Indian Railways: ভারতীয় রেলওয়ে ৮ই মে, ১৮৪৫-এ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। গত ১৭২ বছর ধরে এই রেল পরিবহন ব্যবস্থা যাত্রীদের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় কারণ সবচেয়ে কম খরচে ভ্রমণের জন্য সাধারণ থেকে অতি সাধারণ মানুষজন রেলের উপরেই ভরসা করে আসছে। এই রেল পরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক অদ্ভুত ঘটনা যা আজকের প্রতিবেদনে শেয়ার করতে চলেছি।
ভারতীয় রেলের (Indian Railways) ইতিহাসে অদ্ভুত ঘটনা প্রচুর আছে, কিন্তু একটি মালগাড়ি সাড়ে তিন বছর দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছানোর কাহিনি শুনলে যে কারোর চোখ কপালে উঠবে। ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে বিশাখাপত্তনম থেকে ছেড়েছিল একটি মালবাহী ট্রেন, যার গন্তব্য ছিল ১৪০০ কিলোমিটার দূরে উত্তর প্রদেশের বস্তি। সাধারণত এই পথ অতিক্রম করতে যেখানে মাত্র ৪২ ঘণ্টার প্রয়োজন, সেখানে এই ট্রেনের লেগেছিল সাড়ে তিন বছর!
এই মালগাড়িটি কোনও যাত্রী পরিবহন করছিল না, বরং এর ওয়াগনগুলিতে বোঝাই ছিল প্রায় ১৪ লক্ষ টাকার সার। রামচন্দ্র গুপ্ত নামের বস্তির এক ব্যবসায়ী, এই সার আনার জন্য বিশাখাপত্তনম থেকে ট্রেনটি বুক করেছিলেন। ট্রেনটি সময়মতো না পৌঁছনোয় তিনি বারবার রেলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। ভারতীয় রেলকর্তৃপক্ষের (Indian Railways) সঙ্গে অসংখ্যবার যোগাযোগ করেও ট্রেনটির কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। যেন মাটি ফুঁড়ে ট্রেনটি গায়েব হয়ে গিয়েছিল।
আরো পড়ুন: প্রতিনিয়ত ট্রেনে ওঠেন, কিন্তু জানা আছে কি শিয়ালদহ ও হাওড়া থেকে রোজ কতগুলো করে ট্রেন ছাড়ে
এই দীর্ঘ সময়ের পর, অবশেষে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে বস্তি রেল স্টেশনে পৌঁছায় সেই ট্রেন। কিন্তু ততদিনে সারগুলি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল এবং রামচন্দ্র গুপ্ত সেই নষ্ট সার নিতে অস্বীকার করেন। এতদিনে কোম্পানির বিপুল ক্ষতি হয়েছিল, এবং লক্ষ লক্ষ টাকার আইনি লড়াই শুরু হয়েছিল ইন্ডিয়ান পটাশ লিমিটেড এবং ভারতীয় রেলের মধ্যে। কিন্তু কেন এত দেরি হল? ট্রেনটি কোথায় ছিল? সেই প্রশ্নের উত্তর আজও অজানা।
রেল কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যায় জানা যায়, কখনও কখনও ওয়াগনগুলি পুরনো হয়ে গেলে, সেগুলিকে দুর্ঘটনা থেকে বাঁচানোর জন্য ইয়ার্ডে পাঠানো হয়। এই ট্রেনের ক্ষেত্রেও হয়তো এমন কিছু ঘটেছিল। কিন্তু এতদিন ধরে কোথায় ছিল এই ট্রেন? কেন এত বিলম্ব? এই প্রশ্নের কোনও সঠিক উত্তর কেউ দিতে পারেনি। ভারতীয় রেলের (Indian Railways) ইতিহাসে এমন চমকপ্রদ ঘটনা বিরল। যে ট্রেনটি হারিয়ে গিয়েছিল সাড়ে তিন বছরের জন্য, তা এক অমীমাংসিত রহস্য হয়েই রয়ে গেছে।