতে মন চাইবে না। বকখালি সি বিচ থেকে ২০ মিনিট পায়ে হেঁটে গেলেই মিলবে এই সমুদ্র সৈকত। যেখানকার নিরিবিলি অপূর্ব সৌন্দর্য স্মৃতির পাতায় জ্বলজ্বল করবে। কলকাতা থেকে এই সমুদ্র সৈকতের দূরত্ব রয়েছে ১৩৬ কিলো মিটার। এছাড়াও এই সমুদ্র সৈকতকে আবার অনেকে মিনি গোয়া, ভার্জিন বিচ নামেও নামাঙ্কিত করেন। তবে এই সৈকতের সৌন্দর্যের পাশাপাশি এখানকার আরেকটি বিশেষ আকর্ষণ হল গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এই সমুদ্রতটের পাশেই রয়েছে একটি ছোট্ট গ্রাম। যেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিমেষেই মুড রিফ্রেশমেন্ট দেবে।
আরো পড়ুন: কম খরচায় ঘুরে আসুন ‘মিনি সুন্দরবন’ থেকে, শীতের ছুটি কাটানোর আদর্শ জায়গা
দক্ষিণ পুরুষোত্তম
পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সমুদ্র সৈকতের জুরি মেলা ভার। তেমনি আরেকটি দুর্দান্ত কোলাহলহীন সমুদ্র সৈকত হলো দক্ষিণ পুরুষোত্তম। তবে এই সমুদ্র সৈকতটির জনমানষের কাছে খুব একটা পরিচিতি নেই। থাকার জন্য এখানে রয়েছে ছোট ছোট হোটেল এবং ব্যাকপ্যাকার্স টেন্ট। তবে এই সমুদ্রতটের বিচ দেখলে মনে হবে যেন ঘরের মেঝের মতো। মূলত যেসব পর্যটকরা কিছুটা সময় নিজের মতো নিরালা নিভৃতে একাকী কাটাতে চায় তাদের জন্য পারফেক্ট। বড় বড় হোটেল না থাকলেও ব্যাকপ্যাকার্স টেন্টে রয়েছে থাকা খাওয়ার দুর্দান্ত ব্যবস্থা। এই সমুদ্র সৈকতে (Sea Beach) চার বেলা থাকা-খাওয়া সমেত খরচ লাগতে পারে মাথাপিছু ১৫০০ টাকা। তবে যাওয়ার আগে বুকিং করে যাওয়াই ভালো।
বাঁকিপুট
নির্জন নিরালায় ছুটি কাটানোর সেরা সেরা ঠিকানা হল বাঁকিপুট সমুদ্র সৈকত (Sea Beach)। এই সমুদ্র সৈকতের আকর্ষণীয় বিষয় হলো ঝাউবন। ঝাউবনের সারি এখানকার সৌন্দর্যকে আরো শোভিত করে তুলেছে। পাশাপাশি এই সমুদ্র সৈকতে পাওয়া যায় লাল কাঁকড়া সাথে পাখিদের কাকলি কুজন। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপরূপ সৌন্দর্য তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করা যায় এই সমুদ্রতটে। এছাড়াও এই বাঁকিপুট সৈকতে ঘুরতে গেলে ঘোরা যাবে আরো বেশ কয়েকটি স্থান। এই সৈকতের পাশেই রয়েছে ব্রিটিশ আমলের তৈরি বাতিঘর। এছাড়াও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কপালকুণ্ডলা মন্দিরও রয়েছে এই সমুদ্র সৈকতের এলাকাতেই।