নিজস্ব প্রতিবেদন : ব্যারাকপুরের দাপুটে নেতা হিসাবে যাকে ধরা হয়ে থাকে তিনি হলেন অর্জুন সিং। একসময় তিনি ছিলেন কেবলমাত্র একজন কাউন্সিলর। সেখান থেকেই বিজেপির হাত ধরে সাংসদ। রবিবাসরীয় বিকালে তিনি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। কারণ বছর ষাটের এই অর্জুন সিং রবিবার অভিষেক ব্যানার্জীর হাত ধরে তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন করলেন।
১৯৬২ সালের ২ এপ্রিল অর্জুন সিং জন্মগ্রহণ করেছিলেন ব্যারাকপুরের সিং রাজনৈতিক পরিবারে। তার বাবা ছিলেন কংগ্রেস নেতা সত্যনারায়ণ সিং। রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করা অর্জুন সিংয়ের ছোট থেকেই ছিল রাজনীতিতে আগ্রহ। এই আগ্রহের বসে ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র কলেজে স্নাতক পড়ার সময় মাঝপথেই পড়াশুনো ইতি দেন। পরে জুট কর্মী হিসেবে কাজ করেছিলেন।
জনপ্রতিনিধি হিসেবে তার পথ চলা শুরু হয় ১৯৯৫ সালে। সেই সময় ভাটপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সেই নির্বাচনে তিনি জয়যুক্ত হয়ে কাউন্সিলর হন। তবে তিন বছরের মধ্যে কংগ্রেস ত্যাগ করে ১৯৯৮ সালে মমতা ব্যানার্জির হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন।
২০০১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তিনি ভাটপাড়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সেই বছরই তিনি সিপিআইএম প্রার্থী রামপ্রসাদ কুন্ডুকে হারিয়ে বিধায়ক হন। এরপর তাকে আর পরাজয়ের মুখ দেখতে হয়নি। ২০০৬, ২০১১, ২০১৬ প্রতিটি নির্বাচনেই তিনি জয়লাভ করে বিধায়ক পদ ধরে রাখেন। এমনকি ২০১০ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত তিনি ভাটপাড়া পৌরসভার চেয়ারম্যানও ছিলেন।
তবে তার এই জয়ের ধারাবাহিকতায় একবার তাকে পরাজয়ের মুখ দেখতে হয়েছিল। সেটা ছিল ২০০৪ সাল। সেই বছর তিনি ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু সিপিআইএমের তড়িৎবরণ তোপদারের কাছে পরাজিত হন। এমত অবস্থায় ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে টিকিট নিয়ে তার সঙ্গে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব হয়। তখনই তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যান। বিজেপিতে গিয়ে টিকিট পেয়ে তৃণমূলের প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীকে পরাজিত করে সাংসদ হন।
নিজের জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার পাশাপাশি ভাটপাড়া বিধানসভা উপনির্বাচনে নিজের ছেলে পবন সিংকে জয়যুক্ত করেছিলেন তিনি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ছয়টিতে তৃণমূল জয়লাভ করলেও ভাটপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের জয়লাভ করেন তার ছেলে পবন সিং।