করোনা মোকাবিলায় সিল হতে পারে একাধিক জায়গা, লকডাউন আর সিলের পার্থক্য কতটা

নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজ্যজুড়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। সম্ভবনা দেখা দিয়েছে করোনা ভাইরাসের তৃতীয় পর্যায়ে পৌঁছানোর। কয়েকদিন আগেই সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, বাংলায় ৭টি করোনা হটস্পট এলাকা চিহ্নিত করার কথা। সেই হটস্পট সংখ্যা আরও বেড়ে যাওয়ায় ঘটনা স্বীকার করে নিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের প্রায় ২০ টি জায়গাকে চিহ্নিত করা হয়েছে হটস্পট এলাকা হিসাবে। এই হটস্পটগুলির মধ্যে পড়তে পারে হাওড়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, কালিম্পং ও নদীয়া জেলার বিভিন্ন অংশ বলে সূত্রের খবর। আর এমনটা ঘোষণা হলে এই সমস্ত এলাকার মানুষদের বাধ্যতামূলকভাবে ঘরে থাকার নির্দেশ জারি করতে পারে প্রশাসন। নবান্নের তরফ থেকে একে সম্পূর্ণ লকডাউন হিসাবে ঘোষণা করতে পারে। যদিও শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘কোনও এলাকা সিল করা হয়নি। আর এটা কোনও হটস্পট নয়। এটা সরকারি মাইক্রো প্ল্যানিং।’

কিন্তু এই লকডাউন আর সিল করার মধ্যে পার্থক্য কতটা?

লকডাউন: দেশে লকডাউন জারি হয়েছে বেশ কয়েকদিন ধরেই। সুতরাং আমরা লকডাউন সম্পর্কে বেশ জ্ঞাত। লকডাউন চলাকালীন এলাকার বাসিন্দাদের বাড়িতেই থাকতে হয়। তবে ওষুধ অথবা নিত্যপ্রয়োজনয়ীয় জিনিস কেনার জন্য বাড়ি থেকে বেরতে পারেন বাসিন্দারা। খোলা থাকে ওষুধের দোকান ও মুদির দোকানের মত কিছু জরুরি পরিষেবা। তবে কেউ অপ্রয়োজনে ঘুরে বাড়ির বাইরে বেড়াতে যেতে পারবেন না। এমনকি জরুরি দরকার ছাড়া জমায়েত করতে পারে না। নিয়ম ভাঙলেই সেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আইন রয়েছে।

সিল : সিল অনেকটা লকডাউনের মত হলেও লকডাউনের থেকে অনেক কড়াকড়ি। এক্ষেত্রে আরও কিছু বাড়তি বাধ্যবাধকতা প্রয়োগ করা হয়। যেমন-

১. চিহ্নিত এলাকার বাসিন্দারা বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন না। সকলকে ঘরের মধ্যে থাকতে হবে। খুব প্রয়োজনেও থাকতে হবে নিজের এলাকায়।

২. এলাকার বাইরের মানুষ হটস্পট এলাকায় ঢুকতে পারবেন না। খুব দরকার পড়লে পুলিশকে জানাতে হবে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পুলিশ সিদ্ধান্ত নেবেন। নিজের এলাকার মধ্যেই করতে হবে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের কেনাকাটা। বিক্রেতারা বাইরে থেকে পণ্য আনতে পারবেন না। প্রয়োজনে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

৩. নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করবে প্রশাসন। তাও করা হবে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে।
এলাকায় প্রয়োজনীয় সামগ্ৰীর অভাব হলে জানাতে হবে পুলিশকে। সিদ্ধান্ত স্থানীয় পুলিশ নেবে না। পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

৪. হটস্পট এলাকায় সবজি, মাছ ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রি করতে পারবেন শুধু এলাকার বিক্রেতারাই। কেউ বাইরে থেকে প্রবেশ করতে পারবেন না।

৫. দরকার পড়লে সম্পূর্ণ নিরাপত্তার মধ্যে সরকারি কর্মীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্ৰী পৌঁছে দেবেন বা বিক্রি করবেন। হটস্পট এলাকায় ঢোকা বা বের হওয়ার সময় ওই কর্মীদের স্যানিটাইজ করা হবে।

৬. স্থানীয় বাজার সারাদিন খোলা থাকবে না। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কেনাকাটা করতে হবে।

৭. চিকিৎসার প্রয়োজন হলে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। প্রয়োজনে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ও আসার ব্যবস্থা করবে পুলিশ।

৮. ত্রিস্তর নিরাপত্তার মাধ্যমে এই ব্যবস্থা জারি থাকবে। দিনরাতে জারি থাকবে প্রশাসনের কড়া নজরদারি ব্যবস্থা।