Kharagpur IIT: মা অসুস্থ, বাবা ছেড়ে চলে গিয়েছেন, টোটো চালিয়ে দাদু নাতিকে পাঠালেন খড়গপুর আইআইটি

Prosun Kanti Das

Published on:

Grandfather sends his grandson to Kharagpur IIT: ভালো এবং বড় প্রতিষ্ঠানের পড়াশোনা করার ইচ্ছা কম-বেশি সকলেরই থাকে। কিন্তু অনেকেরই মেধা থাকা সত্ত্বেও অর্থ কষ্টের কারণে সেই জায়গায় সুযোগ পায় না। তবে অর্থ প্রতিকূলতা কোনো কিছুর বাধা হতে পারে না। যা প্রমাণ করে দিলেন মালদহের রতনবাবু। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে কষ্ট করে টোটো চালিয়ে নাতিকে পাঠালেন খড়গপুর আইআইটিতে (Kharagpur IIT)। কিভাবে সম্ভব হলো? যা শুনলে চোখে জল ধরে রাখতে পারবেন না আপনিও। আজকের প্রতিবেদনে সেই গল্পই তুলে ধরা হয়েছে।

মালদহর ছেলে অভিজিৎ রায়। ইংলিশবাজার শহরের গ্রীনপার্ক এলাকায় বাড়ি তার। কিন্তু থাকেন মামার বাড়িতে। বাবা থেকেও নেই। কারণ দীর্ঘদিন ধরেই তিনি নিখোঁজ। এদিকে মা অসুস্থ, বিছানায় শয্যাশায়ী। ফলেই মামার বাড়িতে মামা দাদুর কাছেই থাকেন মা-ছেলে। সেখান থেকেই মামা দাদু কষ্ট করে পড়াশোনা করে বড় করে তোলেন নাতিকে। আর্থিক কষ্ট থাকলেও তা কখনোই নাতির পড়াশোনায় প্রভাব ফেলতে দেননি মামাদাদু। টোটো চালিয়ে মা-ছেলের সংসার টেনে নাতির পড়াশোনার খরচ জুগিয়ে গেছেন দাদু রতনবাবু। আজ সেই নাতি সুযোগ পেয়েছে খড়গপুর আইআইটিতে (Kharagpur IIT) পড়ার।

অভিজিৎ রায় মালদহ টাউন হাই স্কুলের ছাত্র। এবারের জেইই অ্যাডভান্স পরীক্ষায় বসেছিলেন অভিজিৎ। আর সেখান থেকেই র‍্যাঙ্ক করে খড়গপুর আইআইটিতে (Kharagpur IIT) ম্যানুফ্যাকচারিং নিয়ে বিটেক পড়ার সুযোগ এসেছে তার। যা শুনে খুশি তার পরিবারসহ প্রতিবেশীরা। নাতির এই সুখবরে খুশিতে আত্মহারা দাদু রতনবাবু। তার উক্তি, তিনি টুকটাক মেসে কয়লা রপ্তানি করেন। পাশাপাশি শহরের বাঁধ রোডে টোটো চালায়। কষ্ট করে বড় করেন তার দাদুভাইকে। কারণ দাদু ভাইয়ের মা শয্যশায়ী। তাই তাকে মা-ছেলেকে দেখতে হয়। ফলে দাদু ভাইয়ের এই সাফল্যে তিনি অত্যন্ত গর্বিত। তিনি চান তার দাদুভাই আরো বড় হোক এবং মানুষ হোক।

আরও পড়ুন 👉 Nandalal Saikiran UPSC: বাবা নেই, মা বাঁধেন বিড়ি! সেই ঘরের ছেলেরই UPSC-র সিভিল সার্ভিসে র‍্যাঙ্ক ২৭

কিন্তু অপরদিকে খুশির মহলে চিন্তায় নাতি অভিজিৎ রায়। এই বিষয়ে তার উক্তি, তিনি আইআইটিতে (Kharagpur IIT) পড়ার সুযোগ পেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু সেই উচ্চশিক্ষার খরচ অনেক। কিভাবে চালাবেন। তাই এই চিন্তা প্রকাশ করে তিনি সকলকে তার পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে ইতিমধ্যেই এই খবর শুনে অভিজিতের সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন স্থানীয় এলাকার চেয়ারম্যান, আশ্বাস দিয়েছেন পাশে থাকার। অপরদিকে অভিজিতের সাথে দেখা করতে যান সেখানকার প্রাক্তন বিধায়ক তথা সংসদ বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ।

অভিজিতের এই প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। ফুল মিষ্টি এবং লাগেজ উপহার নিয়ে পৌঁছে যান অভিজিতের বাড়িতে। তাকে আশীর্বাদ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি অভিজিৎকে তার ফোন নাম্বারও দিয়ে যান। যাতে কোনো দরকার হলে অভিজিৎ তাকে ফোন করে নেন। যা অভিজিতের মুখ থেকেও জানা গিয়েছে। এর পাশাপাশি অভিজিৎ এও জানায় যে, আগামী বুধবার এলাকার চেয়ারম্যানও তাকে ডাক করিয়েছেন। তিনিও পাশে দাঁড়াবেন বলেছেন। ফলে এইভাবে যদি সকলে তার পাশে এসে দাঁড়ায় তাহলে নিশ্চিন্তে অভিজিৎ তার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে। এটাই অভিজিৎ ও তার পরিবারের প্রার্থনা বা অনুরোধ সকলের কাছে।