Indian Railways is launching Real Time Train Information System: ভারতীয় রেল ব্যবস্থার মধ্যে সাধারণ মানুষের জীবনে লোকাল ট্রেনের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতিদিন যে কতো বিপুল সংখ্যক মানুষ এই লোকাল ট্রেনের উপর নির্ভর করে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছে যান তা আর আলাদা করে বলতে হয় না। কর্মক্ষেত্রে পৌঁছানো থেকে শুরু করে অন্যান্য যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য কোনো স্থানে যাওয়া, সবটাই নির্ভর করে এই লোকাল ট্রেনের উপর। কিন্তু এই লোকাল ট্রেনের সময়েই যদি নানা সমস্যা দেখা দেয় সেক্ষেত্রে অসুবিধায় পড়তে হয় অগণিত মানুষকে। একারণেই বিশেষ এক ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে ভারতীয় রেলওয়ে কতৃপক্ষ।
লোকাল ট্রেনের এই সময়ানুবর্তিতার অভাব নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই নানা অসন্তোষ দেখা দিচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও মাঝে মাঝেই এর বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়। দেখা গেছে ভিড়ে ঠাসা হাওড়া স্টেশনের ছবি পোস্ট করে বিরক্ত যাত্রীরা লিখছেন রাত সাড়ে ৯ টা বাজা সত্ত্বেও ৯ টার ব্যান্ডেল লোকাল ট্রেনটি ছাড়েনি। কখন ছাড়বে, সেই বিষয়ে কোনও ঘোষণাও নেই। এ বিষয়ে কেউ কেউ আবার তির্যক মন্তব্য করে জানিয়েছেন হাওড়া থেকে যাত্রা শুরু করে ঘণ্টা দেড়েক পর শ্রীরামপুরে শেষ পর্যন্ত নামতে পেরেছেন, সেই জন্য তারা পূর্ব রেলের কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
তবে যাত্রীদের এই তীব্র অসন্তোষের সমাধান করতে এবার যথেষ্ট তৎপর হয়ে উঠেছে রেল কতৃপক্ষ। এবার তাই লোকাল ট্রেনের সময়ানুবর্তিতার অভাবের আসল কারণ কি তা খতিয়ে দেখতে বিশেষ ব্যাবস্থা করা হচ্ছে। এর আগে ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা কঠোর করার দাবি দেখা গেলে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হতো কেবলমাত্র দূরপাল্লার ট্রেন গুলির উপরে। তবে এবার যাত্রী পরিষেবার কথা মাথায় রেখে লোকাল ট্রেনের সময়ানুবর্তিতার বিষয়েও সমান নজর দিতে চলেছে ভারতীয় রেল। লোকাল ট্রেন সময়ে চলছে কিনা, দেরী করে চললে সেই দেরীর কারণ কি এসব বিষয়ে প্রতিদিন যাতে সঠিক রিপোর্ট পাওয়া যায় সেই কারণে এ বার ট্রেনে বসানো হচ্ছে রিয়েল টাইম ট্রেন ইনফর্মেশন সিস্টেম (Real Time Train Information System)।
পূর্ব রেল ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে কাজ শুরু করে দিয়েছে। এর মধ্যে ৩৪৯টি ইএমইউ লোকাল ট্রেনে এই স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা (Real Time Train Information System) চালু করে দেওয়া হয়েছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র এই বিষয়টি নিয়ে বলছেন “জোনের চারটে ডিভিশন মিলিয়েই ইএমইউ লোকালগুলোয় এই সিস্টেম বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। যে ৩৪৯টি লোকালে আরটিআইএস সিস্টেম বসেছে, তার মধ্যে ১৬৭টি রেক হাওড়ার ইলেকট্রিক লোকো শেডের। ১১৫টি আসানসোল ইলেকট্রিক লোকো শেডের, ৩০টি শিয়ালদহ লোকো শেডের, ২০টি বর্ধমান ডিজেল শেডের এবং ৩টে জামালপুর ডিজেল শেডের।”
তবে শুধু এই কয়েকটি লাইনেই নয়, এর বাইরেও আরো বেশ কয়েকটি ট্রেনে ধীরে ধীরে বসানো হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাটি। এই বিষয়টি নিয়ে পূর্ব রেলের আধিকারিকরা বলেন আশা করা যাচ্ছে এই ব্যবস্থার ফলে লোকাল ট্রেন গুলির ক্ষেত্রে পরিচালন ক্ষমতা অনেকটাই বাড়বে। নতুন করে বসানো এই আরটিআইএস (Real Time Train Information System) প্রতি মুহূর্তে ট্রেন কন্ট্রোলারকে রেল ট্র্যাকের অবস্থা, কোনো নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট জায়গায় ট্রেনের গতি ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করবে। ওই মেশিনের মাধ্যমে পাঠানো তথ্যগুলি ট্রেন কন্ট্রোলারের পাশাপাশি চলে যাবে ন্যাশনাল ট্রেন এনকোয়ারি সিস্টেমের কাছেও। দেশের সমস্ত জোনের ট্রেন চলাচল সেই স্থান থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ফলে রেলওয়ের যাত্রাপথে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে তা সহজেই জানা যাবে।