নিজস্ব প্রতিবেদন : টানা কয়েকদিন ধরে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় বৃষ্টিতে নাজেহাল অবস্থা। পুজোর ঠিক আগে এইভাবে একের পর এক নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণাবর্ত্যের কারণে বৃষ্টিতে পরিস্থিতি রীতিমতো প্রতিকূল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর পাশাপাশি পড়শী রাজ্য ঝাড়খন্ডে প্রবল বৃষ্টির কারণে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় তৈরি হয়েছে বন্যা (Flood Situation) পরিস্থিতি। মূলত রাজ্যের ৭ জেলায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবং তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে রাজ্যের।
দক্ষিণবঙ্গের ৭ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হতেই তড়িঘড়ি নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। গত সোমবার এই ৭ জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং পুলিশ কমিশনারদের নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই তড়িঘড়ি এই বৈঠক সেরে নেওয়া হয় এবং পরিস্থিতি যাতে ভয়ংকর না হয় তার জন্য এখন থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণের কড়া নির্দেশ দেয় নবান্ন।
বন্যা নিয়ে উদ্বেগ বাড়তেই নবান্নের তরফ থেকে পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য এখন থেকেই নিজের নিজের জেলার অপেক্ষাকৃত নিচু এবং বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করে সেখানে মাইকিংয়ের বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তড়িঘড়ি যেন ব্যবস্থা গ্রহণ হয় তার জন্য এক্ষুনি পদক্ষেপ নিতে হবে বলে জানানো হয়েছে। এমনকি ওই সকল এলাকার বাসিন্দাদের যদি প্রয়োজন পড়ে তাহলে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি হাওয়া অফিসের তরফ থেকে যে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে সেই রিপোর্ট অনুযায়ী জানানো হয়েছে, এখনই রাজ্যে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে না। আগামী বুধবার পর্যন্ত রাজ্যের সব জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টির পাশাপাশি ঝড়ো হাওয়া বইবে। এমনকি কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনার কথাও জানানো হয়েছে। পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে যে সকল জায়গায় নদী বাঁধ দুর্বল রয়েছে সেই সকল জায়গার উপর নজর দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের যে ৭ জেলায় এমন বন্যার ভ্রুকুটি রাজ্য প্রশাসনকে নাড়িয়ে দিয়েছে সেই সকল জেলাগুলি হল পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া এবং হুগলি। এই সকল জেলায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আরও উদ্বেগের কারণ হলো ঝাড়খন্ড। কারণ ঝাড়খন্ডে আরও বৃষ্টি হলে সেই জল গড়িয়ে আসবে পশ্চিমের জেলাগুলিতে। নবান্নের আশঙ্কা, তখন আর বন্যা এড়ানোর মতো পরিস্থিতি থাকবে না।