লকডাউনের পর ট্রেন চলাচলে থাকতে পারে যে ১০ টি বিধিনিষেধ

নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২৩ শে মার্চ থেকে দেশে জারি হয়েছে ২১ দিনের লকডাউন। আগামী ১৪ই এপ্রিল রাত্রি ১২টা পর্যন্ত চলবে এই লকডাউন। তারপর লকডাউনকে আরও বাড়ানোর বিষয়ে এক্ষুনি কোনো পদক্ষেপের কথা জানায় নি সরকার। আবার ১৪ই এপ্রিলের পর পুরো দেশে এক ধাক্কায় সব নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হবে, এমন সম্ভাবনাও নেই বললেই চলে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কথা সূত্রে বলা যায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের পুরো দেশে যে সমস্ত অঞ্চলগুলি হটস্পট অঞ্চল বলে চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলি ১৪ই এপ্রিলের পরেও এক মাস সিল থাকতে পারে। শুধু তাই নয়, ১৫ই এপ্রিল থেকে রেল চলাচলের বিষয়েও সুনিশ্চিত কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। কোনো পরিকল্পনা থাকলে রেল দপ্তর আগাম বিবৃতি দিবে বলে জানানো হয়েছে। তবে লকডাউন শেষ হলে অবশ্যই ধাপে ধাপে শুরু হবে রেল চলাচল। কেন্দ্রীয় সরকারের পরামর্শ মতই সিদ্ধান্ত নেবে রেল।

১৪ই এপ্রিল যদি লকডাউন শেষ হওয়ার কথা ঘোষণা করা হয় সেক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে রেলের তরফ থেকে। তবে সুরক্ষা অবলম্বনের বিষয় অনেক কর্তাদের মত, ট্রেনে যাত্রীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হবে ও তাদের শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। এক্ষেত্রে শারীরিক পরীক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের আরোগ্য সেতু অ্যাপের সাহায্য নিতে পারে রেল। ট্রেনে ওঠার ও নামার ক্ষেত্রে ভিড় যাতে কমানো যায় ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা যায় সেক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নেবে রেল।

রেলের এক কর্তার কথায়, লকডাউন উঠলে কোন কোন ট্রেন চালু হতে পারে সেক্ষেত্রে প্রতিটি জোন থেকে রেল বোর্ডের কাছে পাঠানো হবে হবে প্রস্তাব। সেই প্রস্তাবের উপর ভিত্তি করে রেল বোর্ড যে ট্রেনগুলিকে ছাড় দেবে সেগুলিই চালু করা হবে। সূত্র অনুসারে বর্তমানে জোনগুলি কোন কোন ট্রেন চালানো যায় তা বাছাইয়ের কাজ করছে। এক্ষেত্রে যখন রেল চালু করা হবে রেলের প্রথম কাজ হবে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করা। সেই কর্তার কথায় সতর্কতার সময় আয়ের কথা না ভেবে এখন যাত্রীদের নিরাপত্তার দিকে নজর দিতে হবে। জানা গিয়েছে, যে সকল জায়গাগুলিতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ খুব বেশি সেই জায়গাগুলিতে আপাতত ট্রেন চালানো হবেনা।

এছাড়াও এক রেল কর্তার কথায় পুরো দেশে ধাপে ধাপে লকডাউন ওঠার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রে হতে পারে এলাকা বেছে লকডাউন তোলা হবে। ফলে যে জায়গাগুলিতে লক ডাউন চলবে সেই জায়গাগুলিতে ট্রেন চলাচল হবে না। ট্রেনে সফর করার ক্ষেত্রেও বলা হচ্ছে জরুরি প্রয়োজন থাকলে তবেই যেন মানুষ ট্রেনে সফর করেন। প্রয়োজন ছাড়া যেন কেউ ট্রেনে সফর না করেন। এক্ষেত্রে রেলের তরফ থেকেও খেয়াল রাখা হবে। তবে বড়ো স্টেশনগুলিতে ভিড় সামলানো ট্রেনের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। ট্রেনের ইঞ্জিন ও বগিগুলি যাচাই করে আবার চালানোর জন্য তৈরি করার কাজও রেল সবসময় চালাচ্ছে বলে খবর।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দেশে লকডাউন ঘোষণা হওয়ার আগেই প্ল্যাটফর্মে ভিড় কমাতে প্ল্যাটফর্ম টিকিটের দাম বাড়ানো থেকে শুরু করে প্রবীণ ব্যাক্তিদের ছাড় বাতিল করা হয়। এছাড়াও অনেক সুযোগ সুবিধা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রেল কর্তৃপক্ষ। রেলের এক আফিসার জানান, লকডাউন উঠে গেলেও আপাতত বহাল থাকতে পারে এই সকল নিয়ম। লকডাউন উঠে গেলেও যাত্রীদের থার্মার স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করবে রেল। আরোগ্য সেতু অ্যাপলিকেশনের মাধ্যমে যাত্রীদের সুস্থতা যাচাই করে তবেই ট্রেন সফরের অনুমতি দেবে রেল।