করোনা ঠেকাতে গুজব নয়, দেখে নিন সম্পূর্ণ সরকারি নির্দেশিকা

Shyamali Das

Updated on:

নিজস্ব প্রতিবেদন : বিশ্বের পাশাপাশি দেশজুড়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। আর এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে নানান ধরনের গুজব রটছে। তবে সেই সব গুজবকে দূরে সরিয়ে সরকার কি কি মেনে চলতে বলছে সেটা সকলের জেনে রাখা উচিত। যে কারণে সরকারি নির্দেশিকাগুলিকে শনিবার অডিও আকারে প্রকাশ করলো বীরভূম জেলা প্রশাসন ও পুলিশ। চলুন দেখে নেওয়া যাক কোন কোন সঠিক নির্দেশিকা পালনের কথা বলা হয়েছে।

কি কি করবেন?

আপাতভাবে হাত পরিষ্কার থাকলেও নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর সাবান ও জল দিয়ে ৪০ সেকেন্ড ধরে হাত পরিষ্কার করুন। কিংবা ৭০% অ্যালকোহলযুক্ত কোন স্যানিটাইজার দিয়ে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত পরিষ্কার করুন।

হাঁচি বা কাশির সময় আপনার জামার হাতার উপরের অংশ দিয়ে অথবা রুমাল বা টিস্যু দিয়ে ঢেকে রাখুন। টিস্যু ব্যবহার হয়ে গেলে ঢাকনা দেওয়া ডাস্টবিনে ফেলে দিন।

হাঁচি-কাশি যাদের হচ্ছে তাদের থেকে কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখুন।

জ্বর, শ্বাসকষ্ট বা কাশি নিয়ে যদি অসুস্থ বোধ করেন তাহলে ডাক্তার দেখান।

ডাক্তার দেখানোর সময় মাস্ক অথবা কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রাখুন।

যদি ডাক্তার আপনাকে ১৪ দিনের জন্য নিজস্ব কোয়ারেন্টাইনে থাকতে আদেশ দেন, তাহলে আলাদা রুমে আইসোলেশনে থাকুন।

কি কি করবেন না?

যদি আপনার জ্বর অথবা হাঁচি, কাশি হয় তাহলে অন্য কারোর খুব কাছাকাছি যাবেন না। নিজের নাক, চোখ ও মুখ স্পর্শ করবেন না। প্রকাশ্যে থুথু ফেলবেন না। ভিড় এবং বেশি জমায়েত এড়িয়ে চলুন।

হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের জন্য নির্দেশাবলী

হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তি অবশ্যই সম্ভব হলে আলাদা বাথরুম যুক্ত খোলামেলা ঘরে থাকুন। তবে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে যদি একান্তই থাকতে হয় তাহলে তাদের থেকে নূন্যতম দূরত্ব বজায় রাখুন।

বয়স্ক ব্যক্তি, সন্তানসম্ভবা ও শিশুদের অসুস্থ ব্যক্তিদের থেকে নিরাপত্তা দূরত্ব বজায় রাখুন।

আপনার গতিবিধি ঘরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখুন। কোন অবস্থাতেই কোন সামাজিক অথবা ধর্মীয় জমায়েত যেমন বিবাহ, শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ইত্যাদিতে যোগদান করবেন না।

হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তি যে জনস্বাস্থ্য বিধিগুলি মেনে চলবেন

সাবান যুক্ত জল অথবা ৭০% অ্যালকোহলযুক্ত স্যানিটাইজার দিয়ে বারবার হাত ধুয়ে নিন।

প্রতিদিনের ব্যবহার্য জিনিসপত্র যেমন কাপ, বাসন, বিছানার কাপড় কারোর সঙ্গে শেয়ার করবেন না।

সব সময় সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করুন। আপনার মাস্ক ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা অন্তর অন্তর পরিবর্তন করুন। সেটি ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিনে ফেলুন। একবার ব্যবহার করা মাস্ক দ্বিতীয়বার ব্যবহার করবেন না।

অসুস্থ ব্যক্তি এবং তার সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তিদের মাস্ক অবশ্যই ব্লিচিং পাউডার সলিউশন ৫% অথবা সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড সলিউশন ১% দিয়ে জীবাণুমুক্ত করার পর পুড়িয়ে ফেলুন অথবা গর্ত করে মাটি চাপা দিয়ে দিন। ব্যবহৃত মাস্ক অবশ্যই সংক্রমিত। এটা মেনে চলুন।

যদি জ্বর, কাশি অথবা শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করুন অথবা কল করুন ০১১২৩৯৭৮০৪৬।

হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা সদস্যদের জন্য নির্দেশাবলী

কেবলমাত্র বাড়ির কোন একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তি তার দেখাশোনা করবেন। হাত মেলানো বা সরাসরি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন। পোশাক পরিচ্ছদ পরিবর্তন করার সময় অথবা ঘর পরিষ্কার করার সময় অবশ্যই ডিসপোজেবল গ্লাভস পড়ুন। গ্লাভস খোলার পর অবশ্যই হাত ধুতে হবে। অন্য কোন ব্যক্তিকে ওই ঘরের মধ্যে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। যে ব্যক্তিকে ঘরে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হয়েছে সেই ব্যক্তির মধ্যে রোগের দেখা দিলে বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের আরও ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইন রাখতে হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত ল্যাব টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ আসছে।

হোম কোয়ারেন্টাইনের সময়সীমা

নিশ্চিত ভাবে সংক্রমিত অথবা সন্দেহভাজন ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার পর থেকে ১৪ দিন বা যতদিন না পর্যন্ত ওই নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত বা সন্দেহভাজন ব্যক্তির ল্যাব রিপোর্ট নেগেটিভ আসছে।

কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির রুম যেমন বিছানা টেবিল আসবাবপত্র ১% সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইডের সলিউশন দিয়ে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করুন। ঘরোয়া ব্রিচ সলিউশন অথবা ফিনাইল জাতীয় দ্রব্য দিয়ে টয়লেট পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করুন।

অসুস্থ ব্যক্তির পোশাক পরিচ্ছদ আলাদাভাবে যেকোনো সাধারণ ডিটারজেন্ট দিয়ে পরিষ্কার করুন এবং শুকিয়ে নিন।

পাশাপাশি বীরভূম জেলা প্রশাসন তথা পুলিশের তরফ থেকে করোনা সংক্রান্ত দুটি সহায়তা নম্বর খোলা হয়েছে ২৪ ঘন্টার জন্য। যে নম্বর দুটি হলো ৭৬০২৬৭৬৭৭৭ ও ৭৬০২৬৭৬৫০০। এই নম্বর দুটিতে ফোন অথবা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আপনি যেকোনো জিজ্ঞাসা, অভিযোগ তুলে ধরতে পারবেন।