নিজস্ব প্রতিবেদন : সামনেই দুর্গোৎসব। আর বছরের মধ্যে সব থেকে বড় এই উৎসবে বেরোনোর জন্য সকলেই প্রায় এক পায়ে খাড়া। কিন্তু এই উৎসবই সকলের জন্য বিপদ সংকেত হয়ে উঠেছে। অন্তত অতীত ইতিহাস এমনটাই শিক্ষা দিচ্ছে।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সংক্রমণের হার যখন গোটা দেশে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছিল, তখন সমগ্র দেশের মধ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল কেরল। করোনা সংক্রমণের হার ওই রাজ্যে ক্রমশ কমে আসছিল। কিন্তু এর মধ্যেই কেরলে ওনাম উৎসব চলে আসে। আর এই উৎসবে যোগ দেওয়ার পর কেরলে দৈনিক করোনা সংক্রমণ আগের থেকে বহুগুণ বেড়ে যায়। এখন কেরলে দৈনিক করোনা সংক্রামিত প্রায় ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই মুহূর্তে কেরালায় করোনার দৈনিক সংক্রমণ মহারাষ্ট্রকেও ছাপিয়ে গেছে।
এই পরিস্থিতিতে দুর্গাপুজোতে প্যান্ডেল পরিদর্শনও যে আমাদের জন্য বিপদজনক তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। তাই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু বিশেষজ্ঞরাই বারংবার সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে নানা সামাজিক মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করার চেষ্টা করছেন। মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে যে দুর্গোৎসবটা সকলে যেন বাড়িতে থেকেই পরিবারের সাথে পালন করেন।
রবিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীও বলেন, করোনা আবহের মধ্যে যদি আমরা নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রণ না করি তাহলে পরিস্থিতি বিপদজনক দিকে মোড় নেবে।
তাঁর কথায়, “উৎসবের সময় যদি করোনা স্বাস্থ্যবিধি ঠিকমত না মানা হয়, তাহলে করোনার সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। আর এরকমটা হলে আমাদের সকলকেই এর ফল ভুগতে হবে।”
হর্ষবর্ধন মহাশয় এদিন বলেন, “কোন ধর্মের কোনো নেতাই বলবেন না যে ধর্মীয় উৎসবের সময় প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে উৎসবে শামিল হন। কোন দেবতায় বলবেন না যে পুজোর জন্য পুজোর প্যান্ডেলে যেতে হবে।”
অন্তরের মধ্যে থাকা ভক্তি ভগবানকে নিবেদনই হলো পুজো, তাই ঘরের মধ্যে থেকেও ভগবানের পুজো করা যায়। এপ্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, “যে কোন জায়গা থেকেই দেবতাকে স্মরণ করা যায়। তার জন্য প্যান্ডেলে যেতে হবে না। আমার মনে হয় নিজের পরিবারের সঙ্গে এইবার পুজোটা কাটান।”
কিন্তু যারা একবারের জন্য হলেও প্যান্ডেলে যেতে ইচ্ছুক তাদেরকে অবশ্যই কঠিন ভাবে করোনা বিধি মানতে হবে। দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি মানুষকে সাবধান করে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “যদি কেউ প্যান্ডেলে যেতে একান্তই ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে দুই গজের দূরত্ব বজায় রাখুন আর সকলেই মাস্ক পড়ুন। দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে মানুষকে সাবধান করার জন্য এসব বলছি।এটা আমার কর্তব্য।”
করোনা আবহে যেভাবে দিনকে দিন সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে চলেছে সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কথা মেনে ঘরে বসে দুর্গোৎসব উদযাপন করাটাই সকলের জন্য শ্রেয় হবে নয়ত কেরালার চিত্র গোটা দেশের মধ্যেই প্রতিফলিত হতে শুরু করবে।