নিজস্ব প্রতিবেদন : ইদানিংকালে ভারত সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে চীনের (China) উপর ভরসা কমাতে শুরু করেছে। ভারত এখন আর পরিষেবা মূলক অর্থনীতির মধ্যে আবদ্ধ না থেকে উৎপাদন মূলক অর্থনীতিতে প্রবেশ করেছে। বিভিন্ন দেশ থেকে বিনিয়োগ এনে ভারত নিজেদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনছে। এসবের মধ্যেই এবার ব্যাটারির ব্যবসা (Battery Business India) নিয়ে নতুন পদক্ষেপ নিল কেন্দ্র।
ভারতে যে সকল ব্যাটারি ব্যবহৃত হয় তার জন্য লিথিয়ামের বড় অংশ আসে চীন ও হংকং থেকেই বলে জানা যাচ্ছে। ভারতে যে সকল ব্যাটারি ব্যবহৃত হয় তার জন্য ১০০ শতাংশই লিথিয়ামই বিদেশ থেকে আমদানি করার পাশাপাশি কেবলমাত্র চীন ও হংকং থেকেই আমদানি করা হয় ৯৫ শতাংশ। এমনিতে এই লিথিয়াম আমদানি করার পিছনে ভারত সরকারকে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে খরচ করতে হয়েছিল ২.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা।
এই বিপুল পরিমাণ অর্থের অধিকাংশ অংশই এতদিন চলে যেতো চীন এবং হংকংয়ে। কিন্তু এবার কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাতে রীতিমতো চীনের পেটে লাথি মারার মতোই অবস্থা। কেননা লিথিয়াম আমদানি করার জন্য এবার ভারত চুক্তি সেরে ফেলেছে আর্জেন্টিনার সঙ্গে। ব্যাটারির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই ধাতুর খনি অধিগ্রহণ করেছে নয়া দিল্লি।
লিথিয়াম খনি অধিগ্রহণের বিষয়ে গত শনিবার আর্জেন্টিনার সংস্থা ক্যাটামার্কা মিনেরা ওয়াই এনারজেটিকা সোসিয়েদাদ দেল এস্তাদোর (ক্যামেইন) সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলেছে খনিজ বিদেশ ইন্ডিয়া লিমিটেড বা কাবিল। এই চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা আর্জেন্টিনার পাঁচটি ব্লক হাতে পেয়েছে। কেন্দ্রীয় খনিজ মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশির উপস্থিতিতে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তির ফলে আর্জেন্টিনার ক্যাটামার্কা প্রদেশে ১৫৭০৩ হেক্টর জমিতে লিথিয়ামের সন্ধান ও উত্তোলন করবে ভারত।
ভারত সরকারের এই প্রকল্পের জন্য মোট ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ব্যাটারি তৈরির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাতু লিথিয়াম বিলি ও বলভিয়ার পর আর্জেন্টিনাতেই সবচেয়ে বেশি মজুত রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এর ফলে আর্জেন্টিনার সঙ্গে ভারতের এমন চুক্তি হওয়ায় সেখান থেকে লিথিয়াম উত্তোলনের খরচ ভারতের খুব একটা বেশি হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আর্জেন্টিনার সঙ্গে ভারতের এমন চুক্তি চীনের পেটের ভাত কেড়ে নেবে।