নিজস্ব প্রতিবেদন : চিকিৎসক সুশোভন ব্যানার্জিকে (Dr. Sushovan Banerjee) বীরভূম, বোলপুরের পাশাপাশি গোটা দেশেরই মানুষ চেনেন। যিনি ‘এক টাকার ডাক্তার’ নামে খ্যাত ছিলেন। মাত্র এক টাকায় তিনি চিকিৎসা করতেন বলেই তার এমন নাম ডাকছিল এবং সেই নাম ডাকের পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি পেয়েছিলেন পদ্মশ্রী সম্মান। তবে তার প্রয়াত হওয়ার পর তারই এক কর্মী এমন জঘন্য কাজ করবেন তা কেউ ভেবে উঠতে পারেননি। বৃহস্পতিবার ওই কর্মী পালাতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন।
পুলিশের হাতে আটক হওয়া ওই ব্যক্তি কোনরকম ডিগ্রী ছাড়াই রমরমিয়ে বোলপুরের (Bolpur) মত শহরে চিকিৎসা করছিলেন। বোলপুরের বিচিত্রা সিনেমা হলের পিছনে মোহর আবাসনের নিচে থাকা একটি রুমে চলছিল তার চিকিৎসার কারবার। শেষমেষ সেই খবর পুলিশের কাছে যায় এবং বৃহস্পতিবার পুলিশ সেখানে হানা দিলে প্রথমে তিনি পিছনের দরজা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে তার পালানোর সেই চেষ্টা বৃথা যায় এবং পুলিশ তাকে আটক করে বোলপুর থানায় নিয়ে আসে।
পুলিশের হাতে দ্রুত ওই ভুয়ো চিকিৎসকের (Fake Doctor) নাম হল জীবন কুমার মাজি। তিনি ২২ বছর ধরে ডাক্তার সুশোভন ব্যানার্জীর কাছে কাজ করতেন বলে দাবি করেছেন এবং সেই অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি এতদিন চিকিৎসার প্র্যাকটিস করছিলেন বলে দাবি করেছেন। তবে তিনি প্র্যাকটিসের দাবি করলেও যেভাবে তার জাল ছড়িয়ে ছিলেন তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। তাকে সাহায্য করত বোলপুর স্ক্যান পয়েন্ট বলেও তিনি দাবী করেছেন।
ওই ভুয়ো চিকিৎসকের নিজের কোন ডিগ্রী না থাকলেও তিনি প্যাড ছাপিয়ে সেই প্যাডে ওষুধ থেকে শুরু করে অন্যান্য বিভিন্ন চিকিৎসার পরামর্শ দিতেন। শুধু তাই নয়, গুরুতর ক্ষেত্রে যদি রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করতে হতো তাহলেও তিনি ওই প্যাডে লিখে রেফার করতেন। অপারেশন সহ অন্যান্য জটিল চিকিৎসাতেও তার প্যাডের রেফারেই নাকি কাজ হয়ে যেত।
এমন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জীবন কুমার মাজি স্বীকার করে নিয়েছেন যে তার কোন ডিগ্রী নেই। তিনি ২২ বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই চিকিৎসার কাজ করতেন। ডাক্তার সুশোভন ব্যানার্জির কাছে যারা চিকিৎসা করাতে আসতেন তাদের সঙ্গে তৈরি হওয়া পরিচিতির পরিপ্রেক্ষিতেই তার কাছে রোগীরা আসতো। ডিগ্রী ছাড়া চিকিৎসা, ডিগ্রী ছাড়া রেফার! এসব রীতিমত উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বোলপুরের বাসিন্দাদের কাছে।