লাল্টু : চাষীদের চাষের জমির ফসল রক্ষা করতে দিনরাত পাহারা দিতে দেখা যায় মাঠের ধারে। আর এই দিনরাত পাহারা এবং পরিশ্রমের ফল স্বরূপ সেই ফসল আমাদের অন্নসংস্থান করে। যে কারণে চাষীদের অন্নদাতা বলা হয়ে থাকে। তবে বীরভূমের এই অন্নদাতাদের বর্তমানে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে মালিকহীন ঘোড়া, যাদের জ্বালাতন ঘুম কেড়েছে তাদের। চাষীদের বক্তব্য, ‘গরু ছাগল নয় যে ধরে বেঁধে রেখে দেবো। এ তো ঘোড়া। ধরতে গেলে দৌঁড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। আর ওদের দৌঁড়ানোর সাথে মানুষের পাল্লা দেওয়া অসম্ভব।”
দুবরাজপুর থানার অন্তর্গত বালিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের মেজে, বেলসাড়া, বনকাটি, কুলেকুড়ি এই চারটি গ্রামে রয়েছে এইরকম ৬টি মালিকহীন ঘোড়া। যে ঘোড়াগুলির কাজ হল, খিদে পেলে ফসলের জমিতে ঝাঁপিয়ে পড়া। সে দিন হোক অথবা মধ্যরাত্রি। আর এইভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা তছনছ করে দিচ্ছে মাঠের ফসল। ধান থেকে শুরু করে শীতকালীন শাকসবজি খেয়ে নেওয়ার পাশাপাশি মাঠের মধ্যে তাদের চলাফেরার কারণে নষ্ট হয়ে পড়ছে অধিকাংশ ফসল। আর এইভাবে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন দুবরাজপুর ব্লকের অন্তর্গত বালিজুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধিকাংশ চাষিরা।
ঘোড়ার এমন জ্বালাতন এই প্রথম নয়। গত বছরও একইভাবে জ্বালাতন শুরু হয়েছিল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গতবছর তারা পদক্ষেপ নিয়ে ওই ঘোড়াদের মাঠে নামা থেকে রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছিল। আর ঠিক একইভাবে চলতি বছরও নিজেদের ফসলের ক্ষতি ঠেকাতে স্থানীয় চাষীরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে তারা পঞ্চায়েত প্রধান মুনমুন ঘোষকে বিষয়টি সম্বন্ধে অবগত করেছেন। অন্যদিকে চাষীরাও বিষয়টি নিয়ে লিখিতভাবে থানা এবং অন্যান্য প্রশাসনিক জায়গায় জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুবরাজপুর ব্লকের বিডিও অনিরুদ্ধ রায় জানিয়েছেন, “আমাদের প্রথম কাজ হবে ওই সকল ঘোড়াগুলির মালিকদের খুঁজে বের করা। তারপর তাদের অনুরোধ করা, যাতে ঘোড়াগুলি আটকে রাখা যায়। গত বছরও এই এলাকার চাষীরা এমনই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন, তবে তা রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছিল।”