Ratan Tata Property: দানধ্যান ছিল তার জীবনের মূল মন্ত্র; তার মোট সম্পত্তি অবাক করার মত

Prosun Kanti Das

Published on:

Advertisements

Ratan Tata Property: চলতি বছরেই বার্ধক্যজনিত কারণে ৮৭ বছর বয়সে জীবনাবসান ঘটে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পপতি রতন টাটার। টাটা গোষ্ঠী আন্তর্জাতিক স্তরে তার হাত ধরে একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যেতে পেরেছিল। কোম্পানিকে শীর্ষস্থানে পৌঁছানোর জন্য তার অবদান সত্যি অনস্বীকার্য। কিন্তু কখনোই দেশের ধ্বনি শিল্পপতিদের এক থেকে দশের তালিকায় তার নাম ছিল না। কারণ তিনি যে পরিমাণ টাকা উপার্জন করতেন তার থেকে অনেক বেশি দান করতেন বিভিন্ন জনহিতকর কাজে। তার মৃত্যু শুধুমাত্র দেশের শিল্পজগতে নয়, গোটা বিশ্বের কাছে অত্যন্ত দুঃখজনক। এরকম নক্ষত্রের জায়গা কোনদিনও কেউ নিতে পারবে না। তার মৃত্যুর পরে এমন বহু অজানা প্রশ্ন সম্পর্কে আমজনতার উৎসাহ বেড়ে গেছে। তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ চমকে দেওয়ার মতো।

Advertisements

চলতি বছরের আগস্ট মাসে প্রকাশিত হয় ভারতীয় ধনকুবেরদের তালিকা। ‘হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট’ নামের ওই তালিকায় ৩৫০তম নম্বর স্থানে ছিলেন রতন টাটা। এই পার্সি শিল্পপতির সম্পত্তির পরিমাণ ৭ হাজার ৯০০ কোটি টাকা (Ratan Tata Property) বলে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল। তার মোট সম্পত্তির পরিমাণের হিসাব করলে তিনি ভারতের অন্যান্য জনপ্রিয় শিল্পপতিদের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে এর অন্যতম কারণ হলো তার দান করার প্রবণতা। নিজের আয়ের বড় অংকটাই তিনি দান করে দিতেন। সেই কারণে তৈরি করেছিলেন ট্রাস্ট, ভারতীয় শিল্পের জনক আসলে ছিলেন একজন বিচক্ষণ ব্যক্তি। কর্মের মধ্য দিয়েই নিজের সারাটা জীবন অতিবাহিত করেছেন তিনি। শুধুমাত্র নিজের স্বার্থ নয় অপরের স্বার্থের কথা আগে মাথায় রেখেছেন এই ব্যক্তি।

Advertisements

আরো পড়ুন: রতন টাটা সম্পর্কে জানুন এই অজানা তথ্য, শ্রদ্ধা বাড়বে নিঃসন্দেহে

টাটা গোষ্ঠীর মূল সংস্থা ‘টাটা সন্স’-এর মাত্র ০.৮৩ শতাংশ শেয়ারের (Ratan Tata Property) মালিক ছিলেন রতন টাটা। এই সংস্থার নিট লাভের অংশীদারি পেতেন তিনি। নিজের লাভের অনেকটা অংশ তিনি বিনিয়োগ করতেন বিভিন্ন নতুন নতুন শিল্পক্ষেত্রে। নতুন স্টার্টআপ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে তাদেরকে আন্তর্জাতিক স্তরে এক নতুন জায়গায় পৌঁছে দিতে সাহায্য করতেন। ২০১৪ সালে অন্তত ২৫টি সংস্থায় বিনিয়োগ করেন টাটা গোষ্ঠীর প্রাক্তন চেয়ারম্যান রতন টাটা। যার মধ্যে অ্যাপ ক্যাব সংস্থা ‘ওলা’, ডিজিটাল পেমেন্ট কোম্পানি ‘পেটিএম’, আসবাবপত্রর ই-টেলার ‘আরবান ল্যাডার’ ও চশমা প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘লেন্সকার্ট’-এর নাম ছিল। এ ছাড়াও স্বাস্থ্য ও ফিটনেস প্ল্যাটফর্ম ‘কিয়রফিট’-এ লগ্নি করেছিলেন তিনি।

