দিনে হাত খরচ ১০০০০ টাকা, রাতে হৈমন্তীর ফ্ল্যাটে যা চলত, সহ্য হতো না পড়শীদের

বর্তমানে সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে একটাই নাম হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায় (Haimanti Ganguly)। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় উঠে এসেছে হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায় (Haimanti Ganguly) এর নাম। গোপাল দলপতির সঙ্গে যোগসূত্র ধরেই হৈমন্তীর নাম সামনে এসেছে। আর হৈমন্তীর নাম প্রকাশ্যে নিয়ে আসার পিছনে মূল কারিগর হল কুন্তল ঘোষ। হৈমন্তীর নাম উঠে আসার পরই টলিউডে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কারণ হৈমন্তী টিনসেল টাউনের উঠতি মডেল-অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন। শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় অভিনীত অচেনা উত্তম সিনেমায় ছোট্ট এক চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন হৈমন্তী। যদিও অভিনেত্রীর ওপর খুব একটা প্রসন্ন ছিলেন না খোদ পরিচালক।

কুন্তলের মুখে গোপাল দলপতির স্ত্রী হৈমন্তীর নাম প্রকাশ্যে আসবার পর থেকে তাঁর খোঁজ সবমহলে। শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমের সামনে হৈমন্তীর মায়ের দাবি, কোথায় হৈমন্তী জানি না। ওরা মরে গিয়েছে। মেয়ে জামাই সম্পর্কে বিশেষ কিছু বলতে চান না বাড়ির লোকজন। কিন্তু এখনও হৈমন্তীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। কোথায় তিনি? জবাব নেই পরিবারের কাছে। নাকি পুরোটাই গোপন রাখবার চেষ্টায় তাঁরা? দানা বাঁধছে রহস্য।

ওড়ার বাঁকসারার মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে হৈমন্তী। বাবা রেলে চাকরি করতেন। ছোট থেকেই গ্ল্যামার দুনিয়ার প্রতি টান ছিল হৈমন্তী (Haimanti Ganguly) এর। ভালোবেসে গোপাল দলপতিকে বিয়ে করেন তিনি। তবে তাঁর পুরুষসঙ্গী নাকি ছিল অগুণতি। বর্তমানে বেহালা মুচিপাড়া মোড় ৩৫৯ রাজা রামমোহন রায় রোডে দোতলার ফ্ল্যাটে থাকতেন হৈমন্তী ও গোপাল দলপতি। উদ্দাম জীবনযাপন ছিল এই দম্পতির, অভিযোগ প্রতিবেশিদের। রাত বাড়লেই তাদের ফ্ল্যাটে বসত ফূর্তির ফোয়ারা। দামি দামি গাড়ি এসে ভিড় করত তাদের ফ্ল্যাটের নিচে।

হৈমন্তী (Haimanti Ganguly) এর ফ্ল্যাটের পাশেই থাকেন অশোক সাঁধুখা। তিনি বিরক্তির সুরে জানিয়েছেন, হৈমন্তীর জীবনযাত্রা তাদের অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। রাতভর ফ্ল্যাটে বহিরাগতদের নিয়ে পার্টি করত। মদের বোতল খাবারের প্যাকেট জানালা দিয়ে ছুড়ে তারা অন্যের বাড়ির ফাঁকা জমিতে ফেলত। এ নিয়ে একাধিকবার তাকে সতর্ক করা হলেও তারা কথা শুনতো না। তাই শুরু থেকেই হৈমন্তীর আচরণ পছন্দ হয়নি প্রতিবেশিদের।

বেশিরভাগ সময় স্বল্প পোশাকেই দেখা মিলত তাঁর। এক প্রতিবেশি জানান, তিনি কী করতেন, কোথায় যেতেন, কেউ কিছুই জানতেন না। রাতের অন্ধকারে অনেক দামি গাড়ি আসত ফ্ল্যাটে। স্বল্প পোশাক পরে গাড়িতে উঠে পড়তেন হৈমন্তী। ইডি সূত্রে খবর, প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা হাতখরচ ছিল হৈমন্তীর। দু’টি দামি গাড়ি, ব্যয়বহুল পার্লারে সাজগোজ, পাঁচতারা হোটেলে পার্টি- হিসাব না রেখেই টাকা ওড়াতেন হৈমন্তী। মডেল বা অভিনেত্রী হিসাবে সুবিধা করতে পারেন নি হৈমন্তী। তাহলে তাঁর বিলাসবহুল জীবনের নেপথ্যের টাকার জোগান আসত কোথা থেকে?

তাহলে কি নিয়োগ দুর্নীতির টাকাতেই হৈমন্তী (Haimanti Ganguly) এর শখ-আহ্লাদ মিটত? গোপাল দলপতি অবশ্য বলেছেন, এখন নাকি হৈমন্তীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছে তাঁর। ডিভোর্সের পেপার হাতে আসেনি ঠিকই, তবে তাঁরা সেপারেটেড। এই দুর্নীতিতে হৈমন্তীর কোনও যোগ নেই, এমনটাও বলেছেন গোলাপ দলপতি।