ঠিক কতগুলি ট্রেনের আবেদন করেছে পশ্চিমবঙ্গ, খোলসা করলো রেলমন্ত্রক

নিজস্ব প্রতিবেদন : কেন্দ্রের সাথে রাজ্যের সম্পর্ক বরাবরই খারাপ। বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এই দুই সরকারের মধ্যে বারবার সম্পর্কে জলঘোলা হতে দেখা গিয়েছে। আর এই করোনা আবহেও প্রথমদিকে তথ্য আর পরে পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরানো নিয়ে নানান টানাপোড়েন। শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লেখেন, “লকডাউন চলাকালীন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে থাকা দু’লক্ষ পরিচয় শ্রমিককে ঘরে ফেরানোর বন্দোবস্ত করছে কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকরাও নিজেদের ঘরে ফিরতে উদগ্রীব। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে এ বিষয়ে আশানুরূপ সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না।”

এরপরেই ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অমিত শাহকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে জানান, “নিজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এত সপ্তাহ পর মুখ খুললেন, তাও মিথ্যা প্রচারে! উনি ওই মানুষদের সম্পর্কে বলছেন, যাঁদেরকে ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিয়েছে অমিত শাহের সরকারই। অমিত শাহ নিজের মিথ্যা অভিযোগ হয় প্রমাণ করুন, নয়তো ক্ষমা চান।”

আবার শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ১০টি ট্রেনে কেরল, তেলেঙ্গানা, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক থেকে বাংলার শ্রমিকদের ফেরানো হবে। ঠিক তার পরক্ষণেই রেল মন্ত্রকের তরফ থেকে ট্যুইট করে জানানো হয়, পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরাতে পশ্চিমবঙ্গ ঠিক কতগুলি ট্রেনের আবেদন করেছে। আর আবেদন মাফিক কতগুলি ট্রেনের বন্দোবস্ত হয়েছে।

রেল মন্ত্রকের তরফ থেকে ট্যুইট করে জানানো হয়, “ভারতীয় রেল মূলত উত্তর প্রদেশ, বিহার, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ ইত্যাদি রাজ্যের জন্য এখনো পর্যন্ত ৩০০ টির বেশি শ্রমিককে স্পেশাল ট্রেন চালিয়েছে। কিন্তু আজ সকাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে মাত্র দুটি ট্রেন রাজ্যে ঢোকার সম্মতি ছিল। একটি ছিল রাজস্থানের আজমের থেকে ও অন্যটি ছিল কেরল থেকে। এরপর এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আবেদনের ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার দুপুরে আটটি ট্রেন রাজ্যে ঢোকার সম্মতি দেয়। তার মধ্যে দুটি ট্রেন পাঞ্জাব থেকে, দুটি ট্রেন তামিলনাড়ু থেকে, তিনটি ট্রেন কর্ণাটক থেকে এবং একটি ট্রেন তেলেঙ্গানা থেকে। যেগুলির বন্দোবস্ত রেলের তরফ থেকে করা হয়েছে।”

এরপরেই আবার রেল মন্ত্রকের তরফ থেকে দাবি করা হয়, “যাইহোক পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনও পর্যন্ত মহারাষ্ট্র থেকে কোনরকম ট্রেন ঢোকার সম্মতি দেয়নি। যদিও সেখানে থেকে ১৬ টি ট্রেন পশ্চিমবঙ্গে পাঠানোর চাহিদা রয়েছে। ৬ টি ট্রেন ঢোকার সম্মতি এখনো পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে সম্মতির অপেক্ষায়।”

মোটের উপর রেল মন্ত্রকের এই ঘোষণা থেকে জানা গিয়েছে, অবশেষে পশ্চিমবঙ্গে এক দু’দিনের মধ্যে আটটি ট্রেন আসতে চলেছে। যে সকল ট্রেনগুলিতে পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা থেকে হাজার হাজার শ্রমিক নিজেদের বাড়ি ফেরার অপেক্ষায়।