নিজস্ব প্রতিবেদন : পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রীয় হারে DA-এর জন্য দাবি তুলে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে দাবি নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি চলছে আদালতে মামলা। এসবের মধ্যেই রাজ্য সরকার রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ ৬% থেকে বৃদ্ধি করে করেছে ১৪ শতাংশ। ১৪ শতাংশ ডিএ হওয়ার কারণে আগের তুলনায় কিছুটা হলেও বেতন বেশি পাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ আগের তুলনায় বৃদ্ধি পাওয়ায় বেতন বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি এবার রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কপাল খুলল। আদালতের রায়ে তাদের রীতিমতো লটারি লেগেছে। হাইকোর্টের তরফ থেকে তাদের একটি ভাতা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, শুধু বকেয়া ওই ভাতা মিটিয়ে দেওয়া নয়, পাশাপাশি ৬ শতাংশ সুদ সহ বকেয়া ভাতা মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে রাজ্যের শিক্ষক শিক্ষিকাদের যে বকেয়া ভাতা ৬ শতাংশ সুদের পরিপ্রেক্ষিতে মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা গত কয়েক বছর ধরেই ঝুলছে। ঐ ভাতা হলো হাউস রেন্ট অ্যালাওয়েন্স বা এইচআরএ (WB Teachers HRA)। আগামী চার সপ্তাহ অর্থাৎ এক মাসের মধ্যে বকেয়া এইচআরএ ৬ শতাংশ সুদের হারে মামলাকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মেটাতে হবে রাজ্য সরকারকে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর নির্দেশে।
এইচআরএ নিয়ে এমন জটিল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পিছনে রয়েছে ২০১২ সালের একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি। ২০১২ সালে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছিল, স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে যেকোনো একজন বেসরকারি এবং অন্যজন সরকার পোষিত বা সরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা হলে যেকোনো একজনই এইচআরএ পাবেন। তবে ২০১১ সালে এই বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে কলকাতা হাইকোর্ট এবং বকেয়া ডিএ মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি শেখর ববি শরাফ।
কলকাতা হাইকোর্টের সেই নির্দেশ আংশিকভাবে কার্যকর হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা কার্যকর করা হয়নি। এরপর আবার আদালত অবমাননার মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের শিক্ষা থেকে শুরু করে অর্থ সচিব সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে রুল ইস্যু করেও বকেয়া এইচআরএ মেটানো হয়নি। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে এবার কলকাতা হাইকোর্টের এই বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসলো এবং ৬ শতাংশ সুদের পরিপ্রেক্ষিতে বকেয়া এইচআরএ মেটানোর নির্দেশ দিল।