If you touch this river in India, you can find gold: ভারত হলো নদীমাতৃক দেশ, নদীর তীর কৃষিকাজের পক্ষে খুবই উপযোগী। নদীর উপকারিতা সত্যি অনস্বীকার্য। যেমন যাতায়াতের ক্ষেত্রে, ব্যবসায়িক লেনদেনের জন্য, এছাড়া মানুষেরা যদি নদীর তীরে বসতি করে তাহলে কোনদিন তাদের জলের অভাব হবেনা। সবথেকে বড় কথা নদীকে কেন্দ্র করে বহু মানুষ তাদের জীবনধারণ করেন। অতীতের বড় বড় সভ্যতাগুলি গড়ে উঠেছিল এই নদীকে কেন্দ্র করেই। ভারতে চারশোটির বেশি নদী প্রবাহিত হয়েছে। এদেশে নদীকে পূজা করা হয় দেবীরূপে, এমনকি নদীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু পৌরাণিক কাহিনি। আজকের প্রতিবেদনে জানা যাবে ভারতে এমন একটি নদী (Gold River of India) আছে যেখান থেকে পাওয়া যায় প্রচুর সোনা। ভাবলেই চক্ষু চড়ক গাছ হয়ে যাবে আপনার।
নদীটির নাম হল সুবর্ণরেখা (Gold River of India), যা অবস্থিত ঝাড়খণ্ডে। নদীটি বর্তমানে স্থানীয়দের আয়ের একমাত্র উৎস কিন্তু এখান থেকে কেউ মাছ ধরে বিক্রি করে না। জানলে অবাক হয়ে যাবেন এই নদী থেকে এখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা সোনা তুলে বিক্রি করে সংসার চালান। এত সোনা এই নদীর জলে কোথা থেকে আসে সেই প্রশ্নের কোন সঠিক উত্তর এখনো পাওয়া যায়নি। বিজ্ঞানীরাও এর কোন হদিশ দিতে পারেনি। আজকে এমনই এক আশ্চর্য নদীর কথা জানা যাবে।
সুবর্ণরেখা (Gold River of India) নদীটি নদীটি রাঁচির কাছে হুদ্রু জলপ্রপাত থেকে উৎপন্ন হয়ে ঝাড়খন্ডের সিঙভূম জেলা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে ওডিশায় প্রবেশ করে বঙ্গোপসাগরে মেশে। এর জলে সোনার কণা পাওয়া যায় বলে একে স্বর্ণরেখা নদীও বলে। পশ্চিমবঙ্গের এই নদীটি সুবর্ণরেখা নামে পরিচিত। সুবর্ণারেখা এবং এর উপনদী করকরিতে সোনার কণা পাওয়া যায়। রাঁচি থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৯৫ কিলোমিটার। স্থানীয় মানুষের গভীর বিশ্বাস আছে যে, করকরি নদী থেকে প্রবাহিত হয়ে সোনারকণা সুবর্ণরেখা নদীতে যায়। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ এই রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। কোথা থেকে এত সোনার কণা পাওয়া যায় এই দুই নদীতে তা আজও বড় প্রশ্ন।
বহু বছর ধরে বিভিন্ন গবেষণার পরও বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করতে পারেনি এই সোনা আসলে কোথা থেকে আসছে। ভূতাত্ত্বিকদের অবশ্য অনুমান করেছেন যে, সুবর্ণরেখা নদীটি (Gold River of India) প্রবাহিত হওয়ার সময় বহু পাথরের খণ্ডের মধ্য দিয়ে যায়। তখনই ঘর্ষণের ফলেই নাকি সোনার কণা জলে দ্রবীভূত হয়ে যায়। ব্যাপারটি শুনতে অনেকটাই সহজ কিন্তু এই নদী থেকে সোনা তোলার কাজটি মোটেই অত সহজ নয়। নদীর মাটি বা বালি থেকে সোনার কণাগুলোকে আলাদা করতে হয়। এই সোনার কণাগুলো আসলে ধানের দানার থেকেও ছোট।
স্বর্ণরেখা নদী থেকে সোনা তুলতে ঝাড়খণ্ডের কিছু স্থানীয় আদিবাসীরা সকালবেলা বাড়ি থেকে বের হন এবং বালি থেকে সোনা আলাদা করতে তাদের সারাটা দিন বেরিয়ে যায়। বছরের পর বছর চলে আসছে এই ধরনের কাজ। তমাড় ও সারান্ডা এলাকার নারী-পুরুষ ও শিশুরা ভোরে উঠে নদী থেকে সোনা তুলতে যান। নদীর চারপাশে অনেক নারী পুরুষকে দেখবেন হাতে স্যুপ নিয়ে সোনা তুলছেন।