নিজস্ব প্রতিবেদন : বাঙালির মিষ্টি প্রীতির কথা সুবিদিত। বিশেষ করে ছানার তৈরি মিষ্টিতে বাঙালি কারিগরদের সুখ্যাতি দেশজোড়া। কিন্তু সেই মিষ্টি তৈরি থেকে বিক্রির ক্ষেত্রে এবার কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন নিয়মে বিপদে পড়েছেন বাংলার মিষ্টান্ন ব্যাবসায়ীরা।
ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (FSSAI) মিষ্টান্ন খাবারের সময়সীমার মেয়াদ লেখার নির্দেশিকা জারি করেছে। যা গত অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্যাকেটজাত নয় এমন, খোলা রাখা মিষ্টি বা কোন খোলা পাত্রে রাখা মিষ্টির গায়ে মিষ্টি তৈরির সময় ও ব্যবহার যোগ্যের সময়সীমা লিখতে হবে।
তবে নির্দেশিকায় এও বলা হয়েছে ব্যবহার যোগ্যের সময়সীমা ঠিক করতে হবে কাঁচামাল ও দেশের ভিন্ন ভিন্ন স্থানীয় আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে। এই নির্দেশিকা কার্যকর হবে ভারতের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে।
এই আইন কার্যকর করা হচ্ছে গ্ৰাহকদের স্বাস্থের কথা মাথায় রেখে। ২০০৬ সালে ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অ্যাক্ট পাস হয়। লক্ষ্য ছিল গ্ৰাহকদের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রতিরোধ করা।যাতে তাঁরা সম্ভাব্য রোগের হাত থেকে বাঁচতে পারে।
এই নির্দেশিকায় কিছু অস্পষ্টতা থাকায় সমস্যায় পড়েছেন রাজ্যের মিষ্টি ব্যাবসায়ীরা কারণ বাংলার প্রধান প্রধান মিষ্টি, রসগোল্লা, রসমালাই, ছানার কেক, সন্দেশ, সীতাভোগ, মিহিদানা, ল্যাংচা, পান্তুয়া প্রভৃতি তৈরির প্রধান উপাদান দুধ ও ছানা। যা খুব বেশি দিন স্থায়ী হয় না। গরম ও বর্ষার সময় এর স্থায়িত্ব আরও কমে যায়। এই সব মিষ্ঠির মেয়াদ ২৪ ঘন্টা। এক্ষেত্রে সময়সীমা কেমনভাবে উল্লেখ করা হবে বলে প্রশ্ন তুলেছেন মিষ্টি ব্যাবসায়ীরা। অন্য রাজ্যে বা দেশের বাইরে রপ্তানি করলে তা আরও ঝুঁকি পূর্ণ হয়ে যাবে।
গ্ৰামীণ এলাকায় মিষ্টির দোকানগুলিতে এক্সপিয়ারি ডেট বা বেস্ট বিফোর লিখে মিষ্টি বিক্রি একপ্রকার অসম্ভব। মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিভাগীয় মন্ত্রি সাধন পান্ডে। এই সমস্যার কথা উঠলে তিনি মেয়াদ পাত্রের গায়ে না লিখে কাগজে বা দোকানের বোর্ডে লেখার পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে দাবি করেন, মিষ্টান্ন তৈরির কাঁচামাল সরকারি ল্যাবরেটেরিতে পরীক্ষা করার বন্দোবস্ত করতে হবে কেন্দ্রীয় সংস্থাকেই।
মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠানগুলির সংগঠনের প্রতিনিধি ধীমান দাস জানান, এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে সুবিধা হবে গ্ৰামীণ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের। এফএসএসএআইয়ের আঞ্চলিক অধিকর্তারাও তাদের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন। এতে কেন্দ্রের নির্দেশিকায় কিছু অস্পষ্টতা নিয়ে যে অসন্তোষ ও আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছিল তা অবসান হল।