‘লকডাউন’ থেকে যে যে ধাপে এবং যেভাবে ‘Unlock’ হবে দেশ

প্রদীপ্ত দত্ত : পঞ্চম দফা লকডাউনে ধাপে ধাপে সবকিছু খোলা, এটাই সরকারের লক্ষ্য। যে কারণে এই লকডাউনের নামই দেওয়া হয়েছে ‘Phased Re-Opening’। আর Part হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে ‘Unlock-1’। দীর্ঘ লকডাউন পর্ব চলার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধাপে ধাপে সব ধরনের পরিষেবা খোলার পথে কেন্দ্রীয় সরকার। ৩০ শে মে’র এই সরকারি ঘোষণায় জানানো হয়েছে ৮ই জুন থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের গৃহ মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের নির্দেশে কন্টেনমেন্ট এলাকাগুলি ছাড়া বাকি সব জায়গায় এই গাইডলাইনগুলি ধাপে ধাপে কার্যকর হবে।

১) প্রথম ধাপে খোলা হবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, হোটেল, রেষ্টুরেন্ট, শপিংমল ও জনসাধারণের সেবামূলক পরিষেবা। তবে এইসব ক্ষেত্রে করোনা ভাইরাস যাতে ছড়িয়ে না পারে ও কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব রক্ষার নিয়ম মানা হয় তা দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

২) দ্বিতীয় ধাপে খোলা যাবে স্কুল, কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা সম্বন্ধীয় ট্রেনিং ও কোচিং সেন্টারগুলি। তবে এইসব ক্ষেত্রে পরামর্শ নিতে হবে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের।

বলা হয়েছে, প্রশাসনিক আধিকারিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

৩) তৃতীয় ধাপে লকডাউন খোলার পর পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে
আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা খোলার।
এছাড়াও এর মধ্যে আছে মেট্রো রেল, সিনেমা হল, জিমনেসিয়াম, সুইমিং পুল, এন্টারটেইনমেন্ট পার্ক, থিয়েটার, বার, অডিটোরিয়াম, অ্যাসেম্বলি হল।

৪) দেশের কোন অঞ্চলে কোন ব্যক্তি এককভাবে রাত ৯টা থেকে সকাল ৫ টা পর্যন্ত যাতায়াত করতে পারবে না। ছাড় দেওয়া হবে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় যাত্রার। আইন ভঙ্গ করলে স্থানীয় প্রশাসন কঠোরভাবে ব্যবস্থা নিতে পারবে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী জেলা প্রশাসন কন্টেনমেন্ট জুনের সীমানা কন্টেনমেন্ট জোনের ক্ষেত্রে লকডাউন জারি থাকবে আগের মতোই ৩০ শে জুন পর্যন্ত।

১) কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী জেলা প্রশাসন কন্টেনমেন্ট জোনর সীমানা নির্দেশ করবে।

২) কনটেনমেন্ট জোনে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় কার্যাবলীকে ছাড় দেওয়া হবে। যেমন সকল রকম স্বাস্থ্য পরিষেবা ও প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহের। তবে এই এলাকাগুলিতে প্রবেশ ও বাহির হওয়া সময় কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ বিধি মানা হবে।

৩) এছাড়া এলাকাগুলিতে ব্যবস্থা থাকবে থার্মাল স্ক্রীনিং করার। হবে ঘরে ঘরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা। থাকবে অন্যান্য চিকিৎসা সংক্রান্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা।

৪) কনটেনমেন্ট জোন ও বাইরের এলাকাগুলির মাঝখানে যে মধ্যবর্তী সংযোগ বা বাফার জোন থাকবে সেখানেও কঠোরভাবে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।

যেসব ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে

১) আন্তঃরাজ্যগুলিতে এবার থেকে ব্যক্তি ও প্রয়োজনীয় দ্রব্যের যাতায়াতে ও সরবরাহ কোন বাধা-নিষেধ থাকবে না তবে প্রয়োজন অনুযায়ী কাগজপত্র দেখাতে হবে।

২) প্যাসেঞ্জার ট্রেন, শ্রমিক স্পেশাল, আন্তঃরাজ্য বিমান পরিষেবা, বিদেশ থেকে ভারতীয়দের এদেশে আনা ও বিদেশী নাগরিকদের ফেরানোর ক্ষেত্রে লকডাউনের বাধা নিষেধ কার্যকর হবে না। ভারতীয় জাহাজগুলি দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ ও বাহির হতে পারবে।

৩) স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রগুলিতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে।

৪) রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি বাধা দিতে পারবেনা প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি অনুযায়ী সীমান্ত বানিজ্য ও জাহাজের মালের আদান প্রদান।

৬৫ বছরের উপর বয়স্ক ব্যক্তি, অসুস্থ ব্যক্তি, গর্ভবতী মহিলা ও ১০ বছরের নিচে বাচ্চাদের খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে।

নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আরোগ্য সেতু অ্যাপ ব্যবহারে। বলা হয়েছে কোন রাজ্য সরকার উপরে উল্লেখিত নির্দেশাবলী বদলাতে পারবে না। নির্দেশাবলী পালন করার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সরাসরি।