নারীদের সংগ্রাম, লড়াই করে সমাজে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখা, এমন ধরনের নানা গল্পই শোনা যায় ‘দিদি নম্বর ওয়ান’-এর মঞ্চে। কেউ স্বামী দ্বারা নির্যাতিতা, কেউ সন্তানহীনা। কেউ আবার অত্যাচারিত, বাধ্য হয়েছেন সংসার ত্যাগ করতে, এমন হাজারো ঘটনা শোনা যায় এখানে। এই ঘটনা শুনতে শুনতে প্রায়ই আবেগে ভেসে যান সঞ্চালিকা রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার প্রকাশ্যে তিনি এমনই এক ঘটনার বিরোধিতা করলেন এক প্রতিযোগীর স্বামী।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলা টেলিভিশনের একমাত্র জনপ্রিয় শো ‘দিদি নম্বর ১’। যেখানে মহিলাদের লড়াই ও তাঁদের আত্মত্যাগের গল্প শোনা যায়। জি বাংলার এই শো অনুপ্রেরণামূলক শো। যা শক্তি জোগায় বাংলার হাজার হাজার মহিলাদের, আর এর সঙ্গে আত্মনির্ভর হওয়ার বার্তাও দেয়। সেই সঙ্গে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসাধারণ সঞ্চালনা করার দক্ষতা তো আছেই।
তবে কিছু দিন আগেই এই শো নিয়ে বিতর্কিত অভিযোগ করেন বেহালার এক ব্যক্তি। তিনি নিজেকে দিদি নম্বর ১-এর এক প্রতিযোগির প্রাক্তন স্বামী বলে পরিচয় দেন । পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন টিআরপি বাড়ানোর জন্য বাংলার মহিলাদের নিয়ে নানা মিথ্যা গল্প বানিয়ে দেখানো হয় টিভির পর্দায়। স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ট, শ্বশুরবাড়ির লোকের হাতে নাজেহাল হওয়া মহিলারাই পৌঁছে যান দিদি নম্বর-১-এর মঞ্চে। সেইসব দুঃখের গল্প বলতে বলতে প্রতিযোগী কেঁদে ভাসান, আবার কখনও রচনাও তার সাথে কেঁদে ওঠেন।
সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমে বেহালা নিবাসী অরূপ কুমার ভুঁইয়া অভিযোগ জানান, দিদি নম্বর ১-এর মঞ্চে হাজির হয়ে তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী ডিভোর্স সম্পর্কিত অনেক কিছু বলেছেন। সেই নিয়েই যাবতীয় সমস্যা তার। তিনি বলেছেন, ‘দিদি নম্বর ওয়ান’-এ শুধু মহিলা নয়, পুরুষদের দিকের সমস্যাটাও দেখানো দরকার। ওখানে একজন মেয়ে হাজার হাজার দর্শকদের সামনে কেঁদে কেঁদে যা বলবে, তাই বিশ্বাস করা হবে। কিন্তু নেপথ্যে কি আরো ঘটনা থাকতে পারে না? যদি থেকেই থাকে তবে ‘দিদি নম্বর ওয়ান’-এ তা কেন দেখানো হবে না? এই কারণেই তিনি এই অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন।
এই বিতর্ক নিয়ে এবার মুখ খুললেন স্বয়ং রচনা। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ১১ বছর ধরে এই শো টি হয়ে আসছে। প্রতিটা এপিসোডে চারটি করে মেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে থাকে। সবার কাহিনি, সবার চোখের জল সব মিথ্যা হতে পারে না। নানান জায়গা থেকে হাজার হাজার মেয়ে আসছে সবাই তো আর অভিনয় করতে পারবে না। তাই সবকিছু যে সাজানো ঘটনা তা বলা যায় না। তবে এটা হতে পারে যে, হাজার জন মেয়ের মধ্যে হয়তো এক দুজন সত্যিটা একটু এদিক-ওদিক করে ঘুরিয়ে নিজের মত বললো। তাই বলে সকলেই যে মিথ্যাবাদী সেটা বলা যায় না।