কোন ধাপে রয়েছে Covaxin, জানালো ভারত বায়োটেক

নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারত বায়োটেক কোম্পানির BBV152 বা কোভাক্সিন ভ্যাকসিন প্রাথমিক ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় সাফল্য লাভ করায় দ্রুত করোনা প্রতিরোধের সম্ভাবনার আশা দেখাচ্ছে। ভারত বায়োটেকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর কৃষ্ণা এল্লা জানান, টানা ৪০ দিনের গবেষণায় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের (কোভাক্সিন) প্রথম ভার্সনটি তাঁরা তৈরি করতে সমর্থ হয়েছেন।

এই সাফল্য এসেছে যৌথভাবে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ‘ইন্ডিয়ান ড্রাগ কন্ট্রোল রিসার্চ’ (আইসিএমআর) ও তার অধীনস্থ সংস্থা পুনের ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি (এনআইভি) সংস্থার সহযোগিতায়। এরপরই শুরু হয় প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পর্ব।

‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল রেজেস্ট্রি অফ ইন্ডিয়া’ (সিটিআরআই)-র ‘ম্যান্ডেটেড প্রোটোকল’ মেনে প্রাণীদেহের উপর কোভ্যাক্সিনের সফল পরীক্ষার পর গত সপ্তাহে মানবদেহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানোর জন্য ‘সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও)’ এর সবুজ সঙ্কেত পান তাঁরা। দেশের আরও ৬টি সংস্থা কোভিড ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়ালের (মানব শরীরে প্রয়োগ) অনুমতির আবেদন করেছিল। ফেজ ওয়ান ও ফেজ টু ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য ভারত বায়েটেক সংস্থা অনুমোদন পায় ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)- পক্ষ থেকে।

প্রথম পর্বে ৩৭৫ এবং দ্বিতীয় পর্বে ৭৫০ জন ইচ্ছুক স্বেচ্ছাসেবীর দেহে টীকার ফলাফল পরীক্ষা করা হবে। মানব শরীরে এই কোভ্যাক্সিন ভ্যাকসিন প্রয়োগের চলছে জোরদার প্রস্তুতি। এই ট্রায়াল হবে দেশের ১২ টি প্রতিষ্ঠানের দ্বারা। এই প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে আছে দিল্লি ও পাটনার অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট, নাগপুরের জিল্লিকুর মাল্টিস্পালিটি হাসপাতাল, ওড়িশার ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সাইন্স এবং সাম হাসপাতাল মতো প্রথমসারির গবেষণা সংস্থা।

ভারত বায়োটেকের এমডি কৃষ্ণা এল্লা জানান, “কোভ্যাক্সিন একটি ইনঅ্যাক্টিভিটেড ভ্যাকসিন যাকে তৈরি করা হয়েছে ভাইরো সেল প্ল্যাটফর্মের উপর। কোভ্যাক্সিন মানব শরীরে প্রয়োগ করলে করোনা ভাইরাস মানব শরীরে তাঁর প্রতিরূপ তৈরি করতে পারবে না। যা তাঁর বিনাশ ডেকে আনবে। কোভ্যাক্সিন মানুষের ইমিউনোসিস্টেমকে বাড়াবে ও ভাইরাসকে অ্যান্টিবডি হিসাবে আ’ঘাত হানবে।”

ভারত বায়োটেকের সাফল্য পাবার কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে, এর আগেও রোটাভাইরাস এবং এইচ১এন১ ভ্যাকসিন তৈরির কাজে সাফল্য লাভ করে এই সংস্থা। এখানকার গবেষণাগারে নিরাপত্তা, জৈব সুরক্ষা ব্যবস্থা ও বায়ো সেফটি লেভেল -৩ আন্তর্জাতিক মানের।
বায়োটেক ভারতের হাত ধরে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সাফল্য লাভ করলে ভারত এক যুগান্তকারী ইতিহাস রচনা করবে। সেই সাফল্যের দরজার সামনে ভারত দাঁড়িয়ে আছে বলেই মনে করছে দেশের প্রথমসারির বিজ্ঞানীরা।‌