শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জী : ভাগ্যের আশায় বসে থাকা নয়, কেবলমাত্র পরিশ্রমই পারে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিতে। পরিশ্রম আর তার সাথে অপরাজেয় মানসিকতা থাকলে বাজিমাত করা যায় সর্বত্র। আর তাই কাজের দ্বারা প্রমাণ করেছেন আমেরিকার নিক মুকুটা। রাস্তায় রাস্তায় একসময় রাত কাটালেও বর্তমানে তিনি যে কোটি কোটি টাকার মালিক!
শুনতে অবাক লাগছে! ভাবছেন, কোনো লটারির মাধ্যমে নাকি। কিন্তু তা নয় একেবারেই। শুধুমাত্র নিজের পরিশ্রমের দ্বারা নিজের জীবনের এই মোড় পরিবর্তন করেছেন তিনি। নিক যখন রোমানিয়া থেকে আমেরিকাতে এসেছিলেন তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২১ বছর। আর সাথে ছিল ঠাকুমার দেওয়া মাত্র ৫০০ ডলার ভারতীয় মুদ্রায় করলে যার মূল্য হয় ৩৭ হাজার টাকা। এই অর্থ নিয়ে নিক প্রথমে ধারণা করেছিলেন ওই অর্থে বেশ কিছুদিন চলে যাবে আর তার মাঝে সে কাজও পেয়ে যাবে। কিন্তু আদতে সেটা মোটেই ঘটেনি। তার ধারণা বদলালো তারপরেই।
ট্যাক্সিতে উঠে ১০০ ডলার ভাড়া মেটানোর পর নিক উপলব্ধি করলেন যে এত সামান্য টাকায় এখানে মোটেই কাটানো সম্ভব নয়। আর তারপরেই শুরু হয় নিকের লড়াই। মাত্র ৪০০ ডলার অর্থাৎ ২৯ হাজার টাকা নিয়ে তার জীবন সংগ্রাম শুরু হয়েছিল। সারাদিন রাস্তায় রাস্তায় হন্যে হয়ে কাজ খোঁজা, এর পর রাত্রি কাটানো কোনো রাস্তার ধারে বা পাবলিক বেঞ্চে শুয়ে।
এইভাবে দিন কাটতে কাটতে অবশেষে একটি পার্কিং লটে কাজ জুটিয়ে ফেলেছিলেন নিক। তা দিয়ে কোনরকমে আধপেটা হয়ে খেয়ে আরও কঠিন লড়াই শুরু। এই লড়াইয়ের মাঝেই ভালো ইংরেজি শিখে নিয়েছিলেন নিক। আর তারপরেই তিনি রিয়েল এস্টেটের লাইসেন্স জোগাড় করে ফেলেছিলেন। কিন্তু সেখানেও হতাশ হয়ে যান নিক। রোজগারের খুব একটা আশা সেখানেও না দেখতে পেয়ে ২০১৩ সালে অন্যদিকে মন দিলেন নিক।
পরিচিত কয়েকজনকে সাথে নিয়ে অনলাইনে শুরু করলেন ইলেকট্রিক জিনিস বিক্রির কাজ। আর এতেই তার খুলে যায় ভাগ্য। নিজের পরিশ্রমের জোরে এতদিন তিনি সাফল্যের মুখ দেখেন। প্রথম মাসেই বাজিমাত? ৩ লক্ষ টাকা আয় করে ফেলেন।
তারপর আর ফিরে দেখতে হয়নি নিককে। আমেরিকার মতো জায়গায় তাঁর একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে সেইসঙ্গে রয়েছে তিনটি বিলাসবহুল গাড়ি। বর্তমানে তিনি প্রায় ৩০০ কোটির মালিক। জীবনের চরম ব্যর্থতার মুহূর্তেও ভেঙে না পড়ে লড়াই চালিয়েছিলেন তিনি। তাই আজ তাকে সাফল্যের সামনে এনে দাঁড় করিয়েছে।