শারীরিক ও আর্থিক প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ দৃষ্টিহীন এসকান

Shyamali Das

Published on:

Advertisements

প্রতিম মস্করা : চলতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি ঠিকই। পাশাপাশি ১০০% পড়ুয়ারাই পাশ করেছে। ভুরি ভুরি নম্বর এসেছে পরীক্ষার্থীদের ঝুলিতে। তবে এরই মাঝে বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় সফল হয়ে সকলের নজর কেড়েছে। এই সকল পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অন্যতম বীরভূমের নলহাটি ২ নং ব্লকের জেষ্ঠা গ্রামের জেষ্ঠা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসকান।

Advertisements

Advertisements

দিনমজুর ঘরের এই ছেলে চার বছর বয়স থেকেই দৃষ্টিহীন। বাবার রোজগার বলতে দিনমজুরি। নিজেদের কোনরকম জমিজমা বা আর্থিকভাবে স্বচ্ছলতা আনবে এমন কোনো উপায় নেই। দিন আনা দিন খাওয়া এই পরিবারের এসকান শারীরিক এবং আর্থিক প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়েই মাধ্যমিক উত্তীর্ণ।

Advertisements

এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানান মিম ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ পরীক্ষা না দিয়েই এই সকল পরীক্ষার্থীরা পাশ করেছে। তবে মনে রাখতে হবে পরীক্ষার মূল্যায়ন করা হয়েছে নবম শ্রেণী এবং দশম শ্রেণীর অন্তর্বর্তী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতেই। সেই জায়গায় এসকান উত্তীর্ণ হয়েছে অর্থাৎ সে নবম শ্রেণী এবং অন্যান্য পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ হয়েছে বলেই মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ। মাধ্যমিকে হয়তো তাকে পরীক্ষায় বসতেই হয়নি কিন্তু এর আগের পরীক্ষাগুলিতে তাকে পরীক্ষায় বসতে হয়েছে এবং সমস্ত রকম প্রতিকূলতাকে জয় করে পাশ করতে হয়েছে।

জানা গিয়েছে, ছোটবেলায় নিজের দৃষ্টিশক্তি হারানোর পরেও পড়ার প্রতি অদম্য ইচ্ছে ছিল এসকানের। আর সেই অদম্য ইচ্ছে থেকেই প্রাথমিকের গণ্ডি পার হওয়ার পর সে জেষ্ঠা উচ্চ বিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি হয়। সে প্রতিদিন স্কুলে যেত। বাবা অথবা পরিবারের সদস্যরা তাকে স্কুলে দিয়ে আসতো এবং নিয়ে আসতো। কোন কোন দিন স্কুলের অন্যান্য সহপাঠীরা তাকে বাড়ি দিয়ে যেত।

সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন হওয়ায় পরীক্ষার ক্ষেত্রে তাকে অন্য লেখকের সাহায্য নিতে হতো। অর্থাৎ পঞ্চম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণী এবং দশম শ্রেণীর অন্তর্বর্তী পরীক্ষায় তাকে অন্য লেখকের সাহায্য নিয়ে এই পরীক্ষায় পাশ করতে হয়েছে। সাময়িকভাবে হয়তো এই বছর করোনার কারণে মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় সে পরীক্ষায় বসে নি। সুতরাং প্রথম থেকে এখনো পর্যন্ত তাঁর এই লড়াই সমাজের কাছে আলাদা এক উদাহরণ।

Advertisements