Indrajit Dan, son of gas godown temporary worker, got 481 in higher secondary: কিছুদিন আগেই ২০২৪ এর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। উঠে এসেছে এক দরিদ্র মেধাবী ছাত্রের নাম। অত্যন্ত অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা সত্বেও, একনিষ্ঠ অধ্যাবসায় অভাবকে তার সাফল্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে দেয়নি। কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে জয় হয়েছে তার। উচ্চ মাধ্যমিক ২০২৪ এ তার সাফল্য নজর কেড়েছে সকলের। জেলার মধ্যে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে ইন্দ্রজিৎ দাঁ (Indrajit Dan)। তার মোট প্রাপ্ত নম্বর ৪৮১।
ইন্দ্রজিৎ (Indrajit Dan) মানবাজার থানার অন্তর্গত গোপালনগর বাজার এলাকার বাসিন্দা। গোপালনগরের আশুতোষ হাই স্কুলের কলা বিভাগের কৃতি ছাত্র ইন্দ্রজিৎ। আশুতোষ হাই স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী হিসেবে তিনি অংশগ্রহণ করেন ২০২৪ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায়। তার মোট প্রাপ্ত নম্বর হয়েছে ৫০০ এর মধ্যে ৪৮১। অর্থাৎ সে মোট ৯৬ শতাংশের কিছু বেশি নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। বেশিরভাগ বিষয়ে সে ৯০% এর বেশি নম্বর পেয়েছে। বিষয়ভিত্তিক তার প্রাপ্ত নম্বর দর্শনে ৯৮, পুষ্টি বিজ্ঞানে ৯৮, বাংলায় ৯৬, ইংরেজিতে ৯৬। তুলনামূলক ভূগোল ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে তার ফল কিছুটা খারাপ হয়েছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সে পেয়েছে ৯৩ এবং ভূগোলে পেয়েছে ৯২ নম্বর।
ইন্দ্রজিতের বাবা জয়ন্ত দাঁ অস্থায়ী কর্মী হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন স্থানীয় গ্যাস গুদামে। ছেলের সাফল্যে খুশি তিনিও। কিন্তু আনন্দের পাশাপাশি আক্ষেপও প্রকাশ করেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন স্থায়ী রোজগার না থাকার কারণে, অত্যন্ত অভাবের মধ্যে কাটে তাদের সংসার। তাই ছেলে এতটা মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও তাকে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা কিছুই দিতে পারেন না তিনি। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা তাকে যথাসাধ্য সাহায্য করে পড়াশোনার ক্ষেত্রে। ইন্দ্রজিতের (Indrajit Dan) দাদা স্নাতক উত্তীর্ণ হওয়ার পর বর্তমানে দুর্গাপুরের একটি দোকানে কর্মরত।
আরও পড়ুন ? IAS Pradeep Singh: কাজের ফাঁকে টিফিন টাইমে পড়াশুনা করে UPSC-তে প্রথম! পূরণ হল IAS-এর স্বপ্ন
ইন্দ্রজিতের স্বপ্ন ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া। আপাতত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর পুরুলিয়া জেকে কলেজ থেকে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা সম্পন্ন করতে চায় সে। স্নাতক উত্তীর্ণ হবার পর ইউপিএসসির জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নেবে ইন্দ্রজিৎ। এক সাক্ষাৎকারে সে জানায়, তার স্বপ্ন সিভিল সার্ভিস দপ্তরের কর্মী হওয়া। কারণ, দুস্থ পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর একমাত্র উপায় সেটি। সে আরো বলে, নিজের অভিজ্ঞতা থেকে সে বুঝেছে সাহায্য ছাড়া এগিয়ে যাওয়া কতটা কষ্টকর। তা সে যত মেধাবীই হোক না কেন? অনেক পরীক্ষার্থী আছে যারা শুধুমাত্র সাহায্যের অভাবে মেধা থাকা সত্ত্বেও অন্ধকারে হারিয়ে গেছে। তাদের সহায়ক হতে চায় ইন্দ্রজিৎ দাঁ (Indrajit Dan)।
ইন্দ্রজিৎ দাঁর (Indrajit Dan) এই সাফল্যে খুশি তার পরিবার, প্রতিবেশী সহ স্কুলের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। গোপালনগর আশুতোষ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তপন কুমার বলেন, ছাত্রের সাফল্যে তিনি গর্বিত। অত্যন্ত অভাবের মধ্যে দিয়ে বেড়ে উঠেছে ইন্দ্রজিৎ। তার এই সাফল্যে গর্বিত পুরো স্কুল। পঞ্চম শ্রেণী থেকে ইন্দ্রজিৎ আশুতোষ হাই স্কুলের ছাত্র। তার স্কুল থেকে তাকে যথাসাধ্য সাহায্য করার চেষ্টা করা হয়। বইপত্র থেকে শুরু করে পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় উপকরণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্কুল থেকেই যোগাড় করে দেওয়া হয় তাকে। ইন্দ্রজিৎ আরো অনেক বড় হোক এই কামনাই করছে শিক্ষক মহল।