সোশ্যাল মিডিয়ায় বদলে দিল অনামিকার ভাগ্য, ববিতা ঘুরে জুটল অঙ্কিতার চাকরি

নিজস্ব প্রতিবেদন : নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আষ্টেপৃষ্ঠে বিদ্ধ রাজ্য সরকার। আদালতে একের পর এক ধাক্কা খেতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। সেই ধাক্কায় চাকরি হারাচ্ছেন হাজার হাজার চাকুরীজীবী। তবে এরই মধ্যে মঙ্গলবার নাটকীয় মোড় দেখা যায়, যখন নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের অন্যতম মুখ ববিতা সরকারের (Babita Sarkar) চাকরি যায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Gangopadhyay) এক কলমে। ববিতা সরকার সেই চাকরি ছিল মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর (Paresh Adhikari) মেয়ে অঙ্কিতার (Ankita Adhikari)। এখন সেই চাকরি হলো অনামিকা রায়ের (Anamika Roy)।

ববিতার চাকরি এখন অনামিকা রায়ের হাতে যাওয়ার পর অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন কিভাবে এমনটা ঘটলো? ভাবতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি যে সোশ্যাল মিডিয়ায় বদলে দিয়েছে অনামিকার ভাগ্য। শিলিগুড়ির দুধমোড় এলাকার বাসিন্দা অনামিকা এতদিন সরকারি চাকরি না পেয়ে একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষিকা হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন। মঙ্গলবার অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এক কলম বদলে দিল তার ভাগ্য আর সেই ভাগ্যের বদলে স্বাভাবিকভাবেই খুশি অনামিকা।

এবার আসা যাক আসল ঘটনায়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মামলাকারীদের অন্যতম মুখ হিসাবে পরিচিত ববিতা সরকার চার বছর ধরে লড়াই চালান এবং ২০২২ সালের জুলাই মাসে আদালত জানিয়ে দেয় অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি ছিল বেআইনি নিয়োগ। সেই চাকরি অঙ্কিতার থেকে কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি তার বেতনের সব টাকা ববিতাকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

তবে এরই মধ্যে ঘটনা মোড় নেয় ডিসেম্বর মাসে। গত ডিসেম্বর মাসে নিয়োগের শুদ্ধিকরণে গোড়াতেই গন্ডগোল ধরা পড়ে। অনামিকা দাবি করেন ববিতা যে চাকরি পেয়েছেন সেই চাকরির যোগ্য প্রার্থী হলেন তিনিই। এসএসসি প্রার্থীদের যোগ্যতার নিরিখে যে র‌্যাঙ্কিং রয়েছে তাতে অনামিকা ববিতার থেকে এক ধাপ পিছিয়ে ছিলেন। কিন্তু ডিসেম্বর মাসে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি এবং বেশ কিছু তথ্য আপলোড হয় আর সেগুলি ভাইরাল হয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড হওয়ার সেই ছবি এবং তথ্য ভাইরাল হওয়ার পরই ববিতার চাকরি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এখানে দাবি করা হয় ববিতা সরকারের র‌্যাঙ্কিং ভুল ছিল। আসলে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ছবি ভাইরাল হয় সেটি ছিল ববিতা সরকারের আবেদন পত্র। যে আবেদন পত্র তিনি জমা দিয়েছিলেন এসএসসির কাছে। সেখানে উল্লেখ করা ছিল স্নাতকস্তরে তিনি পেয়েছিলেন ৬০% নম্বর। কিন্তু বাস্তবে ৮০০ নম্বরের মধ্যে তিনি পেয়েছিলেন ৪৪০ নম্বর অর্থাৎ ৫৫ শতাংশ।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অনামিকা রায় দাবি করেন, এমন ভুল তথ্য সংশোধন করা হলে ববিতা সরকার র‌্যাঙ্কিংয়ে অন্ততপক্ষে আট ধাপ পিছিয়ে পড়বেন। আর চাকরি প্রার্থীদের র‌্যাঙ্কিংয়ের তালিকায় প্রথম ২০-তে উঠে আসবে তার নাম। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চাকরির আসল দাবিদার হলেন তিনিই। অনামিকা যে দাবি করেছিলেন সেই দাবি প্রমাণিত হয় মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে।