খোলামুখ কলে জলের অপচয়, মুখবন্ধ ড্রেন, মুখ থুবড়ে ত্রিফলা আলো ; উদাসীন সিউড়ি পৌরসভা

হিমাদ্রি মন্ডল : বীরভূম জেলার সদর শহরের পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বিস্তর অভিযোগ।

শহরকে আলোকিত করতে ও সৌন্দর্যায়নের উদ্দেশ্যে বীরভূমের সিউড়িতে রাস্তার দুই পাশে লাগানো হয়েছিল কয়েকশো ত্রিফলা আলো। ত্রিফলা আলোর বেশিরভাগ আলোয় এখন বন্ধ, কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে ত্রিফলা আলোর খুঁটি ভেঙে পড়ে আছে ড্রেনের উপর, তো কোথাও দেখা যাচ্ছে ত্রিফলা আলো এখন পাখির আশ্রয়, কোথাওবা লতা পাতায় ঘেরা ত্রিফলা। এ নিয়ে মাথাব্যাথা নেই পৌরসভার, দিনের পর দিন এভাবেই অন্ধকারাচ্ছন্ন হচ্ছে শহর বলে অভিযোগ।

অন্যদিকে পৌরসভার উদাসীনতায় খোলামুখ কলে প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার লিটার পানীয় জল। জল সমস্যা সিউড়ি পৌরসভার দীর্ঘদিনের সমস্যা। কোটি কোটি টাকা খরচ করা হলেও এখনো জল পৌঁছানো সম্ভব হয়নি সব ওয়ার্ডে। যে সমস্ত ওয়ার্ডগুলিতে কোনোক্রমে জল পৌঁছায় সেখানেও গরিমশি। ঘন্টার পর ঘন্টা খোলামুখ কলে পড়ে যাচ্ছে জল, লাগানো হয়নি কলের মুখ। সিউড়ি শহরে এরকম খোলামুখ জলের কলের সংখ্যা প্রায় ১৫-২০ টি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রত্যেকদিন এই খোলামুখ কল দিয়ে হাজার হাজার লিটার পানীয় জল নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে অন্য কোনো প্রান্ত ভুগছে জল কষ্টে।

নিকাশি ব্যবস্থা নিয়েও শহরবাসীদের রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। ড্রেন আছে কিন্তু তা দিয়ে জল যাতায়াত হয় না, যাতায়াত করে শুধু নোংরা আবর্জনা। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস এভাবেই ড্রেনগুলি ভর্তি হয়ে রয়েছে নোংরা স্তুপে। দীর্ঘদিন যাবৎ পরিষ্কারের নামগন্ধ নেই, চরম সমস্যায় সিউড়ির বাসিন্দারা।

কোথাও দুর্গন্ধের কারণে নাকে হাত দিয়ে যাতায়াত করছে সাধারণ মানুষ, কোথাওবা পারাপার করাই বন্ধ করে দিয়েছে ড্রেনের পাশের রাস্তায়। এরপর আবার যদি বৃষ্টি নামে তাহলে তো কথায় নেই। ড্রেনের জল রাস্তার ওপর, কোথাও এক হাঁটু ড্রেনের জল ডিঙিয়ে যাতায়াত করতে হয় সাধারণ মানুষদের।

দিন কয়েক আগেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল শহরের একটি দোতালা পোড়ো বাড়ি। কিন্তু তারপরেও শিক্ষা নেই পৌরসভার বলেও অভিযোগ। শহরের আনাচে কানাচে রয়েছে এমন পোড়ো বাড়ি। কিছু কিছু বাড়ির অবস্থা এতটাই শোচনীয় যেকোনো মুহূর্তে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে। কোথাও কোথাও তো বাড়ির উপর বিশাল বিশাল বৃক্ষের জন্ম নিয়েছে। মুখে বাড়িগুলিকে ভেঙে ফেলার কথা বলা হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন।