নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের রূপকার, অঙ্কের প্রফেসর, সমাজতান্ত্রিক, রাজনীতিবিদ, গ্ৰামীণ ভারতের অর্থনৈতিক জীবনের মানচিত্র বদলে দেওয়া ৭৪ বছরের রঘুবংশ প্রসাদ সিং রবিবার করোনা সংক্রান্ত নিঃশ্বাসের সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে দিল্লির AIIMS হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন।
মনমোহন সিংয়ের UPA সরকারের আমলে কেন্দ্রীয় গ্ৰামীণ উন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করেন। মহাত্মা গান্ধী ন্যাশানাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট স্কিমের প্রধান রূপকার। ২০০৫ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্প পাল্টে দেয় ভারতের গ্ৰামীন অর্থনৈতিক জীবনের চালচিত্র। গ্ৰামীণ ভারতের মানুষের বছরে ১০০ দিন কাজ দিয়ে রোজগারের সুনিশ্চিত ব্যবস্থা করেন মনে প্রাণে সমাজতান্ত্রিক রঘুবংশ প্রসাদ সিংহ।
২০০৬ সালে দেশের ২০০টি জেলায় এই প্রকল্প চালু হয়। হিন্দুস্থান বিজনেস লাইন পত্রিকায় ২০০৬ সালে রঘুবংশ প্রসাদ সিং জানিয়েছিলেন, “দেশে দারিদ্র দূরীকরণে এই প্রকল্প এক বিরাট পদক্ষেপ। সকলের জন্য কাজ হচ্ছে প্রথম পদক্ষেপ যেখানে নিশ্চিত করবে খাবার, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা। জনগণ কাজ চায়। এটা সরকারের দায়িত্ব তার ব্যবস্থা করা।”
১০০ দিনের কাজ দেশের গ্ৰামীণ মানুষের হাতে অর্থ তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। গ্ৰাম পঞ্চায়েত ও গ্ৰাম সভাগুলিতে কাজ পাওয়ার ব্যবস্থা হয়।
লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি দলের দীর্ঘদিনের সঙ্গী ২০২০ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন ও দলত্যাগের চিঠি দেন জেল বন্দি লালুপ্রসাদ যাদবকে।
পত্রপাঠ তা বাতিল করে দেন লালুপ্রসাদ এবং চিঠি লিখে জানান, “আপনি কোথাও যাচ্ছেন না।” হঠাৎ মৃত্যুর খবর লালুপ্রসাদের কাছে পৌঁছালে ট্যুইট করে লেখেন, “প্রিয় রঘুবংশ বাবু, আমি বলেছিলাম আপনি কোথাও যাচ্ছেন না। কিন্তু আপনি অনেক দূরে চলে গেলেন। আমি ভাষাহীন। আপনার অভাব পূরণ হবার নয়।”
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গভীর শোক প্রকাশ করেন রঘুবংশ প্রসাদ সিংহের মৃত্যুতে। রাহুল গান্ধী জানান, “গ্ৰামীণ ভারত ও ভারতের কৃষকেরা তাদের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুকে আজ হারালো।”
মনমোহনের সিং আগেই জানিয়েছিলেন, “গ্ৰামীণ ভারতের ১০০ দিনের কাজে রোজগারে নিশ্চয়তা দেওয়ার কারিগর আমি নয়, ছিলেন রঘুবংশ সিং প্রসাদ।”
সমাজতান্ত্রিক ভাবধারার বিশ্বাসী অঙ্কে পিএইচডি অর্জন করা এই ব্যক্তিটি সারাজীবন গ্ৰাম, গ্ৰামের কৃষক ও সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক রোজগার অধিকার আদায়ে লড়েছেন। চেয়েছেন সামাজিক ন্যায়। তাঁর মৃত্যুতে গ্ৰামীণ ভারতের তার শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধিকে হারালো।