করোনা সংক্রমণে চিনকে ছাপিয়ে গেল ভারত, প্রকাশ্যে এলো পরিসংখ্যান

নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনার প্রকোপ এড়াতে দেশজুড়ে জারি হয়েছে লকডাউন। লকডাউন কত দূর ফলপ্রসূ হয়েছে তা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। তবে লকডাউনের ৫০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর, ভারতে এবার সংক্রামিতদের সংখ্যায় চিনকে ছাপিয়ে গেল।

ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে সংক্রামিতদের সংখ্যা ৮৫,৯৪০, মৃত্যু হয়েছে ২৭৫২ জনের। দেশে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৪ হাজার মানুষ সংক্রামিত হচ্ছেন। এই সংক্রামিত হওয়ার পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যাচ্ছে দেশের ১১টি রাজ্যের অবস্থা দিন দিন গুরুতর হচ্ছে।

নতুন পরিসংখ্যান কি বলছে?

চিনে জানুয়ারির শেষে করোনার সংক্রমণ শুরু হয় এবং মার্চের মধ্যে চিন অনেকটাই এই সংক্রমণ আটকাতে সমর্থ হয়। এই মুহূর্তে চিনে মোট সংক্রামিতের সংখ্যা ৮২ হাজার ৯৩৩ জন। যার মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৬৩৩ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭৮ হাজার ২০৯ জন এবং বর্তমানে চিকিৎসা চলছে ৯১ জনের।

অন্যদিকে ভারতের ছবিটা সম্পূর্ণ উল্টো। ভারতে মোট সংক্রামিত ৮৫ হাজার ৫৪৬ জন, যার মধ্যে মারা গিয়েছেন ২ হাজার ৭৫২ জন ও সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩০১৫৩ জন এবং বর্তমানে রোগের সঙ্গে লড়াই করছেন ৫৩ হাজার ৩৫ জন।

করোনা সংক্রমণে ভারত ও চিনের পার্থক্য

পরিসংখ্যান বলছে মার্চের ১ তারিখে চিনে করোনা ভাইরাসে সংক্রামিত ছিলেন ৮০ হাজার ২৬ জন। যা এই আড়াই মাসে বেড়েছে ৩ হাজার জনেরও কম। অন্যদিকে ভারতে মার্চ মাসের শুরু পর্যন্ত মাত্র তিনজন করোনা ভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছিলেন। এই আড়াই মাসের মধ্যেই সেই সংখ্যা ৮৫ হাজার ছাড়িয়ে গেল। এমনকী টপকে গেল চিনকেও।

চিন বনাম ভারতের মৃত্যুর হার

চিনে গত একমাসে মারা গিয়েছেন মাত্র একজন। অন্যদিকে ভারতে গত এক মাসে মারা গিয়েছেন ২৩০০ জনের বেশি মানুষ। চিনে জনজীবন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে অথচ ভারতে এখনও লকডাউন চলছে।

ভারতের অধিক করোনা সংক্রামিত রাজ্য কোনগুলি?

সংক্রমণের সংখ্যার নিরিখে প্রথম স্থানেই আছে মহারাষ্ট্র। যেখানে অবস্থার গম্ভিরতা দেখে ৩১ মে পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানোর সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। সেই রাজ্যেই সংক্রমণের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ২৯ হাজার, যার মধ্যে শুধু মুম্বাইতে সংখ্যাটা ছাড়িয়েছে সাড়ে ১৬ হাজার। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬০০ এর কাছাকাছি ব্যক্তি সংক্রামিত হয়েছেন। মুম্বাইতে মোট মৃতের সংখ্যা ১০৬৮।

করোনা সংক্রমণের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে আছে তামিলনাড়ু। সেখানে সংক্রামিতের সংখ্যা ১০ হাজার। এই রাজ্যে পরিস্থিতি খারাপ হয় মূলত ভিন রাজ্য ও দেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের জন্য। প্রায় চার হাজার জন ব্যক্তি বাইরে থেকে এই রাজ্যে এসেছিলেন করোনা সংক্রামিত হয়েই।

পরিসংখ্যান মতে সংক্রমণের দিক থেকে তৃতীয় স্থানে আছে গুজরাট যেখানে সংক্রামিত ব্যক্তিদের সংখ্যা সাড়ে ৯ হাজার ছাড়িয়েছে।

গুজরাটের পরেই আছে দিল্লি যেখানে ইতিমধ্যেই প্রায় ৯ হাজার ব্যক্তি সংক্রামিত। গত ২৪ ঘণ্টার পরিসংখ্যানে দিল্লিতে ৪২৫ জন করোনা ভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছেন। দিল্লিতে এখনও পর্যন্ত ১২৩ জন মৃত। আর ৩৫১৮ জন সুস্থ।