নিজস্ব প্রতিবেদন : আগস্ট মাসের শুরুতেই দক্ষিণবঙ্গে শুরু হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিকে শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা জলমগ্ন হয়। দক্ষিণবঙ্গের যে সকল জায়গা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বীরভূমে। একদিনের বৃষ্টিতেই বীরভূমের বিভিন্ন জায়গা জলের তলায় চলে যায়। এরই মধ্যে রবিবার কুয়ে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলো বীরভূমে (Flood in Birbhum)।
বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর বীরভূমের অধিকাংশ নদী-নালার জল বাড়তে শুরু করে। আশঙ্কা করা হচ্ছিল পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। এদিকে তিলপাড়া ব্যারেজ থেকে ময়ূরাক্ষী নদীর পাঁচ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার ফলে সত্যি সত্যিই পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। এসবের মধ্যেই রবিবার ভোর বেলায় বীরভূমের লাভপুর ব্লকে থাকা কুয়ে নদীর বাঁধ ভেঙে গেল। কুয়ে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে প্লাবিত হয়েছে ৮ থেকে ১০টি গ্রাম।
রবিবার ভোর বেলায় কুয়ে নদীর বাঁধ ভাঙ্গে লাভপুরের ঠিবা গ্রামের তালতলার কাছে। নদীর বাঁধ ভাঙতেই হু হু করে নদীর জল ডুবতে শুরু করে গ্রামগুলিতে। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই প্লাবিত হয়ে যায় হাজার হাজার হেক্টর জমি, প্লাবিত হয়ে যায় একের পর এক গ্রাম। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে প্রশাসনিক ভাবে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা গ্রহণ করা শুরু হয়। বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ থেকে শুরু করে এলাকার বিডিও প্রত্যেকেই এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা শুরু করেন।
রবিবার ভোর বেলায় কুয়ে নদীর এমন বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে ঠিবা গ্রাম ছাড়াও যে সকল গ্রামগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখোমুখি সেই সব গ্রামগুলি হল কাজীপাড়া, লাঙ্গলহাট ইত্যাদি। এই সকল গ্রামের মাটির বাড়িতে বসবাসকারী বাসিন্দাদের প্রশাসনিকভাবে সরিয়ে আনা হয়েছে এবং তাদের থাকা খাওয়ার বন্দোবস্ত শুরু করা হয়েছে। পরিস্থিতির কারণে হাজার হাজার হেক্টর জমি জলের তলায় চলে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখোমুখি হবেন চাষীরা।
কুয়ে নদীর বাঁধ ভাঙ্গার ঘটনা অবশ্য এই প্রথম নয়, এর আগেও ২০২১ সালের ৩১ জুলাই কুয়ে নদীর বাঁধ ভেঙে ছিল লাভপুর ব্লকেই। সেবার বাঁধ ভেঙে ছিল কাঁদর কুলো গ্রামে। সেবারও হাজার হাজার হেক্টর জমি জলের নিচে চলে যাওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা জলবন্দী হয়ে পড়েছিলেন। এরপর বছর চারেক কাটতে না কাটতেই নতুন করে এই নদীর বাঁধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হওয়ার ঘটনায় নদী বাঁধ সুরক্ষিত রাখা নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠছে বিশেষজ্ঞ মহলে।