নিজস্ব প্রতিবেদন : পুনরায় তালিবানদের আফগান দখল করার আগে ভারতের সাথে আফগানিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক বেশ মজবুত হয়েছিল। এর আগে ১৯৯৬ সালে যখন আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন কায়েম হয়েছিল সেই সময় পাকিস্তান, আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ছাড়া বিশ্বের অন্য কোন দেশ এই সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। ভারত সরকারও স্বীকৃতি দেয়নি তৎকালীন তালিবানি শাসন ব্যবস্থাকে। তবে ৯/১১ ঘটনার পর থেকেই আফগানিস্তানের সাথে ভারতের এই কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরী হতে শুরু করে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার আফগানিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় বিনিয়োগ করে। আর সেই সকল বিনিয়োগই এখন তালিবানদের প্রত্যাগমনের অনিশ্চয়তায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশে ভারতের কমকরে ৪০০টি প্রকল্প রয়েছে। তবে বর্তমানে এই সকল সমস্ত প্রকল্প এই বিপদের সম্মুখীন। ছোট ছোট প্রকল্প বাদ দিয়েও আফগানিস্থানে ভারতের ১০টি এমন বড় প্রকল্প রয়েছে যা রীতিমতো কেন্দ্রীয় সরকারকে চিন্তায় ফেলছে।
১) সালমা বাঁধ : ভারতের যে সকল প্রকল্প আফগানিস্তানের রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো সালমা বাঁধ। এটি ভারত ও আফগানিস্তানের সম্পর্কের প্রতীক। ৩০ কোটি ডলার ব্যয় করে ভারত সরকার এই বাঁধ নির্মাণ করেছিল। এই প্রকল্প অর্থাৎ এই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি আফগানিস্তানে ভারতের সবথেকে বড় প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৬ সালে জুন মাসে আফগানিস্তানে গিয়ে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন। আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশে তৈরি হওয়া এই বাঁধটি ইতিমধ্যেই তালিবানরা একবার উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিল যদিও তাতে সফল হয়নি।
২) জাতীয় সড়ক : আফগানিস্তানের ভারতের নির্মাণগুলির মধ্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ হলো জারাঞ্জ-দেলারাম ২১৮ কিলোমিটার জাতীয় সড়ক নির্মাণ। এই জাতীয় সড়ক নির্মাণ করতে ভারত সরকার ১৫ কোটি ডলার খরচ করেছিল।
৩) পার্লামেন্ট : আফগানিস্তানের ভারত সরকারের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ হলো আফগানিস্তানের পার্লামেন্ট। এই পার্লামেন্ট ভবনের উদ্ধোধনও করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
৪) শাটুট বাঁধ : কাবুলে এই মুহূর্তে ভারত সরকারের তরফ থেকে তৈরি করা হচ্ছিল শাটুট বাঁধ। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২০ লক্ষ মানুষকে জল সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এরও ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চয়তায়।
এছাড়াও আরও ৬টি গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ হলো বিংশ শতাব্দীতে তৈরি স্টোর প্যালেস সংস্কার, কান্দাহার, কুনার, নির্মুজ, নুরিস্তান, পাকিতার মতো বিভিন্ন এলাকায় স্বাস্থ্য কেন্দ্র নির্মাণ, ইন্দিরা গান্ধী ইনস্টিটিউট ফর চাইল্ড হেল্থ সংস্কার, কাবুলের বিদ্যুৎ সরবাহের জন্য ২২০ কেভি ডিসি ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণ, ৪০০টি বাস, ২০০টি মিনি বাস, ১০৫টি যানবাহন উপহার, আফগানিস্তানে সেনা দের জন্য ২৮৫টি ভেহিক্যাল ও ১০টি অ্যাম্বুল্যান্স সরবরাহ ইত্যাদি।