নিজস্ব প্রতিবেদন : অবশেষে ভাগ্য ফিরলো ‘কৌন বানেগা ক্রোড়পতি’তে প্রথম ৫ কোটি টাকা জয়লাভ করা সুশীল কুমারের (Sushil Kumar KBC)। এক যুগ আগে ২০১১ সালে তিনি প্রথম কোন প্রতিযোগী হিসাবে এই প্রতিযোগিতা থেকে ৫ কোটি টাকা জয়লাভ করেছিলেন। এরপরে অবশ্য সুখ স্বাচ্ছন্দের জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দের পরিবর্তে নেমে আসে শুধুই দুঃখ, নিরাশা আর হতাশা। তবে এবার সেসবকে দূরে সরিয়ে সুশীল নতুন কামাল করে দেখালেন আর তাতেই তার ভাগ্য ফিরল।
২০১১ সালে প্রথম প্রতিযোগী হিসেবে পাঁচ কোটি চাকা জয় লাভ করার পর সুশীল কুমার অর্থের দম্ভে একেবারে অহংকারের শীর্ষে উঠে গিয়েছিলেন। একবারে এত টাকা পেয়ে রীতিমতো তার জীবন বদলে গিয়েছিল। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি মদ্যপান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ওই টাকা ফুর্তি করে ওড়াতে শুরু করেন। দেখতে দেখতে সেই টাকা শেষ হয়ে যায়। কেবিসি-তে অংশগ্রহণ করে যেভাবে তিনি ৫ কোটি টাকা জিতে নজির তৈরি করেছিলেন, ঠিক একই ভাবে অল্প সময়ের মধ্যে সেই টাকা ফুটিয়ে দিয়েও নজির গড়েছিলেন।
প্রতিযোগিতায় জেতা টাকা অল্প সময়ের মধ্যে ফুটিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ধীরে ধীরে তার সঞ্চয়ে টান ধরতে শুরু করে। এই ঘটনা নিয়ে তার সাংসারিক জীবনেও শুরু হয় অশান্তি। শেষমেষ অশান্তি এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যে তার স্ত্রীও তাকে ছেড়ে চলে যান। যখন সমস্ত সঞ্চয় শেষ হয়ে একেবারে দরিদ্র জায়গায় এসে পৌঁছান সুশীল তখন আবার নিজেকে সংশোধন করতে শুরু করে। নেশার কবল থেকে নিজেকে বের করে ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা চালান। অবশেষে সেই সুশীল কুমার সম্প্রতি নিজের ভাগ্য নিজেই ফেরালেন।
আরও পড়ুন ? ভাগ্যের পরিহাস, কেবিসিতে ৫ কোটি টাকা জেতা সুশীলের দিন কাটছেন দুধ বেচে
সুশীল কুমার বিহারের মতিহারি এলাকার হনুমানগড়ির একজন বাসিন্দা। তিনি সম্প্রতি আবার খবরের শিরোনামে এসেছেন মূলত বিহারের শিক্ষক নিয়োগের বিহার পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে। সুশীল কুমার প্রথম নিজের পেশাগত জীবন শুরু করেছিলেন MGNREGA প্রকল্পের একজন কম্পিউটার অপারেটর হিসাবে। তবে এবার তিনি শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত হতে চলেছেন বিহার পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে।
সুশীল কুমারের সামনে নিজের প্রতিভার জন্য এখন দু’দুটি সরকারি কর্মচারীর অফার রয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। যদিও তিনি নিজে শিক্ষকতার পেশা বেছে নিতে চেয়েছেন এবং সেই ভাবেই এগিয়ে গিয়েছেন। তিনি বিহার পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায় পাস করার পর বিহারের একটি স্কুলের পড়ুয়াদের মনোবিজ্ঞান পড়াবেন। তিনি একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের পড়াবেন বলে জানা যাচ্ছে। পদে পদে হেরেও বার বার এইভাবে ঘুরে দাঁড়ানো সুশীল কুমারের মনোবল কতটা তা প্রমাণ করে। এর পাশাপাশি সুশীল কুমারের এইভাবে সাফল্যে গর্বিত মতিহারী এলাকার বাসিন্দারা।