Advertisements

তিনি যত লগ্নি করেছিলেন সমস্ত লগ্নি ‘আরএনটি অ্যাসোসিয়েটস প্রাইভেট লিমিটেড’-এর মাধ্যমে করা হয়েছিল। এই সংস্থাটি তৈরি করার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ব্যক্তিগতভাবে কোন জায়গায় বিনিয়োগ করা। ভারতের বিভিন্ন স্টার্টআপ কোম্পানিতে লগ্নি করেছিলেন রতন টাটা। ২০২৩ আর্থিক বছরে আরএনটি অ্যাসোসিয়েটসের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এতে রতন টাটার ১০০ শতাংশ মালিকানা রয়েছে। এখানে তাঁর ২৯৬.৯৬ কোটি টাকার সম্পত্তি (Ratan Tata Property) রয়েছে। যার মধ্যে বিভিন্ন খাতে লগ্নি রয়েছে ১৮৬ কোটি টাকা। ২০২৩ আর্থিক বছরে আরএনটি অ্যাসোসিয়েটসের আয়ের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬.৩৯ কোটি টাকা। ২০২২ সালে এই সংস্থার আয়ের পরিমাণ ছিল ১৭ কোটি টাকা। ২০২৩ আর্থিক বছরে রতন টাটার নিজস্ব মালিকানাধীন সংস্থাটি লাভ করে ২৭.৭১ কোটি টাকা। যা তার আগের বছরে ১২.৪৭ কোটি টাকা ছিল।

আরো পড়ুন: মৃত্যুর পরেও নজির স্থাপন করলেন রতন টাটা, সকলের কাছে তিনি অনুপ্রেরণা

রতন টাটা বাদে আরএনটি অ্যাসোসিয়েটসের বোর্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন মেহলি মিস্ত্রি। রতন টাটার অত্যন্ত কাছের মানুষ তিনি, সম্পর্কে মেহলি আবার সাইরাস মিস্ত্রির তুতো বোন। ২০১৭ সালে চেয়ারম্যানের পদ থেকে অবসর নিলেও তিনি পুরোপুরি অবসর নেননি টাটা সাম্রাজ্য থেকে। জামশেদজীর এই উত্তরসূরী এরপরে বিভিন্ন স্টাটার কোম্পানিতে বিনিয়োগ শুরু করেছিলেন। বিভিন্ন স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোকে পরিণত করাই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য। অবন্তী ফিন্যান্স প্রাইভেট লিমিটেড’ ও ‘ইলেক্ট্রোড্রাইভ পাওয়ারট্রেন সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেড’নামে এই দুটি কোম্পানি তিনি গড়ে তুলেছিলেন টাটা গোষ্ঠী থেকে অবসর নেওয়ার পর। এর মধ্যে প্রথমটি একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান।

অবন্তী ফিন্যান্স প্রাইভেট লিমিটেড গড়ে তোলার অন্যতম কারণ ছিল ভারতের দেশবাসীর জীবনযাত্রার মানকে আরও বেশি উন্নত করে গড়ে তোলা। ২০১৭ সালে ইলেক্ট্রোড্রাইভ পাওয়ারট্রেন তৈরি করেন রতন টাটা। এই সংস্থার অন্যতম কাজ ছিল বৈদ্যুতিন গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরি করা। শুধু তা-ই নয়, ‘টাটা এসিই’ মডেলের গাড়ির একমাত্র যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী সংস্থা হল ‘ইলেক্ট্রোড্রাইভ’। এ ছাড়া ‘টাটা টিয়াগোর’ মডেলের ২৫-৩০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে এই সংস্থায়। টাটা সংস থেকে অবসর নেওয়ার পরে তিনি ভারত এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বেশ কয়েকটি বিনিয়োগ তহবিল গড়ে তোলেন। সিঙ্গাপুর ভিত্তিক একটি তহবিলের সঙ্গে তিনি ২০১৭ সালে যুক্ত হয়েছিলেন। বিভিন্ন সংস্থায় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এই তহবিল তাকে সাহায্য করত।

Advertisements