নিজস্ব প্রতিবেদন : এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপে (Cricket World Cup 2023) সবচেয়ে বেশি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছেন যে তারকা তিনি হলেন মহম্মদ শামি (Mohammed Shami)। কেনই বা হবে না! কেননা এবারের বিশ্বকাপের প্রথম চারটি ম্যাচে ভারতীয় এই বোলারকে রিজার্ভে রাখা হয়েছিল। এরপর হার্দিক পান্ডিয়া আহত হওয়ার কারণে দল থেকে ছিটকে গেলে তিনি সুযোগ পান। সুযোগ পেতেই নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দেন মহম্মদ শামি।
মাত্র ৬টি ম্যাচ খেলে এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপে তার সংগৃহিত উইকেট সংখ্যা ২৩। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ইনিংস হল নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল। যে ম্যাচে তিনি ৯.৫ ওভার বল করে ৫৭ রানের বিনিময়ে ৭টি উইকেট তুলে নেন। তবে শুধু নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে নয়, এবারের বিশ্বকাপে ধারাবাহিকভাবে নিজের ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন মহম্মদ শামি। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নিয়েছেন ৪ উইকেট, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে নিয়েছেন ৫ উইকেট, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ২ উইকেট। কেবলমাত্র নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে কোন উইকেট পাননি। আবার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে গ্রুপের ম্যাচে মহম্মদ শামি পেয়েছিলেন ৫টি উইকেট। তবে মহম্মদ শামির আগের জীবন এতো সাজানো-গোছানো ছিল না।
উত্তরপ্রদেশের আমরোহার বাসিন্দা মহম্মদ শামি প্রথম বাংলার হয়ে ২০১০ সালে রঞ্জি ট্রফি খেলার সুযোগ পান। এরপর ২০১২ সালে হাসিন জাহানের সঙ্গে তার সম্পর্ক তৈরি হয় এবং ২০১৪ সালে তারা বিয়ে করেন। কিন্তু চার বছরের মধ্যেই সেই সম্পর্কে ফাটল দেখা যায়, আজও সেই ফাটল জোড়া লাগেনি আবার বিচ্ছেদ হয়নি। হাসিন জাহানের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হওয়ার পর হাসিন জাহান মহম্মদ শামির বিরুদ্ধে ম্যাচ ফিক্সিং সহ নানান সাংসারিক অভিযোগ আনেন। এসবের কারণে মহম্মদ শামি নিজের জীবন নিয়ে অশান্তির মধ্যে পড়ে যান এবং আত্মহত্যা পর্যন্ত করতে গিয়েছিলেন।
নিজের সাংসারিক জীবনে অশান্তির পাশাপাশি মহম্মদ শামির পড়াশুনা জীবনও ছিল একেবারেই আলাদা। খেলার জন্য দশম শ্রেণীর পর আর পড়া হয়নি। পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার চেষ্টা চালালেও তার মন সব সময় পড়েছিল খেলার মাঠে। এসবের কারণেই আর তার পড়াশোনা এগোয় নি। এমনকি ছেলের পড়াশুনোর প্রতি আগ্রহ নেই দেখে বাবাও আর জোর করেননি। ১৫ বছর বয়স থেকেই মহম্মদ শামির লক্ষ্য হয়ে ওঠে শুধু খেলা আর খেলা।
মহম্মদ শামি সম্পর্কে মহম্মদ কাইফের ভাই হন। তবে তার বাবা তৌসিফ আলী ছিলেন সাধারণ একজন চাষী। জানা যায়, মহম্মদ শামি যে এলাকায় বসবাস করতেন সেখানে সবসময়ই কারেন্ট থাকত না। কিন্তু তার বাবার ছেলের খেলা দেখার জন্য ছিল চরম আগ্রহ। সেই জন্য তিনি লোডশেডিংয়ের মধ্যেও খেলা দেখার জন্য জেনারেটর কিনেছিলেন। মহম্মদ শামির আজ এত বড় একজন খেলোয়াড় হওয়ার পিছনে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে তার বাবা মাকে বলেই জানা যায়।