‘শিল্প জগতের মানুষ কোন পরিবর্তন আনতে পারেনি’, রামপুরহাট কাণ্ডে পরিচালক গৌতম ঘোষ

Shyamali Das

Published on:

নিজস্ব প্রতিবেদন : গত সোমবার রাত থেকে আগুন জ্বলতে শুরু করেছে বীরভূমের রামপুরহাটে। তৃণমূল উপপ্রধান খুন এবং সেই ঘটনার পাল্টা আরও ১০-১০ জনকে (সরকারী মতে ৮) জ্যান্ত আগুনে পুড়িয়ে মারা সমাজ কতটা নৃশংস হয়ে দাঁড়িয়েছে তাকেই তুলে ধরে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই তোলপাড় হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। শাসক এবং বিরোধী দলের নেতাদের তরজা এখন অন্যতম আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই পক্ষ হোক অথবা ওই পক্ষ, তরতাজা যে প্রাণগুলিকে অকালে বিসর্জন দিতে হলো তারা কি আর এই তর্জায় ফিরে আসবে! কখনোই না।

এবার এই ঘটনা নিয়ে পরিচালক গৌতম ঘোষ একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “ভয়ঙ্কর ঘটনা। হিংসা প্রতি হিংসা কিছুতেই আমাদের পিছু ছাড়ছে না। দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। বহু ক্ষেত্রে লক্ষ্য করেছি এবং এই ক্ষেত্রেও মনে হলো দ্বন্দ্ব অথবা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থেকে এমনটা হয়েছে। সবসময়ই রাজনৈতিক হিংসা থেকেই এমন ঘটনা ঘটবে এমনটা নয়। রাজনৈতিক হিংসা হতে থাকে তবে তার সঙ্গে ব্যক্তিগত এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এই রকম জায়গায় নিয়ে চলে যায়।”

এই প্রসঙ্গে তিনি প্রশাসনকে বিষয়টি কঠোরভাবে সমাধান করতে হবে বলে জানিয়েছেন। যাতে করে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর না ঘটে। তবে এর পাশাপাশি তিনি দাবি করেছেন, অসহিষ্ণুতা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। সামান্য জঙ্গিবাদ অথবা অন্যকোন ছোট বিভাগ পরবর্তীতে মারাত্মক আকার ধারণ করছে। সমাজের সমস্ত শ্রেনীর মধ্যে এমন ঘটনা ঘটছে এবং সবক্ষেত্রেই হচ্ছে। এসকল দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। এইসব নিয়ে সিনেমা তৈরি করা উচিত।

এর পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, সহিষ্ণুতা বৃদ্ধি করার জন্য সমস্ত বুদ্ধিজীবী, চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রচেষ্টা করতে হবে। যাতে করে সমাজকে পাল্টানো যায়। কিন্তু এই কথা বলার পাশাপাশি তিনি নির্দ্বিধায় স্বীকার করেছেন, “চলচ্চিত্র জগতের একজন হয়ে বলতে পারি, আমরা পারিনি। সিনেমা, থিয়েটার দিয়ে পরিবর্তন করতে পারিনি। সময়ের স্মৃতিমালাকেই ধরে রাখা গেছে কেবল। অনেক ছোটবেলায় ভেবেছিলাম, সমাজের পরিবর্তন হবে। মানুষ ভাল হবে। কিন্তু হল না। চারিদিকে মানুষ কেবল যুদ্ধই করে, ভায়োলেন্সই ছড়ায়। এভাবেই চলছে। এটাই মনে হয় মানুষের নেচার।”

এর সঙ্গে সঙ্গেই তিনি আরও জানিয়েছেন, “আজ এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে বলতে চাই, আমরা নাড়া দিতে পারিনি। আমাদের শিল্পও নাড়া দিতে পারেনি। আমরা শিল্প জগতের মানুষ কোনও পরিবর্তনই আনতে পারিনি।”