কফিন কাঁধে শহীদ রাজেশকে শেষ বিদায় জানালেন বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার

Madhab Das

Updated on:

নিজস্ব প্রতিবেদন : গত সোমবার রাতে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চীন ও ভারতের সেনাদের সংঘাতে শহীদ হন বীরভূমের মহঃবাজার থানা এলাকার বেলগড়িয়া গ্রামের বীর জওয়ান রাজেশ ওরাং। এরপর শুক্রবার তার দেহ কফিনবন্দি হয়ে গ্রামের বাড়িতে আসে। হাজার হাজার মানুষ শহীদ রাজেশকে বিদায় ও শ্রদ্ধা জানানোর জন্য দুদিন আগে থেকেই জাতীয় পতাকা, ফুলের মালা নিয়ে হাজির ছিলেন। পাশাপাশি শেষ সম্মান জানাতে হাজির ছিল রাজ্য পুলিশের বীরভূম পুলিশ। রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে গান স্যালুটের মাধ্যমে শহীদ রাজেশ ওরাংকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়।

ভারতের বীর জওয়ান রাজেশ ওরাংয়ের শহীদ হওয়ার খবর আসে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। তারপর বুধবার থেকেই সবাই চেয়েছিল কখন তার দেহ এসে পৌঁছাবে। তবে নানান কারণে দেহ বুধবার এসে পৌঁছাতে পারেনি, বৃহস্পতিবার এসে পৌঁছানোর কথা থাকলেও তা হয়নি। অবশেষে শুক্রবার সকাল ৯টার পর শহীদের দেহ এসে পৌঁছায় গ্রামে। আর কফিনবন্দি শহীদের দেহ মুখাগ্নিস্থলে নিয়ে আসতে পরিবারের সাথে কাঁধ মেলান বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং, বীরভূম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুবিমল পাল, ডিএসপি (ডিএনটি) অভিষেক মন্ডল সহ অন্যান্য পুলিশ কর্মী ও আধিকারিকরা।

যে জায়গায় রাজেশ ওরাংয়ের মুখাগ্নির ব্যবস্থা করা হয়েছিল সেখানেই ব্যবস্থা করা হয়েছিল বীরভূম পুলিশের তরফ থেকে গার্ড অফ অনার দেওয়ার। বাড়ি থেকে সেই জায়গা পর্যন্ত বীরভূম পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা কফিনবন্দি দেহ কাঁধে করে বয়ে নিয়ে আসেন। আর কাঁধে করে কফিনবন্দি দেহ নিয়ে যাওয়ার সময় চোখ দিয়ে অশ্রু ঝড়তে দেখা যায় বীরভূম পুলিশ সুপার থেকে অন্যান্য আধিকারিকদের ও কর্মীদের। যেদিন থেকে রাজেশের শহীদ হওয়ার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে সেদিন থেকেই হাজার হাজার মানুষের আনাগোনা শুরু হয় গ্রামে, আনাগোনা শুরু হয় নেতা-মন্ত্রী থেকে সাংসদদের। যে কারণে গোটা গ্রামকে ঘিরে ফেলা হয় নিরাপত্তা বলয়ে।

প্রসঙ্গত, বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই ভারত চীন সীমান্ত নিয়ে ভারতের সাথে চীনের সীমান্ত সম্পর্ক নিয়ে বিবাদ দেখা দেয়। আর সেই বিবাদ গত সোমবার চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়। দুই দেশের সেনাদের মধ্যে দীর্ঘ ৫৮ বছর রক্তক্ষয়ী সংঘাতে ভারতের ২০ জন বীর জওয়ান শহীদ হন। যাদের নাম সরকারিভাবে মঙ্গলবার রাতে প্রকাশ করা হয়। জানা যায় বীরভূমের রাজেশ ওরাং ছাড়াও আলিপুরদুয়ারের বিপুল রায় রয়েছেন এই ৩০ জন শহীদ জাওয়ানের তালিকায়। আর এরপর খবর আসে এই ঘটনায় চীন সেনাদের কমকরে ৪৩ জন সেনা প্রাণ হারিয়েছে।