মাছ বেচে সংসারের হাল ধরেও থামেনি দেবাশীষ, উচ্চমাধ্যমিক দিতে পরীক্ষা কেন্দ্রে

Shyamali Das

Published on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : ইচ্ছে থাকলে সব হয়। এমনটাই ফের প্রমাণ করলেন বীরভূমের এক যুবক। কঠোর পরিশ্রম করে সংসারের হাল ধরেও পড়াশোনা ভুলে যায়নি সে। সকালে মাছ বিক্রি করে সংসারের হাল ধরার পর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় দেবাশীষ দাস।

Advertisements

দেবাশীষ বীরভূমের সিউড়ি এক নম্বর ব্লকের অন্তর্গত কড়িধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিপুর গ্রামের বাসিন্দা। বাবা মা না থাকার কারণে সে দিদার কাছে মানুষ। তবে দিদা এখন থুড়থুড়ে বুড়ি। ভারী কাজের ক্ষমতা নেই তার। এমন পরিস্থিতিতে লকডাউন সময়কাল থেকেই সে মাছ বিক্রি করার পেশা বেছে নেয়। মাছ বিক্রি ছাড়াও ক্যাটারিংয়ের কাজ পেলেও সে ছুটে যায় বাড়তি অর্থের টানে। তবে এতকিছুর পরেও সে কিন্তু নিজের পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এই বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পরীক্ষা দিচ্ছে।

Advertisements

দেবাশীষ নিজের এলাকার কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল পাবলিক এন্ড ইনস্টিটিউশন উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। ২০২০ সাল পর্যন্ত সে একজন সাধারণ ছাত্র থাকলেও করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর লকডাউন জারি হতেই বাড়িতে অর্থ সংকট লক্ষ্য করা যায়। তখন সে বুদ্ধি করে মাছ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়। মাছ বিক্রি করার পেশা বেছে নেওয়ার পাশাপাশি সে ওই সময় পড়াশোনা বন্ধ করে দেবে এমনটাই ভেবেছিল।

Advertisements

তবে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের সহযোগিতা এবং তাদের অনুপ্রেরণা এসে পুনরায় স্কুলে ফিরে আসে। নিজের ব্যবসা চালানোর পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের সামনে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়। এরপর থেকে প্রতিদিন সাতসকালে সিউড়ি থেকে মাছ কিনে নিয়ে এসে পাড়ায় পাড়ায় বিক্রি করার পর স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করে সে। পড়াশোনা করার পাশাপাশি উচ্চমাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় বসে এবং এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায়।

দেবাশীষ দাসের এমন অদম্য লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা। প্রত্যেকেই চান দেবাশীষ ভালো ফলাফল করে ভালোভাবে নিজের পায়ে দাঁড়াক। অন্যদিকে এই প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলের আরও অনেক ছাত্রছাত্রী রয়েছে যারাও কিভাবে আর্থিক প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়ে নিজেদের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে।

Advertisements