Bhole Baba: কে এই ভোলেবাবা? হাথরসে যাকে দেখতে গিয়েই প্রাণ গেল শতাধিক মানুষের

Prosun Kanti Das

Published on:

Hundreds of people lost their lives to see Bhole Baba in Hathras: কথায় আছে ইশ্বর দর্শনে দুর্ভোগ কাটে কিন্তু হাথরসের এই ঘটনায় বাবাজি দর্শনে দুর্ভোগের শিকার শতাধিক মানুষ। ধর্মসভার অনুষ্ঠানে প্রায় ৫০ হাজার লোকের সমাগমে ঘটে এই দুর্ঘটনা। যেখানে ‘ভোলেবাবা’কে (Bhole Baba) দেখতে গিয়েই পরলোক গমন করেন প্রায় ১১৬ জন ব্যক্তি। গুরুতর আহত বহু মানুষ। কোথায় ঘটে এই ঘটনা? এই ভোলেবাবা কে? যাকে দেখার জন্য মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে এত মানুষ।

গত মঙ্গলবার অর্থাৎ ২রা জুলাই উত্তরপ্রদেশের হাফরসের ফুলরাই গ্রামে ঘটে এই বিরাট দুর্ঘটনা। যেখানে ‘নারায়ণ সাকার হরি’ হরফে ‘ভোলেবাবা’ (Bhole Baba) নামে এক বাবাজি এক সৎসঙ্গের আয়োজন করেন। যে ধর্মসভা আয়োজিত হয়েছিল একটি তাঁবুর উপর। এখানে সমবেত হয়েছিল প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। তাঁবুর ভিতরের আবহাওয়া ছিল অত্যন্ত গরম। দরজা ছিল একটি। ফলেই এত লোকের সমাগমে সৎসঙ্গের শেষের দিকে ঘটে এই ঘটনা। মূলত বাবাজির পদ স্পর্শ করতে গিয়েই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় শতাধিক মানুষের। তবে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে জানা যাচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হল এই বাবাজি বা ‘ভোলেবাবা’ কে? তার কি এমন শক্তি রয়েছে যে তার চরণধূলি পেতে দুর্ঘটনার স্বীকার এত মানুষ?

সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশের ইটা জেলার বাহাদুর নগরী গ্রামের বাসিন্দা এই ‘ভোলেবাবা’। যিনি রাম রহিম, সদগুরু ব্যক্তিদের মতো একজন স্বঘোষিত ধর্মগুরু হিসেবে পরিচিত। তার দাবি, তিনি ভগবান হরির শিষ্য। তিনি এও দাবি করেন যে, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে তার। গত শতাব্দীর ৯-এর দশক থেকেই প্রচার হয় তার আধ্যাত্মিকতা। সময়ের সাথে সাথে তিনি বাবাজি বা ভোলেবাবা হিসেবে জনপ্রিয়তা পান। বর্তমানে সারা উত্তর ভারত জুড়ে বিশেষত হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তরাখান্ড, উত্তর প্রদেশ এবং দিল্লিতে রয়েছে হাজার হাজার অনুগামী। তবে বর্তমানে তিনি ভোলেবাবা হিসেবে পরিচিত হলেও পূর্বে তিনি অন্য নামে পরিচিত।

শোনা যায়, ছোট থেকেই তার বড় হওয়া উত্তরপ্রদেশের ইটা জেলায়। সেখানেই তিনি তার পড়াশোনা শেষ করেন। স্নাতক ডিগ্রী পাস করে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো অর্থাৎ IB-র কাজে যোগ দেন তিনি। আর এই কাজ করতে করতেই আধ্যাত্মিকতার দিকে ঝুঁকে পড়েন তিনি। যা পরবর্তী সময়ে তিনি পুরোপুরি ভাবে আধ্যাত্মিক হয়ে যান। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশে সৎসঙ্গের আয়োজন করেন। প্রতি সৎসঙ্গেই আগমন ঘটে তার শত শত ভক্তের। এই ভক্তদের খাবার, পানীয় সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা মেটানোর চেষ্টা করেন বাবাজির স্বেচ্ছাসেবকরা। গরিব, নিম্নবর্গের মানুষ তার এই ধর্মসভায় আসেন। সাংসদ বিধায়করা এই সৎসঙ্গে আসেন বলে জানা যায়।

আরও পড়ুন 👉 Hindu Population in Pakistan: ভারতে কমলেও পাকিস্তানে উল্টো ছবি, রাতারাতি বাড়লো হিন্দু জনসংখ্যা

তবে অন্যান্য ধর্মগুরু বা বাবাজিদের থেকে পুরোপুরি আলাদা এই ‘ভোলেবাবা’ (Bhole Baba)। নেই তার কোনো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট। সৎসঙ্গেও তিনি প্রবেশ করতে দেন না কোনো সাংবাদিকদের। তার বাবাজি সম্পর্কিত কোনো ব্যক্তিগত তথ্য জানা যায় না। তার পোশাক পরিচ্ছদও অন্যান্য বাবাজিদের থেকে স্বতন্ত্র। গেরুয়া পোশাকের বদলে তিনি তার শরীর ঢাকেন সাদা কুর্তা-পাজামা অথবা সাদা স্যুট এবং টাই দিয়ে। তার সাথে থাকা চ্যালাদের পরনে থাকে গোলাপি শার্ট, প্যান্ট এবং সাদা টুপি। ধর্ম উপদেশ দেওয়ার সময় তার সাথে দেখা যায় তার স্ত্রীকে।

প্রসঙ্গত, অতিমারি করোনাকালীন সময়ে সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল এই বাবাজির নাম। কারণ সেই সময় তিনি কোভিড ১৯-এর সমস্ত বিধি নিষেধ লংঘন করে এক বিরাট ধরনের ধর্মসভার আয়োজন করেন। শুধু তাই না কোর্টে একাধিক ফৌজদারি মামলার কেস চলছে এই ভোলেবাবার বিরুদ্ধে।