How is up and down train calculated in Indian railway: দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম হলো রেলপথ। যা অত্যন্ত সাশ্রয়ী এবং আরামদায়ক। যার ফলে কম খরচে স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালতে পৌঁছতে অনেকেই এই পথ বেছে নেয়। নিত্যদিন যাতায়াতও করেন। কিন্তু অনেকেরই এটা অজানা যে আপ-ডাউন ট্রেনের মানে কি? এর অর্থ না বোঝায় অনেকেই স্টেশনে এসে প্ল্যাটফর্মের ঘোষনা অনুযায়ী নিজেদের গন্তব্যের ট্রেন আপ নাকি ডাউন তা গুলিয়ে ফেলেন। তবে আর সেই গুলিয়ে ফেলা নয়। আজকের এই প্রবন্ধে জেনে নিন আপ-ডাউন ট্রেন (Up-Down Train) কি করে বুঝবেন? এর অর্থ কি?
সাধারণ ভাষায় মানুষ জন আপ-ডাউন মানে এটাই বোঝে যে উপর এবং নীচ। অর্থাৎ আপ মানে উর্ধ্বগামী এবং ডাউন মানে নিম্নগামী। কিন্তু না, রেলওয়েতে আপ-ডাউনের (Up-Down Train) মানে তা নয়। রেলওয়ে নিয়ম অনুযায়ী ডাউন কথার অর্থ হল হোম স্টেশন থেকে গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া। অপরদিকে আপ কথার অর্থ হলো গন্তব্য বা শেষ স্টেশন থেকে হোম স্টেশনের দিকে ফিরে আসা।
অর্থাৎ যে ট্রেনগুলি হোম স্টেশন থেকে গন্তব্যের দিকে রওনা হয় সেই ট্রেনগুলিকে বলা হয় ডাউন ট্রেন। উল্টোদিকে যে ট্রেনগুলি গন্তব্য বা শেষ স্টেশন থেকে আবার ব্যাকে হোম স্টেশনে ফিরে আসে সেই ট্রেনগুলিকে বলা হয় আপ ট্রেন। যেমন – হাওড়া-ব্যান্ডেল লোকালের হোম স্টেশন হল হাওড়া। ফলেই প্ল্যাটফর্মে যখন ডাউন হাওড়া-ব্যান্ডেল লোকাল বলা হয় তার মানে বুঝতে হবে ট্রেনটি হাওড়া থেকে ব্যান্ডেলের দিকে রওনা দেবে। অন্যদিকে আপ হাওড়া-ব্যান্ডেল লোকাল বলা মানে ব্যান্ডেল থেকে ট্রেনটি হাওড়া দিকে ফিরছে বোঝায়।
কিন্তু পূর্বে রেল ব্যবস্থায় আপ-ডাউনের অর্থ ছিল অন্যরকম। রাষ্ট্রায়ত্তকরনের পূর্বে অর্থাৎ ১৯৫১ সালে রেল ব্যবস্থা ৪২টি ভাগে বিভক্ত ছিল। তবে তার মধ্যে সেই সময় দেশের তিনটি প্রধান বন্দর শহর ছিল মুম্বাই, কলকাতা এবং মাদ্রাজ। যখন এই প্রধান কার্যালয় থেকে ট্রেন দূরে অর্থাৎ গন্তব্যের দিকে যেত তখন সেই ট্রেনগুলিকে বলা হতো আপ ট্রেন। অপরদিকে এই তিন বন্দর শহরের দিকে ট্রেনের আগমন ঘটলে বলা হত ডাউন ট্রেন।
কিন্তু পরবর্তীতে ১৯৫১ সালে সংযুক্তিকরন হয়। সেই সময় আপ-ডাউন ট্রেনের ধারণা রয়ে গেলেও তার অর্থ বদলে যায়। সেই সময় আপ-ডাউন ট্রেন (Up-Down Train) নির্দেশিত হয় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বা অক্ষাংশের ভিত্তিতে। সেই অনুযায়ী সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কম উচ্চতার স্টেশনের দিকে ট্রেন গতিশীল হলে সেই ট্রেনকে বলা হয় ডাউন ট্রেন। অপরদিকে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কম উচ্চতার স্টেশন থেকে বেশি উচ্চতার দিকে ট্রেনের গমন হলে সেই ট্রেনকে বলা হয় আপ ট্রেন। উদাহরণস্বরূপ শিয়ালদহ টু কৃষ্ণনগর ট্রেন হলো আপ ট্রেন। অন্যদিকে কৃষ্ণনগর টু শিয়ালদহ ট্রেন হল ডাউন ট্রেন। অনুরুপে দিল্লি টু শিয়ালদহ বা হাওড়া ট্রেন হল ডাউন ট্রেন। শিয়ালদহ বা হাওড়া টু দিল্লির দিকে অভিমুখগামী ট্রেন হল আপ ট্রেন। আবার হোম স্টেশন এবং গন্তব্য স্টেশনের মাঝামাঝি স্টেশনে আপ-ডাউন ট্রেন নির্দেশিত হয় অক্ষাংশের ধারণা অনুযায়ী। কোনো কোনো জায়গায় আবার আপ-ডাউন ট্রেনের পূর্ব প্রচলিত নির্দেশনাও মানা হয়।