অজানা উৎস থেকে গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকছে হাজার হাজার টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদন : কারোর অ্যাকাউন্টে ১০০০০, তো আবার কারোর অ্যাকাউন্টে এক লক্ষ। ঠিক এভাবেই আচমকা গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকতে শুরু করেছে টাকা। কিন্তু কোথায় থেকে এই বিপুল পরিমাণ টাকা আসছে তার হদিস কেউ দিতে পারেননি। অবশ্য তা নিয়ে কারোর মাথাব্যথাও নেই। কারণ টাকা তো আর খোয়া যাচ্ছে না, আসছে। আর নিজেদের অ্যাকাউন্টে ঢোকা টাকার হিসাব দেখতে ও টাকা তুলতে উপচে পড়া ভিড় ব্যাঙ্কে। যা সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে ব্যাঙ্ক কর্মীদের।

ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহারের দিনহাটার নয়ারহাটের করোলা এলাকায়। উত্তরবঙ্গ ক্ষেত্রীয় গ্রামীণ ব্যাঙ্ক সহ আরও দু-একটি ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটেছে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত এই অঞ্চলের বেশিরভাগ বাসিন্দাদের অভাব অনটনের মধ্যে দিন কাটে। আর ঠিক এমন পরিস্থিতিতে বুধবার রাত থেকে এলাকার বাসিন্দাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকার মেসেজ আসতে শুরু করে মোবাইলে।

প্রথমেই ম্যাসেজ পেয়ে অনেকেই চমকে যান। পরে জানতে পারেন এলাকার অধিকাংশ মানুষের অ্যাকাউন্টেই এমন টাকা ঢুকেছে আর সেই মেসেজ এসেছে মোবাইলে। টাকা ঢোকার ক্ষেত্রে পরিমাণটা নানান রকম। কেউ পেয়েছেন ১০০০ টাকা, পেয়েছেন ২০০০০ টাকা, কেউ ৫০০০০, তো কেউ আবার এক লক্ষ টাকা। আর তারপর থেকেই ঐ সকল ব্যাঙ্ক গ্রাহকরা তাদের ব্রাঞ্চের সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন অ্যাকাউন্টের বই আপডেট করার জন্য।পাশাপাশি যারা মেসেজ পাননি তারা একবার খতিয়ে দেখে নিচ্ছেন তাদেরও টাকা ঢুকেছে কিনা।

কিন্তু প্রশ্ন হলো এই বিপুল পরিমাণ টাকা কোথায় থেকে আসছে? সে নিয়ে অবশ্য ব্যাঙ্ক কর্মীরা কোনরকম সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে তারা জানিয়েছেন অনলাইনের মাধ্যমে টাকাগুলি ঢুকেছে। পাশাপাশি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা জানিয়েছেন দিন কয়েক ধরে কোনরকম প্রকল্পের টাকাও দেওয়া হয়নি। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য হামিদুল আলী জানিয়েছেন, “আমরা বুঝতে পারছি না কোথায় থেকে টাকা ঢুকছে। যাদের টাকা ঢোকেনি তারা আমাদের এসে প্রশ্ন করছেন কিভাবে টাকাটা ঢুকেছে? ওদের বক্তব্য আমরাই টাকাটা ঢুকিয়েছি। কিন্তু আমরা এমন কোন টাকা কারোর অ্যাকাউন্টে ঢুকায়নি।” তবে এই ঘটনার পিছনে কি রহস্য লুকিয়ে রয়েছে তা খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এইভাবে আচমকা টাকা ঢোকার ঘটনা এই প্রথম নয়। এমন ঘটনা এর আগেও আমরা দেখেছিলাম বীরভূমের সাঁইথিয়ার কুনুরি এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বেশ কিছু গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে রাতারাতি এইভাবে টাকা ঢুকেছিল। একই ঘটনা দেখা গিয়েছিল পূর্ব বর্ধমানের কালনাতে, একই ঘটনা ঘটেছিল বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস থানার দিঘল গ্রামের বেশ কিছু ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। কিন্তু কোনো ক্ষেত্রেই এই ভাবে টাকা ঢোকার রহস্য এখনো বের করা সম্ভব হয়নি।