ইঞ্জিয়ারিং ডিগ্রিধারী না হয়েও লকডাউনে ই-বাইক বানিয়ে চমক যুবকের

নিজস্ব প্রতিবেদন : ইচ্ছা থাকলে কি না হয়! ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী না থাকা সত্ত্বেও গড়ার মানসিকতা থাকলেই যে তৈরি করা যায় তাই প্রমাণ করলেন বিশ্বব্রত। ভাবছেন তো কে ইনি? দাঁতন ১ ব্লকের রাজনগর গ্রামের ছেলে‌‌ বিশ্বব্রত। বয়স মাত্র ২৯ বছর। তিনি দূষণ মুক্ত ই-বাইক তৈরি করেছেন। এই বাইকের সর্বোচ্চ গতিবেগ ৬০ কিমি প্রতি ঘন্টায়।

ইঞ্জিনিয়ারিং তো দূর বিজ্ঞান বিভাগও ছিলো না তার। বাংলায় গ্ল্যাজুয়েট পাশের পর সে ডি.এড. করেছে। আর ঝুলিতে আছে মোবাইল রিপেয়ারিংয়ের ডিপ্লোমা। মোটর বাইক তৈরির প্রশিক্ষণ তার নেয়। তার কথায়, ‘দেখে দেখেই শেখা। আর বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়েছি। এর আগে দুচাকা ও তিন চাকার সাইকেল বানিয়েছিলাম।’

বিশ্বব্রত প্রধানের‌ কয়েকমাসের পরিশ্রম আজ হলো সার্থক। এই‌ বাইকে সাউন্ড সিস্টেম থেকে ব্যাক-গিয়ার-হেডলাইট থেকে ইন্ডিকেটরের এলইডি সবই আছে।নকশা বিশ্বব্রতর বানানো। চার ঘণ্টা ব্যাটারি চার্জ‌ দিতে হবে আর তাহলেই ১৫০ কিলোমিটার চলবে এই বাইক। এই মোটর বাইকে বসানো আছে ৪৮ ভোল্ট ও ৩৬ অ্যাম্পিয়ারের লিথিয়াম ফসফেটের ব্যাটারি। এই মোটর বাইকে আছে ৪৮ ভোল্ট ও ৫০০ ওয়াটের মোটরও। ই-বাইকটিতে আছে রিমোট লকিং ব্যবস্থাও। গত বছর ডিসেম্বর থেকে লেগেছিলেন কাজে। কিছুদিন আগেই কাজ শেষ হয়েছে।

বিশ্বব্রতের কথায়, “সাধারণ ই-বাইকে লিথিয়াম আয়নের ব্যাটারি থাকে। এই মোটর বাইকের মোটরটিও কম বিদ্যুৎ খরচে বেশি শক্তি উৎপাদন করতে সক্ষম।”

এর আগে কখনো তিনি মোটর বাইক বানান নি। বিশ্বব্রতের কথায়, “২০১২ সালে একটি তিনচাকার বৈদ্যুতিক সাইকেল তৈরি করি। তারপর থেকেই বাইক তৈরি করার ঝোঁক পেয়ে বসে। এখন সাফল্য পেয়ে ভাল লাগছে।”

এই ই-বাইকে পায়ের কাছেই জিনিসপত্র রাখার ব্যবস্থা করা আছে। এছাড়া আছে অ্যামপ্লিফায়ার যুক্ত সাউন্ড-সিস্টেম এবং মোবাইল হোল্ডার। ই-বাইকটিতে ইকোনমি এবং হাইস্পিড মোডও আছে। ছেলের এই আবিষ্কারের খবরে ‌খুশি ছেলের বাবা হীরেন্দ্রনাথ প্রধানও।

তাঁর কথায়, “প্রথম দিকে বুঝতেই পারিনি, কী বানাচ্ছে। এখন জানার পর ভালো লাগছে।” এই কাজে বিশ্বব্রতকে সহায়তা করেছে কে? এই কাজে তার সহযোগী ছিল প্রতিবেশী সন্দীপ দে। অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র সন্দীপ।

বিশ্বব্রত কাজ করেছেন কোথায়? তার কথায়, “বাড়িতে বসেই চলেছে কাজ। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকায় অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস অনলাইনেও কিনতে হয়েছে। এমন ই-বাইকের বাজার দর এক লক্ষ টাকার উপর। তবে আমাদের খরচ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা।”