Bangladeshi Tourist: বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিচিতি সত্যিই অশান্তকর। আগস্ট মাস পর্যন্ত বাংলাদেশ অশান্ত ছিল কোটা সংস্কার নিয়ে ছাত্র আন্দোলন, একাধিক সংঘর্ষ, হাসিনার দেশত্যাগ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে। পরবর্তীকালে অবশ্য বাংলাদেশে গঠিত হয়েছে। মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ‘অন্তর্বর্তী সরকার’ তবে অশান্তি কমেনি। আবারও বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছে ইসকনের সন্ন্যাসী গ্রেফতার নিয়ে। যার প্রভাব পড়েছে ভারতেও, শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রভাব নয় পর্যটন ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়েছে মারাত্মকভাবে।
মহামারীর সময় বাংলাদেশ থেকে আসা পর্যটকদের সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ অস্থিরতার কারণেও একইরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। যেসব বাংলাদেশীরা ভ্রমণ, চিকিৎসা কিংবা ব্যবসার কাজে প্রতিনিয়ত ভারতে আসতেন (Bangladeshi Tourist) তাদের যাতায়াত কমে গেছে এই দেশে। কেন্দ্রীয় অভিবাসন দফতরের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের পর্যটকদের সংখ্যা ২০২৩ সালের থেকেও ২০২৪ সালের অনেকাংশ কমে যাবে।
বিগত ১০ বছরের হিসাব অনুযায়ী ভারতে আসা পর্যটকদের (Bangladeshi Tourist) সংখ্যায় আমেরিকার পরেই বাংলাদেশ এর নাম রয়েছে। কিন্তু গত ৫ বছরের হিসাবে রয়েছে কিছু সমস্যা। ২০১৯ সালে ভারতে আসেন ২৫,৭৭,৭২৭ জন বাংলাদেশী পর্যটক। মহামারী সময় যদিও এই সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। ২০২০ সালে সাড়ে পাঁচ লাখের কম পর্যটক এসেছিলেন ভারতে। আড়াই লাখেরও কম পর্যটক ভারতে এসেছিলেন ২০২১ সালে এবং ২০২৩ সালে সেই সংখ্যা বৃদ্ধিবে দাঁড়ায় ১২,৭৭,৫৫৭ জন। ২০২৩ সালে ২১ লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছিল পর্যটকদের সংখ্যা। তবে বাংলাদেশে পর্যটকদের সংখ্যা চলতি বছরে ১৩ লাখও ছাড়িয়ে যায়নি।
যদিও শেষ চার মাসের সঠিক হিসাব এখনো হাতে আসেনি কিন্তু আগস্ট মাস থেকেই কমতে শুরু করেছে বাংলাদেশী পর্যটকদের (Bangladeshi Tourist) সংখ্যা। সম্ভবত বাংলাদেশের অশান্তকর পরিবেশের এরজন্য দায়ী। বাংলাদেশ থেকে আগত পর্যটকের সংখ্যা অনেকটাই কমে গেছে বিগত কয়েকমাস ধরে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার মাস অর্থাৎ আগস্ট মাসে এই সংখ্যা এক লাখও পৌঁছায়নি। বর্তমানে বাংলাদেশে হিন্দু বিদ্বেষ যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে আন্দাজ করা যাচ্ছে বছর শেষে হয়তো বাংলাদেশে পর্যটকদের সংখ্যা ১৫ লাখ গিয়ে থেমে যাবে।
আরো পড়ুন: অবশেষে ইজরায়েল নিল কড়া পদক্ষেপ, নিষিদ্ধ করা হলো লাউড স্পিকারে আজান
বাংলাদেশী পর্যটকদের (Bangladeshi Tourist) কম আসার এই বিষয়টি চলতি বছরের অধিবেশনেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে উঠে এসেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এই অবস্থার জন্য দায়ী। প্রতিবছরই বহুসংখ্যক পর্যটক ভারতে আসেন বিভিন্ন কারণে। চিকিৎসা, ভ্রমণ এবং ব্যবসার কাজে অধিকাংশ বাংলাদেশী প্রায়ই ভারতে আসেন কিন্তু সেই সংখ্যা অনেকটাই কমে গেছে এই পরিস্থিতির জন্য। যেসব ব্যবসায়ীরা পর্যটকদের উপর নির্ভরশীল তাদের রীতিমতো চিন্তার ভাঁজ করেছে কপালে।
বাংলাদেশীরা কলকাতায় আসার পর মূলত তারা নিউমার্কেটে বেশি থাকে। এখানকার সদর স্ট্রিট, কিড স্ট্রিট, মার্কুইজ় স্ট্রিটে বছরের বেশিরভাগ সময় দেখতে পাওয়া যায় বাংলাদেশীদের। হোটেল, রেস্তরাঁ থেকে মুদ্রা বিনিময়কারী ব্যবসায়ীরা পর্যটকদের উপরেই বেশি নির্ভর করেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা সকলেই বেশ চিন্তিত। গত কয়েক মাস ধরে পর্যটক নেই বললেই চলে। সব ধরনের ব্যবসাতেই এর প্রভাব পড়েছে।
এমনকি কলকাতার চিকিৎসা-পর্যটনও ধাক্কা খাচ্ছে মারাত্মকভাবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলির দাবি, বাংলাদেশ থেকে আগত রোগীদের সংখ্যা অনেকাংশে কমে গেছে। বর্তমান পরিস্থিতির কথা চিন্তা করলে সেই সংখ্যা আরো কমবে। কেননা ভিসা পেতে সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষদের। দক্ষিণ-পূর্ব কলকাতার মুকুন্দপুর এলাকায় অনেক বাড়িতেই চিকিৎসা করাতে আসা বাংলাদেশী রোগীরা থাকে। তাদের বক্তব্য অনুসারে বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থাও যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।