বিবাহ-শ্রাদ্ধানুষ্ঠান-রেস্টুরেন্ট-সেলুন, চতুর্থ দফার লকডাউনে রাজ্য সরকারের ফাইনাল গাইডলাইন

নিজস্ব প্রতিবেদন : বাংলায় ৩১শে মে পর্যন্ত বাড়ছে লকডাউন। লকডাউনের এই নতুন পর্বে আরও পরিকল্পিতভাবে সংক্রমিত অঞ্চলগুলিকে ভাগ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন বুথ ও ওয়ার্ড ভিত্তিক জোন তৈরি করা হবে। রেড বা লাল জোনকে তিনটে জোনে ভাগ করে দেওয়া হবে। তিনটি জোন যথাক্রমে A অর্থাৎ ক্ষতিগ্ৰস্ত জোন, B অর্থাৎ বাফার জোন এবং C ক্লিন জোন। এর মধ্যে B ও C জোনে ২১ তারিখে সেলুন সহ খুলে যাবে সব দোকান।

কিন্তু আগের মতোই বন্ধ থাকবে যেসমস্ত প্রতিষ্ঠান সেগুলি হল-

১. স্কুল, কলেজ, টেকনিক্যাল প্রতিষ্ঠান, ICDS জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত।

২. সিনেমা হল, শপিংমল, জিমনেসিয়াম, সুইমিং পুল, বিনোদন পার্ক, থিয়েটার, বার, অডিটোরিয়াম, অ্যাসেম্বলি হল এবং স্পাগুলি।

৪. বন্ধ থাকবে সমস্ত সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক জমায়েত।

যেসব সতর্কতা মেনে চলতে হবে

১. মাস্ক পরা বাধ্যতা মূলক।

২. কঠোর ভাবে মেনে চলতে হবে। পারস্পরিক দুই মিটার দূরত্বের নিয়ম।

৩. সমস্ত জনসাধারণের ব্যাবহৃত জায়গা, রাস্তা, আবাসন চত্বর, জনবসতি এলাকা কর্মক্ষেত্রগুলিকে নিয়মিত জীবানুনাশক দিয়ে স্প্রে করতে হবে।

৪. ৬৫ বছরের উর্ধ্বে, গর্ভবতী মহিলা, নানান রোগে সংক্রামিত ব্যক্তি এবং ১০ বছরের নীচে বাচ্চাদের বাড়ির মধ্যে থাকতে হবে, যদি না প্রয়োজনীয় কোন দরকার বা স্বাস্থ্যজনক কারণ না থাকে।

৫. জনসাধারণের এলাকায় থুতু ফেলা নিষিদ্ধ।

৬. সন্ধ্যা ৭ থেকে সকাল ৭ পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। তবে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিশেষ কৃষিজাত দ্রব্য সরবরাহ করা যাবে।

৭. প্রকাশ্যে মদ, পান, গুটখা ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করা যাবে না।

৮. থার্মাল স্ক্রিনিং, হাত ধোয়া ও জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে জনসাধারণের ব্যবহৃত এলাকায় ঢোকার ও বাহির হবার সময়।

৯. বিবাহ অনুষ্ঠানে ১৫ জনের বেশি থাকা যাবে না।

১০. মৃত ব্যক্তির কাজকর্ম করার জন্য ১০, মৃত ব্যক্তির কাজকর্ম করার জন্যে ১৫ জনের বেশি ব্যক্তি থাকা যাবে না‌।

১১. বিভিন্ন কর্মে যুক্ত ব্যক্তিদের আলাদা করে আর সরকার পারমিশন লাগবে না।

জোন A তে কী করা যাবে না

১. কোন সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাজকর্ম করা যাবে না।

২. এখানে সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করা হবে।সিসিটিভি ড্রোন, মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে এই এলাকায় কঠোরভাবে লকডাউন পালন করা হচ্ছে কিনা দেখার জন্য।

৩. স্থানীয় প্রশাসনিক সংস্থার দ্বারা এলাকায় নিয়মিত জীবানুনাশের ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. ফিভার ম্যাপিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. প্রয়োজনীয় দ্রব্যের হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা রাখতে হবে। বিশেষ করে ওষুধ ও স্বাস্থ্য পরিষেবার।

৬. কোভিড মোকাবিলায় যারা সামনে থেকে কাজ করছেন তাদের নিরাপত্তার জন্য পিপিই, মাস্কের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

B বা বাফার জোনের ক্লিন এলাকাগুলিতে সবরকম কাজকর্ম চলবে।

C জোনে কি কি করা যাবে

১. সকল রকম শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে চা বাগিচা, জুট মিল, ইঁটের ভাটায় ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে প্রতিদিন কাজ করা যাবে।

২. সকল সরকারি চিহ্নিত কাজকর্মে কঠোর ভাবে নিয়ম মেনে চলতে হবে।

৩. ই-কমার্স চালু করা যাবে। ক্যুরিয়ার সার্ভিসে খুব প্রয়োজনীয় ও খুব প্রয়োজনীয় নয় এমন জিনিষ সরবরাহ করা যাবে।

৪. স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু রাখতে হবে।

৫. বাজারে, দোকানে জিনিস কেনাবেচার সময় ৫ জনের বেশি থাকা যাবে না। দোকানদারদের সমস্ত রকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে হবে।

৬. সেলুন ও পার্লারগুলিকে সরকারি গাইডলাইন মেনে চলতে হবে।

৭. একই নিয়ম মানতে হবে হোটেলগুলিকে।

৮. গৃহ পরিষেবার ক্ষেত্রগুলি চালু রাখা যাবে।

৯. বাড়ি বা আবাসন তৈরির কাজে নিয়ম মেনে ৫০ শতাংশ শ্রমিক রাখা যাবে।

১০. কৃষি, কৃষি ব্যবসা, ফুল চাষ সহ আনুষাঙ্গিক সকল চাষ করা যাবে।

১১. রেস্টুরেন্ট খোলা যাবে শুধু মাত্র হোম ডেলিভারি করার ক্ষেত্রে।

১২. চালু থাকবে পিডাব্লুডি, এরিগেশন, পিএইচ পরিষেবাগুলি।

১৩. নির্মীয়মান শিল্পের সবরকম পরিষেবা।

১৪. আন্তরাজ্য বাস, ট্যাক্সি ও ক্যাবের পরিষেবার ক্ষেত্রে ২০ জন যাত্রীর বেশি নেওয়া যাবে না। যেখানে ৫০ শতাংশ সিটের ব্যবস্থা আছে। ট্যাক্সি ও ক্যাবে ২ জন যাত্রীর বেশি নেওয়া যাবে না।

১৫. আউটডোর ফ্লিম, টেলিভিশন শ্যুটিং করা যাবে।

১৬. খোলা থাকবে পেট্রোল, ডিজেল পাম্প, গাড়ি মেরামতির দোকান ও গ্যারেজ।

১৭. কার্গো ও মালের গাড়ি সকল রকম জিনিস নিয়ে চলাচল করতে পারবে।

১৮. কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের এবার থেকে বাড়িতে কাজ করতে হবে।

১৯. বেসরকারি কর্ম ক্ষেত্রেও যেখানে ৫০ শতাংশ কর্মী সেখানে বাড়ি থেকে কাজ করতে উৎসাহিত করতে হবে।

২০. নানাধরনের খেলাধুলায় সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে।

২১. আন্তঃরাজ্য বাস পরিষেবার ক্ষেত্রে অনলাইন প্রবেশ ও বাইরে যাবার পাসের ব্যবস্থা থাকবে।