বাবা-মা নেই, মাছ বিক্রি, ক্যাটারিংয়ের কাজ করে উচ্চমাধ্যমিকে নজরকাড়া ফলাফল দেবাশীষের

Shyamali Das

Published on:

Advertisements

পার্থ দাস : দু’বছর পর চলতি বছর প্রকাশিত হয় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল। এই বছর উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল সামনে আসতেই দেখা যায় প্রথম রাতে একসঙ্গে জায়গা করে নিয়েছে ২৭২ জন। এ যেন একবারে দু’বছরের হিসাব সুদে-আসলে মিটিয়ে দিল পড়ুয়ারা।

Advertisements

তবে এই সকল মেধা তালিকায় থাকা পড়ুয়াদের নিয়ে যখন রাজ্যজুড়ে চলছে হৈ-হুল্লোড় ঠিক সেই সময় প্রচারের অন্তরালে থেকে উচ্চমাধ্যমিকে সফলতা পেল কঠোর পরিশ্রমী এক ছাত্র। কঠোর পরিশ্রমী ওই ছাত্র সিউড়ির পার্শ্ববর্তী কড়িধ্যার কালিপুর গ্রামের বাসিন্দা। বাড়ির পাশেই কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল এন্ড পাবলিক ইনস্টিটিউশনে পড়াশোনা করেছে সে।

Advertisements

দেবাশীষ দাসের বাবা মা নেই। দিদার কাছে তাকে মানুষ হচ্ছে। দিদার বয়স এখন বেড়ে যাওয়ার কারণে সেই ভাবে কাজ করতে সক্ষম নন। এই পরিস্থিতিতে দেবাশীষ মাছ বিক্রি করা শুরু করে। তার মাছ বিক্রি করা শুরু হয় লকডাউন জারি হওয়ার সময় থেকে। মাছ বিক্রির পাশাপাশি বাড়তি রোজগারের জন্য ক্যাটারিংয়ের কাজ করে সে। কাজ করতে গিয়ে তাঁর পড়াশোনা লাটে উঠে, এমনকি স্কুলেও ছেড়ে দেয় দেবাশীষ।

Advertisements

পরে স্কুল খুললে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা বিষয়টি জানতে পেরে তার বাড়িতে যান এবং তাকে বুঝিয়ে পুনরায় স্কুলে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। স্কুলে ফিরে পড়াশোনা চালানোর পাশাপাশি দেবাশীষ নিজের পেশা ধরে রাখে। বলাই বাহুল্য পেশা ও পড়াশোনা একসঙ্গে চলতে শুরু করে। এইভাবে পড়াশোনা করেই এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে দেবাশীষ।

শুক্রবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর মেধা তালিকায় ভুরি ভুরি নাম থাকলেও দেবাশীষের প্রাপ্ত নম্বর কিন্তু কম নয়। সে পেয়েছে ৩৯৪। শতাংশের দিক দিয়ে বিচার করলে দাঁড়ায় ৭২.৫৭। বাংলায় সে পেয়েছে ৭১, ইংরেজিতে ৮০, ভূগোলে ৫৪, ইতিহাসে ৪৮, সংস্কৃতে ৬২ এবং এডুকেশনে ৫৮। কঠোর পরিশ্রম করে দেবাশীষ এইভাবে ভালো ফলাফল করার জন্য স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা এমন একজন পড়ুয়াকে পেয়ে গর্বিত।

Advertisements